২০০৮ সালে ফেল্পসের সঙ্গে কিশোর স্কুলিং। ছবি: রয়টার্স।
বছর আটেক আগে দেখা হয়েছিল ওদের। উঠতি সাঁতারুদের সঙ্গে দেখা করতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন মাইকেল ফেল্পস সে দিন এসেছিলেন সিঙ্গাপুরের সুইমিং ক্লাবে। দিয়েছিলেন কিছু টিপস। বছর ১৩-র কিশোর খুব মন দিয়ে শুনেছিলেন তাঁর হিরোর সেই পরামর্শ। কিন্তু সে দিনের সেই টিপস যে এই ভাবে ‘ব্যুমেরাং’ হয়ে যাবে, তা হয়ত স্বপ্নেও ভাবেননি বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অ্যাথলিট। আট বছর পর তাঁর অন্যতম প্রিয় ইভেন্টেই কি না হারতে হল সে দিনের সেই কিশোরের কাছে!
জীবনের শেষ ব্যক্তিগত ইভেন্টে ২৩তম সোনার লক্ষ্যে শুক্রবার পুলে নেমেছিলেন ফেল্পস। নেমেছিলেন ১০০ মিটারের বাটারফ্লাই ইভেন্টে। সেখানেই তাঁকে এবং গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়ে সোনা জিতলেন সে দিনের সেই কিশোর, বর্তমানে বছর একুশের জোসেফ স্কুলিং। ব্যক্তিগত প্রথম পদক জিতে সিঙ্গাপুরকে এনে দিলেন এ বারের অলিম্পিকে প্রথম পদকটাও।
জীবনের শেষ ইভেন্টে হেরে কেমন লাগছে? ফেল্পসের প্রতিক্রিয়া, “হারতে কারওরই ভাল লাগে না। আমারও লাগেনি। তবে আমি জোসেফের জন্য আনন্দিত। একেই বলে ভয়ডরহীন সাঁতার।”
গুরুর সঙ্গে। ছবি: এপি।
আর স্কুলিং? তাঁর যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না তিনি বিশ্বের সেরা সাঁতারুকে হারিয়ে দিয়েছেন। ল্যাপ শেষ করে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন তিনি। তাঁর ঠিক পাশের লেনেই ছিলেন ফেল্পস। উল্লসিত স্কুলিং ফেল্পসকে বলেন, “আমার এই মুহূর্তে মনের অবস্থা বলার মতো নয়। আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না গ্রেট ফেল্পসের পাশে দাঁড়িয়ে জয় সেলিব্রেট করছি। এই জয়টা আমি সারা জীবন মনে রাখব।” হাসিমুখে ফেল্পস বলেন, “বুঝতে পারছি তোমার মনের অবস্থা।”
২০০৮ সালের সে দিনের কথা বলতে গিয়ে স্কুলিং বলেন, “আমরা প্র্যাকটিস করছিলাম। হঠাত্ খবর এল ক্লাবে মাইকেল ফেল্পস আসছেন। নিজের কানকেই প্রথমে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। ফেল্পস! আমার হিরো আসছেন! ওর জন্যই আমার সাঁতারে আসা। সে দিন ওঁর পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছিলাম। এতটাই বিহ্বল হয়ে গিয়েছিলাম যে, কিছু বলতেও পারিনি।”
জিতে বিহ্বল স্কুলিং। ছবি: এএফপি।
স্বপ্নপূরণ। এ ছাড়া স্কুলিংয়ের এই জয়কে অন্য কোনও ভাবে বোধহয় ব্যখ্যা করা যায় না। হয়ত স্কুলিংদের স্বপ্নপূরণের জন্যই অবসর ভেঙে বারবার ফিরে আসেন ফেল্পসের মতো গ্রেটরা।
আরও পড়ুন:
কেশবকে অলিম্পিক্সে পাঠাতে বাড়ি বন্ধক দিয়েছিলেন প্রিন্সিপাল