এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন দলের গোলকিপার সবিতা পুনিয়া। ছবি: সংগৃহীত।
অলিম্পিক থেকে ভারতের মেয়েরা ফিরেছিলেন ট্রেনের মেঝেতে বসে। তা নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি। এ বার এসেছে সাফল্য। ১৩ বছর পর এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের ফিরে সংবর্ধনার জোয়াড়ে ভেসেছেন রানি, সবিতারা। হকি ইন্ডিয়ার তরফে এসেছে এক লাখ টাকার পুরস্কার সবার জন্য। কিন্তু তার পরও চিন্তার ভাজ ভারতীয় মহিলা দলের অনেকেরই কপালে।
টুর্নামেন্টের সেরা গোলকিপার ভারতের সবিতা পুনিয়া। পুরো এশিয়া কাপে নিজের সেরাটা তো দিয়েছেনই সঙ্গে ফাইনালে শুট আউটে দুরন্ত সেভ। ভারতকে জায়গা করে দিয়েছে বিশ্বকাপে। ৫-৪এ চিনকে হারিয়ে ১৩ বছর দেশে ফিরিয়ে এনেছে এশিয়া কাপ ট্রফি। সেই সবিতা পুনিয়া গত ন’বছর ধরে অপেক্ষা করে আছেন একটা চাকরির জন্য।এ বার তাঁর আশা চাকরিটা তিনি পেয়েই যাবেন। সবিতা বলেন, ‘‘আমি খুব খুশি দলের সাফল্যে আমার ভূমিকা রয়েছে। আমি চেষ্টা করেছি আমার সেরাটা দিতে। চেষ্টা করেছি আমার বেকারত্ব যেন আমার খেলায় প্রভাব না ফেলতে পারে।’’
আরও পড়ুন
রণবীর কপূরের সঙ্গে কোনও বন্ধুত্ব নেই, বললেন অর্জুন কপূর
হিসার থেকে উঠে আসা সবিতার আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছিল ২০০৮এ। ঠাকুরদা মহেন্দ্র সিংহর স্বপ্ন সফল করতেই তাঁর হকিতে আসা। এর পর ২০০৯এ ভারতের জুনিয়র এশিয়া কাপে ব্রোঞ্জের পিছনে ভূমিকা ছিল সবিতার। সেই সময় থেকেই থেকেই চেষ্টা করে এসেছেন চাকরির। বলছিলেন, ‘‘গত ন’’বছর ধর চাকরির চেষ্টা করছি। হরিয়ানা সরকার কথা দিয়েছিল চাকরি দেবে। হরিয়ানা সরকারের ‘মেডেল লাও, নকরি পাও’ স্কিমের কথাও শুনেছিলাম। কিন্তু আমার কাছে সসেই সব কথা হয়েই থেকে গিয়েছে।’’
এই মুহূর্তে সবিতার বয়স ২৭। এখনও বাবার উপরই নির্ভরশীল। দেশের হয়ে গত ন’বছর ধরে খেলেও চাকরি জোটেনি। বলেন, ‘‘আমার বাবা-মায়ের খেয়াল রাখার দায়িত্ব কিন্তু আমি পারছি না। আমার বাবা একজন ফার্মাসিস্ট। তাঁর একার এই চাকরিতে সংসার চালাতে সমস্যায় পড়তে হয়। মাঝে মাঝে বুঝতে পারি না কী করব। মাও চিন্তায় থাকে আমার চাকরি না পাওয়া নিয়ে। বাবা সব সময় ভরসা দেয়।কিন্তু যখনই খেলার বাইরে থাকি আমাকে এই চিন্তাই তাড়া করে।’’
আরও পড়ুন
এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে মেরি কম
সবিতার বিশ্বাস এশিয়া কাপে ভারতের সাফল্য ও তাঁর অনবদ্য পারফরমেন্সের পর একটা চাকরি জুটে যাবে তাঁর। বিশেষ করে তাঁকে আশা দিচ্ছে দেশের অলিম্পিয়ান ক্রীড়ামন্ত্রী। সবিতা বলেন, ‘‘আমাদের ক্রীড়ামন্ত্রীর অলিম্পিকে পদক আছে। আশা করি তিনি বুঝবেন। আর এই জয় আমাকে চাকরি পেতে সাহায্য করবে।’’ সবিতার বিশ্বাস তাঁর চাকরি ভারতের পরের প্রজন্মকে ভরসা দেবে। তারাও হকিতে আসবে দেশের হয়ে খেলতে।