সাফ কাপের প্রস্তুতি চলছে সঙ্গীতার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
প্রতিবেশী মামা বিজয় বাসফোরকে দেখে ফুটবলে হাতেখড়ি দশ বছর বয়সে। আর এখন তিনি জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের জার্সি গায়ে নামতে চলেছেন জীবনের প্রথম সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে।
সোমবার থেকে শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে মহিলাদের সাফ ফুটবল প্রতিযোগিতা। আর সেই টুর্নামেন্টে ভারতীয় দলের মাঝমাঠে অন্যতম সেরা অস্ত্র কল্যাণীর সঙ্গীতা বাসফোর। প্রথম সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে তাই ভাল পারফরম্যান্স করে টুর্নামেন্টকে স্মরণীয় করে রাখতে চান ভারতীয় দলে বাংলার এই মহিলা ফুটবলার।
গত তিন বছর ধরে দেশের জার্সি গায়ে খেলছেন বাংলার এই মেয়ে। পরিবারের আর্থিক পরিস্থিতি ভাল নয়। বাবা অসুস্থ। তাই বাড়ির বাইরে বেরোতে পারেন না। বাধ্য হয়ে মা হাল ধরেছেন সংসারের। হাসপাতাল কর্মী মায়ের সেই রোজগারেই চলে সঙ্গীতাদের সংসার। সঙ্গীতা তাই বলছেন, ‘‘সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভাল কিছু করতে চেষ্টা করব। এটা জানি যে ভাল খেলতে পারলে জীবনের সব সমস্যা কমে যাবে।’’
চোদ্দো বছর বয়সে ফ্রেন্ডস অব দ্য স্টেডিয়ামে ফুটবল খেলতে শুরু করেছিলেন সঙ্গীতা। ২০০৯ সাল থেকে তালতলা দীপ্তি সঙ্ঘের নিয়মিত ফুটবলার। ২০১২ সালে সুযোগ আসে অনূর্ধ্ব ১৯ জাতীয় দলে। চলতি বছর সাউথ এশিয়ান গেমসেও ভারতীয় দলে ছিলেন তিনি। আর এ বার তাঁর অভিষেক হচ্ছে মহিলাদের সাফে।
ইতিমধ্যেই তাঁকে ঘিরে উচ্ছ্বসিত স্থানীয় ফুটবলপ্রেমীরা। মহিলাদের জাতীয় ফুটবল দলে বাংলার এক মাত্র ফুটবলার অবশ্য সে সব নিয়ে মাথা ঘামাতে নারাজ। বরং সঙ্গীতা ডুবে আছেন অনুশীলনে। শেষ ২০১৪ সালে সাফ মহিলা ফুটবলে চাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। ফেডারেশনের এক কর্তা জানান, সেই টিমের রাধারানি দেবী, উমাপতি দেবীরা রয়েছেন এ বারের দলেও। এ বছর ফেডারেশনের ‘প্লেয়ার অব দ্য ইয়ার’ সস্মিতা ও সেরা উঠতি ফুটবলার সঞ্জুর সঙ্গে সঙ্গীতার বোঝাপড়াটাই সাফে ভারতের অন্যতম ইউএসপি। কোচেরও বড় ভরসা তাঁরা।
তবে সঙ্গীতার কাছে শিলিগুড়ি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ছাড়াও আরও এক তাৎপর্য বয়ে আনছে। সাফের পর দল ফিরে গেলেও ফিরবেন না সঙ্গীতা। নতুন বছরে এখানেই জীবনের প্রথম চাকরিতে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। কাজেই মাঠে ও মাঠের বাইরে নিজেকে চেনানোটাই এখন চ্যালেঞ্জ কল্যাণীর সঙ্গীতার কাছে।