লক্ষ্য: ক্রোয়েশিয়ায় নিজেকে প্রমাণ করতে মরিয়া সন্দেশ। ছবি: টুইটার।
কলকাতা ময়দানের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডিভিশনের একাধিক ক্লাব তাঁকে বাতিল করে দিয়েছিল। সেই সন্দেশ জিঙ্ঘন সদ্য এটিকে-মোহনবাগান ছেড়ে যোগ দিয়েছেন ক্রোয়েশিয়ার সর্বোচ্চ ডিভিশনের ক্লাব এইচএনকে সিবেনিক-এ। বৃহস্পতিবার বিকেলে অনুশীলনে নামার আগে সিবেনিক থেকে ভিডিয়ো কলে বাছাই করা কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বললেন ভারতীয় ফুটবলের রক্ষণের স্তম্ভ।
স্বপ্নপূরণের উচ্ছ্বাস: এশিয়ার প্রত্যেক ফুটবলারই স্বপ্ন দেখে ইউরোপে খেলার। আমিও ব্যতিক্রম নই। আমার মতে, নতুন চ্যালেঞ্জ নেওয়ার এটাই ঠিক বয়স। তাই সিবেনিকের প্রস্তাব পাওয়ার পরেই আমার পরিবারের সদস্য ও বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। সকলেই আমার সই করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তা ছাড়া মনে করি, ঝুঁকি না নিলে জীবনে কিছু অর্জন করা সম্ভব নয়। কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে ভয় পাই না। কারণ, আমি শিখতে চাই। নিজেকে উন্নত করে চলাই আমার লক্ষ্য।
অর্থই সব নয়: আমার পরিচিতরা খুব ভাল করেই জানেন, আমি কখনওই অর্থের পিছনে ছুটি না। আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ নিজের ফুটবল জীবনকে সর্বোচ্চ স্তরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা। তাই আমি সব সময় স্বপ্নের পিছনে ছুটে চলাকেই অগ্রাধিকার দেব। যদি ৯০ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে থাকি, তখনও স্বপ্নের পিছনে ছুটব। আমি বিশ্বাস করি, অর্থের চেয়ে গৌরব অর্জন করা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
নতুন ক্লাবে নতুন লক্ষ্য: ক্রোয়েশিয়ার লিগ প্রচণ্ড কঠিন। ২০১৮ বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেছে এই দেশ। ইউরোপের সর্বোচ্চ লিগে খেলে ক্রোয়েশিয়ার ফুটবলারেরা। এই কারণেই এইচএনকে সিবেনিক-এ খেলার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইনি। কারণ, সর্বোচ্চ পর্যায়ের ফুটবলে লড়াইয়ের জন্য আমি প্রস্তুত কি না তা পরীক্ষার এর চেয়ে ভাল সুযোগ আর হয়তো পাব না। আমি কতটা লড়াই করতে সক্ষম তা-ও দেখানোর সময় এসেছে। আমি যদি নিজেকে ঠিক রাখতে পারি, প্রথম একাদশে সুযোগ পাই, আশা করছি হতাশ করব না।
এটিকে-মোহনবাগানের সঙ্গে বিচ্ছেদ: খুবই কঠিন ছিল আমার পক্ষে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া। এটিকে-মোহনবাগান আমার হৃদয়ে। চোটের কারণে প্রায় ১৩ মাস মাঠের বাইরে ছিলাম। এই ক্লাবই আমাকে সুযোগ দিয়েছিল প্রত্যাবর্তনের। অসাধারণ কাটিয়েছি গত মরসুম। দারুণ উপভোগও করেছি। আমি সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকব কোচ আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস-সহ এটিকে-মোহনবাগানের সকলের কাছে।
নেপথ্যে আইএসএল: আমি এই জায়গায় পৌঁছতে পেরেছি আইএসএলের জন্যই। একা আমি নই, ভারতের অন্যান্য ফুটবলারেরাও নিশ্চয়ই আমার সঙ্গে একমত হবে এই ব্যাপারে। আই লিগের প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, আইএসএলের কোনও তুলনা নেই। শৈশবে আমি যখন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও লা লিগা দেখতাম, তখন মনে হত— এই পর্যায়ে খেলা ফুটবলারেরা নিশ্চয়ই অন্য গ্রহ থেকে এসেছেন। এঁরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। আইএসএলের জন্যই আমরা সুযোগ পেয়েছি বিশ্বের সেরা ফুটবলারদের পাশে খেলার, অনেক কিছু শেখার। নিজেদের খেলার উন্নতি করেছি। ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, আইএসএল আমার কাছে আশীর্বাদ।
নেপালের বিরুদ্ধে আসন্ন ম্যাচ: কয়েক দিনের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে যাবে নেপালের বিরুদ্ধে আসন্ন দু’টি আন্তর্জাতিক ফ্রেন্ডলিতে খেলতে পারব কি না।