বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠে। শনিবার জাকার্তায়। ছবি: এএফপি
স্বাধীনতা দিবসে শ্রীলঙ্কার গল থেকে উঠে আসা ভারতীয় হতাশার মেঘটা ক্রমশ পূর্বে সরতে সরতে জাকার্তার আকাশে পৌঁছে ঝরে পড়ল আনন্দবারি হয়ে! বিরাট কোহলিদের লজ্জার হার ভুলিয়ে যেখানে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠে নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছেন সাইনা নেহওয়াল।
ব্যাডমিন্টনে ভারতকে তার প্রথম বিশ্বসেরা চ্যাম্পিয়ন উপহার দেওয়ার।
এ দিন জাকার্তার সেমিফাইনালে ইন্দোনেশিয়ার ফেভারিট, ঘরের মেয়ে লিন্ডাওয়েনি ফানেত্রিকে ২১-১৭, ২১-১৭ হারালেন বিশ্বের দু’নম্বর সাইনা। জেতার পর বললেন, ‘‘ভাবতেই পারিনি ফাইনালে উঠতে পারব।’’ কোর্টে চার বারের সাক্ষাতে ইন্দোনেশিয়ার মেয়ের বিরুদ্ধে এটা সাইনার তিন নম্বর জয়। তবে এটা এই সপ্তাহের অন্যতম কঠিন ম্যাচ বলে মনে করেন তিনি। জিতে উঠে তিনি বলেন, ‘‘আমাকে এ দিন দর্শকদের বিরুদ্ধেও খেলতে হচ্ছিল। ফানেত্রি পয়েন্ট পাচ্ছিল চাপের মুখে পড়ে করা আমার ভুলের জন্য। ও তো কোনও টেনশন ছাড়াই খেলছিল।’’
প্রথম গেমে একটা সময় লড়াইটা ছিল ১৪-১৪। কিন্তু তার পরেই তিন পয়েন্টে এগিয়ে গিয়ে চাপ বাড়ানো শুরু করেন সাইনা। দ্বিতীয় গেমে ভারতীয়ের লাগাতার আক্রমণের সামনে ক্রমশ দম হারাতে শুরু করেন ফানেত্রি। একটা সময় হাঁটুর ব্যথায় বসে পড়েন। চিকিৎসক ডাকতে হয় কোর্টে। কিন্তু ফাইনালকে পাখির চোখ করা সাইনা তাঁকে কোনও রকম ছাড় দিতে রাজি ছিলেন না। উল্টে অসাধারণ কিছু স্ম্যাশ বেরোল তাঁর র্যাকেট থেকে। কোর্টে নড়াচড়াও ছিল দারুণ স্বচ্ছন্দ। সাইনা বলেন, ‘‘আগের ম্যাচগুলোতে ও বারবার খেলায় দুর্দান্ত ভাবে ফিরে এসেছে। এর জন্য আমি সারা ম্যাচে সতর্ক ছিলাম।’’
খেতাবের লড়াইয়ে এ বার সাইনার সামনে পুরনো শত্রু, ক্যারোলিনা মারিন। বিশ্বের এক নম্বর স্পেনের মেয়ের কাছে অল ইংল্যান্ড ফাইনালে হেরেছিলেন সাইনা। এ বার মধুর প্রতিশোধের সুবর্ণ সুযোগ তাঁর সামনে। জিতলে খেতাব ও স্বর্ণ পদকের পাশাপাশি অর্জন করবেন প্রথম ভারতীয় হিসাবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলার গৌরব। যে সম্মান নেই প্রকাশ পাড়ুকোন বা পুল্লেলা গোপীচন্দেরও।
রবিবারের সেই ফাইনাল নিয়ে সাইনা বলছিলেন, ‘‘অল ইংল্যান্ড ফাইনালের চেয়ে এই ম্যাচটা অন্য রকম। কন্ডিশনটা আলাদা কি না। ক্যারোলিন মাঝে মাঝে তীব্র গতির শট খেলে। খেয়াল রাখতে হবে।’’
জাকার্তার এই কোর্টে তিন-তিনটি ইন্দোনেশিয়া সুপার সিরিজ খেতাব জিতেছেন সাইনা। পয়া কোর্টে হয়তো অনেকটাই স্বচ্ছন্দ থাকবেন তিনি। এখন দেখার, সেই কোর্ট সাইনাকে এ বার বিশ্বজয়ীর হাসিটাও উপহার দেয় কি না।