ফাইল চিত্র।
নিজের দলের বোলার চার উইকেট নিয়ে বিপক্ষ ব্যাটিংকে ভাঙছেন, অথচ খুশি নন স্বয়ং অধিনায়ক। তিনি দৌড়ে এসে বোলারকে বলছেন, আর উইকেট নিতে হবে না! সত্যি এ রকম ঘটনা ঘটেছিল একটা ম্যাচে। যেখানে বোলার ছিলেন পাকিস্তানের অফস্পিনার সইদ আজমল এবং অধিনায়ক ছিলেন সচিন তেন্ডুলকর! এই ঘটনার কথা ফাঁস করেছেন আজমল নিজেই।
২০১৪ সালে, লর্ডসের ওই ম্যাচটি ছিল অবশিষ্ট বিশ্ব একাদশ বনাম মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি) একাদশের মধ্যে। এমসিসি একাদশের নেতৃত্বে ছিলেন সচিন। তাঁর দলে ছিলেন অ্যারন ফিঞ্চ, ব্রায়ান লারা, রাহুল দ্রাবিড়রা। এবং, অবশ্যই আজমল। অন্য দিকে, অবশিষ্ট বিশ্ব একাদশের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন শেন ওয়ার্ন। তাঁর দলে ছিলেন অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, বীরেন্দ্র সহবাগ, কেভিন পিটারসেন, যুবরাজ সিংহরা। ৫০ ওভারের ম্যাচ শুরু হওয়ার কিছু পরেই অবশিষ্ট বিশ্ব একাদশের স্কোর দাঁড়ায় চার উইকেটে ৬৮। আজমল ফিরিয়ে দেন গিলক্রিস্ট, পিটারসেন, শাহিদ আফ্রিদি এবং তামিম ইকবালকে। ওই সময়ই ঘটনাটা ঘটে।
পাকিস্তানের একটি চ্যানেলে আজমল বলেছেন, ‘‘এমসিসি-র উদ্যোগে ওই প্রীতি ম্যাচটা হচ্ছিল। ওই ম্যাচ থেকে পাওয়া অর্থ যাওয়ার কথা ছিল ত্রাণ তহবিলে। ক্রিকেটারেরা মাঠে যত সময় কাটাবে, তত বেশি অর্থ সংগ্রহ হবে। এই ছিল নিয়ম। কিন্তু খেলা শুরু হওয়ার পরে চার ওভারে আমি চারটে উইকেট তুলে নিই।’’
তার পরেই ছুটে আসেন সচিন। কী বলেছিলেন ওই ম্যাচের অধিনায়ক? আজমল জানিয়েছেন গোটা ঘটনাটা। পাক অফস্পিনার উইকেট নিচ্ছেন দেখে সচিন দৌড়ে এসে তাঁকে বলেন, ‘‘সইদ ভাই, এই ম্যাচটাকে অত গুরুত্ব দিতে হবে না। এত মন দিয়ে বল করার কিছু নেই। এটা একটা প্রীতি ম্যাচ। এই ম্যাচটা উপভোগ করতে লোকে এসেছে। ওরা খাবে, মজা করবে। ম্যাচটা সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টার আগে যেন শেষ না হয়।’’
জবাবে কী বলেছিলেন তিনি? আজমলের স্মৃতিচারণ, ‘‘বলি, আমি হাল্কা ভাবে ম্যাচটাকে নিচ্ছি না, এটা বোঝানোর জন্যই ভাল বল করছিলাম।’’ সচিন উত্তরে বলেছিলেন, ‘‘আমি তোমার সঙ্গে একমত। কিন্তু এই ম্যাচের লক্ষ্য হল, যত বেশি সম্ভব অর্থ সংগ্রহ। তাই ম্যাচটাকে উপভোগ করো, ক্রিকেটকে উপভোগ করো।’’
এর পরে দেখা যায়, দুরন্ত ব্যাট করে যুবরাজ সিংহ করেন ১৩৪ বলে ১৩২। অবশিষ্ট বিশ্ব একাদশের স্কোর দাঁড়ায় ৫০ ওভারে সাত উইকেটে ২৯৩। আজমল ওই চার উইকেটেই আটকে যান। জবাবে এমসিসি একাদশ চার ওভার বাকি থাকতে রান তুলে দেয়। ফিঞ্চ ১৪৫ বলে ১৮১ রান করে অপরাজিত থাকেন। সচিন করেছিলেন ৪৫ বলে ৪৪।