যখন গ্রেগ চ্যাপেলের শাসনকাল। -ফাইল চিত্র।
সচিন তেন্ডুলকর মানে কী? শুধু ভারতীয় ক্রিকেটের কাছেই নয়, বিশ্ব ক্রিকেটেও!
সচিন তেন্ডুলকর মানে ক্রিকেট-ঈশ্বর, যিনি মাঠের বাইরেও ‘পলিটিক্যালি কারেক্ট’। কোনও বিতর্ক তাঁর ২৫ বছরের তুঙ্গস্পর্শী ক্রিকেট কেরিয়ারে দাগ ফেলতে পারেনি।
কিন্তু কে জানত অবসরের দু’বছর পরেও তিনি এমন কিছু কাহিনি শোনাবেন যার পরে মনে হতেই পারে এ যেন নতুন অবতারে সচিন তেন্ডুলকর!
যেমন দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে সচিন ফাঁস করলেন, কী ভাবে তিনি চ্যাপেল ভাইদের একহাত নিয়েছিলেন ভারতের এক দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। তার গায়ে গায়েই ইয়ান নিজের কলামে সচিনের কড়া সমালোচনা করে লিখেছিলেন, ‘‘সচিনের এ বার আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখার সময় এসে গিয়েছে।’’ তার কয়েক দিনের ভেতর ডারবানের এক জিমে সচিন-ইয়ান মুখোমুখি। ওয়ার্ক আউটে ব্যস্ত সচিনকে দেখে ইয়ান বলেন, ‘‘অ! এটাই তা হলে তোমার এত ভাল খেলার রহস্য!’’ সচিন তখনও ইয়ান চ্যাপেলের উপর রেগে ছিলেন। সেই ভঙ্গিতেই জবাব দেন, ‘‘ওফ! আপনারা এত তাড়াতাড়ি খোলস পাল্টান না!’’ এতেই শেষ হলেও না হয় কথা ছিল! কিন্তু সচিন তার পরেও সে দিন ইয়ান চ্যাপেলকে বলে দিয়েছিলেন, ‘‘আপনার ভাই তো সব ঝামেলার মূলে। উনি ভারতীয় ক্রিকেটকে কম করে পাঁচ বছর পিছিয়ে দিয়ে গিয়েছেন।’’ গ্রেগ চ্যাপেল তার কিছু দিন আগেই ভারতীয় কোচ হিসেবে প্রাক্তন হয়েছেন।
এই সংক্রান্ত আরও খবর...
• গ্রেগ একটা ডিনামাইট... যেখানে সেখানে ফাটে... যাক, এখন বাড়িতে বিশ্রাম করুক
সচিন-আবেগের অজানা কাহিনি? তা-ও আছে। তেন্ডুলকরের অবসর টেস্ট-উত্তর ওয়াংখেড়েতে ভারতীয় ড্রেসিংরুম। সদ্য তাঁর সেই বিদায়ী বক্তৃতা দিয়ে মাঠ থেকে ফিরেছেন সচিন। নিজে এবং গোটা টিম স্তব্ধ। এমন সময় বিরাট কোহলি এসে ঢুকলেন। ভারতের বর্তমান টেস্ট ক্যাপ্টেনের হাতে একটা ‘পাউচ’। ভেতরে কিছু একটা ভরা। কোহলির ভঙ্গিতেই স্পষ্ট, পাউচের ভেতরের বস্তুটি তাঁর কাছে বিরাট দামী।
তেন্ডুলকরের একটা হাত ধরে অন্য হাতে সেই পাউচ দিয়ে কোহলি বললেন, ‘‘আমার বাবা এটা আমাকে দিয়েছিলেন। আজ এটা তোমাকে দিচ্ছি।’’ সচিন সেটার দিকে তাকিয়ে দেখলেন, ভেতরে কিছু সুতো রয়েছে। এ বার কোহলি সচিনের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করলেন। সচিন সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলেন, ‘‘আরে তুঝে তো গলে লাগনা হ্যায়।’’ সচিনের কথাটা যেন কোহলির কানেই যায়নি। ছলছল চোখে তিনি সচিনকে ‘‘তোমাকে ভীষণ মিস করব’’ বলে ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে যান। সচিনও সজল চোখে চেয়ারে ধপ করে বসে পড়েন তার পর!
তীব্র শারীরিক যন্ত্রণা নিয়ে যিনি একাধিক অমূল্য ইনিংস খেলেছেন, সেই সচিনের কাছেও যখন যন্ত্রণা অসহ্য হয়, কী করেন? ‘‘সে রকমটা হয়েছিল আমার টেনিস এলবোর সময়। তাড়াতাড়ি ব্যথা কমাতে আমি পেনকিলার গিলে না খেয়ে অনেক সময় চিবিয়ে খেয়েছি। তাতে তুলনায় দ্রুত কাজ দেয়। কিন্তু এক বার আমি আর যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে হাসপাতাল থেকেই অঞ্জলিকে ডেকে পাঠাই। মনে আছে ওকে বলেছিলাম, আসার সময় একটা ভিডিও ক্যামেরা নিয়ে এসো। কারণ আমাকে এত যন্ত্রণায় ছটফট করতে কেউ কখনও দেখেনি!’’