সচিন তেন্ডুলকর। ছবি: সংগৃহীত
স্বপ্ন আর প্রবল আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ছোট্ট ছেলেটা সটান বলেই দিয়েছিলেন মনের কথা। সাহস নিয়ে তৎকালীন তাবড় অধিনায়ক আর কড়া প্রশিক্ষকের কাছে জানিয়েছিলেন ইচ্ছার কথা। নাহ্! আর ফিরে তাকাতে হয়নি, ক্রমেই তিনিই হয়ে উঠেছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের 'ওপেনিংয়ে'র এক মোক্ষম অস্ত্র! তিনি সচিন রমেশ তেন্ডুলকর।
সম্প্রতি নিজেই খোলসা করেছেন একথা। সচিন তেন্ডুলকর জানিয়েছেন, ৯০ এর দশকের অজানা স্মৃতি। প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার আকাশ চোপড়ার ইউটিউব চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে, মাস্টার-ব্লাস্টার জানান, গলার ব্যথা থাকায় শেরি (নভজ্যত সিং সিধু) জানান তিনি ওই দিনের ম্যাচটি খেলতে অপারগ। সাহসী পদক্ষেপ নেন তিনিও। সটান হাজির হন তৎকালীন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মহম্মদ আজহারউদ্দিনের কাছে। যেখানেই ছিলেন বিখ্যাত ক্রিকেট কোচ অজিত ওয়াদেকরও। যদিও সচিন বলেন, আমাকে ওপেনিংয়ের অনুমতি দিন! কারণ আমি নিশ্চিত ভাল খেলব।
তিনি আরও বলেন, ''আমি আজহারকে বলি, যদি ব্যর্থ হই আমি আর তাঁর কাছে আসব না।" জানা যায়, এই বক্তব্যের পরই, সচিনের আত্মবিশ্বাসে মুগ্ধ হন আজহারউদ্দিন এবং কোচ অজিত ওয়াদেকর। তাঁরা অনুমতি দেন তাঁকে। তারপরেই ঘটে ইতিহাস। অকল্যান্ডে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে, ওই ম্যাচেই সচিন ওপেনিংয়ে নেমেই ৪৯ বলে ৮২ রান করেন। নিমেষেই শোরগোল ফেলে দেয় এই অসামান্য প্রতিভার নতুন সূচনা। তারপর আর সুপারিশ করতে হয়নি তাঁকে। একের পর এক আন্তর্জাতিক কঠিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লড়েছেন তিনি। সহ-যোদ্ধাদের সঙ্গে ওপেনিংয়েই ঝড় তুলেছেন তিনি। গড়েছেন একের পর এক রেকর্ড। হয়ে উঠেছেন ক্রিকেটের অন্যতম ভগবান। হয়েছেন এযাবৎকালের সেরা ব্যাটসম্যান। ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে একাধিক রেকর্ডের মধ্যেই জুড়ে নিয়েছেন এই তকমাও। সামগ্রিক ভাবে ৩৪৪ টি ম্যাচে ওপেন করেছেন তেন্ডুলকর। ৪৮.২৯ স্ট্রাইক রেট সহ, শুধু ওপেনিংয়েই তুলেছেন ১৫ হাজার ৩১০ রান। যদিও তিনি নিজেই জনিয়েছেন, "আমি তারপরে ৬০-৭০ টি ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমেছি। কোনওদিন আর তাঁদের জিজ্ঞাসা করতে হয়নি। বরঞ্চ আমার জন্য তাঁরা খুশি হয়েছেন।''
আরও পড়ুন: মন্থর ওভার রেটের জন্য ১২ লক্ষ টাকা জরিমানা কোহালিকে
আরও পড়ুন: কোহালির ব্যাঙ্গালোরকে গুঁড়িয়ে দিল রাহুলের পঞ্জাব
আত্মবিশ্বাস আর লড়াইয়ের এই মহীরুহের সাবলীল স্বীকারোক্তির পর তা ছড়িয়ে পড়তে সময় নেয়নি। নিমেষেই ফের সচিন-বন্দনায় মেতেছে সোশ্যাল দুনিয়া। ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত, যা কয়েক সেকেন্ডেই ভেঙে দিতে পারত সব। শেষ করে দিতে পারত সমস্ত আশা ভরসা। সবদিক বিবেচনা করেই মারাত্মক 'রিস্ক' তিনি নিয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু অবশেষে সেই রিস্কই যেন হয়ে গেল সচিনের জীবনের এক মাইলফলক।