সচিন তেন্ডুলকর ও বীরেন্দ্র সহবাগ।
বীরেন্দ্র সহবাগকে ওপেনিংয়ে জায়গা করে দিতে পছন্দের জায়গা ছেড়ে মিডল অর্ডারে পিছিয়ে গিয়েছিলেন সচিন তেন্ডুলকর। জানালেন প্রাক্তন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান অজয় রাতরা। তাঁর মতে, ভারতীয় দলে ওপেনার হিসেবে সহবাগকে খেলানোর জন্য কৃতিত্ব প্রাপ্য সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়েরও।
২০০১ সালে সহবাগকে একদিনের ম্যাচে ওপেনার হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই সময় চোটের জন্য দলের বাইরে ছিলেন সচিন। শ্রীলঙ্কা ও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ত্রিদেশীয় সিরিজের গোড়ার দিকের ম্যাচ হেরে সমস্যায় ছিল ভারত। যুবরাজ সিংহ ও অময় খুরেশিয়াকে শুরুতে নামানোর পরিকল্পনা মুখ থুবড়ে পড়েছিল। আবার সহবাগ মিডল অর্ডারে যেখানে নামছিলেন, তা তাঁর পক্ষে বড্ড দেরি হয়ে যাচ্ছিল। এই পরিস্থিতিতে ২০০১ সালের ২৬ জুলাই নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ত্রিদেশীয় সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে সহবাগকে ওপেন করতে পাঠিয়েছিলেন সৌরভ। কেরিয়ারে সেই প্রথম বার একদিনের ক্রিকেটে ওপেন করেছিলেন সহবাগ।
সহবাগের ওপেনার হিসেবে শুরুটা ভাল হয়নি। সেই ম্যাচে তিনি ৫৪ বলে করেন ৩৩। ভারতও হারে। তবে দলের পক্ষে সর্বাধিক রান করেছিলেন তিনিই। ওপেনার হিসেবে আরও দু’বার ব্যর্থ হওয়ার পর বিস্ফোরক মেজাজে দেখা যায় তাঁকে। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৭৯ বলে সেঞ্চুরি করে জেতান তিনি। এই সেঞ্চুরিই সহবাগের পায়ের তলায় জমি এনে দেয়।
আরও পড়ুন: ‘আমি ওঁকে রীতিমতো ভয় পেতাম’ কার সম্বন্ধে বললেন কপিলদেব
আরও পড়ুন: করোনা পজিটিভ স্নেহাশিস, কোয়রান্টিনে সৌরভ-সহ পরিবার
কিন্তু সমস্যা শুরু হয় এর পর। পরের ত্রিদেশীয় সিরিজে ফেরেন সচিন। বীরেন্দ্র সহবাগ ফিরে যান মিডল অর্ডারে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে ছয় ম্যাচের সিরিজের মাঝামাঝি অবশ্য সহবাগ ফের ওপেনিংয়ে ফেরেন। ওপেনার হিসেবে চার ইনিংসে তিনি করেন ৫১, ৮২, ৪২ ও ৩১। সেই সিরিজেই অভিষেক ঘটেছিল রাতরার।
তখন সচিন-সহবাগ ওপেন করছিলেন। সৌরভ নামছিলেন তিনে। কিন্তু তার ফলে ডানহাতি-বাঁহাতি কম্বিনেশন রাখা যাচ্ছিল না ওপেনিংয়ে। সেই সময়ই নিজে থেকে পিছিয়ে ব্যাট করতে নামার প্রস্তাব দেন সচিন। রাতরা বলেছেন, “সেই সময় সচিন ওপেনার হিসেবে ভাল খেলছিল। কিন্তু সহবাগকেও ওপেন করাতে হত। সচিন তাই চার নম্বরে পিছিয়ে নামার কথা বলে। ডানহাতি-বাঁহাতি কম্বিনেশনের জন্য তখন সহবাগের সঙ্গে ওপেন করতে নামেন সৌরভ। সচিন রাজি না হলে সহবাগকে কিন্তু ব্যাটিং অর্ডারে পরের দিকে নামতে হত। ওপেন করার সুযোগ পেল না সহবাগ। সেক্ষেত্রে ছবিটাই অন্যরকম হত।”
তখন বদলে গিয়েছিল সচিনের ভূমিকাও। রাতরা বলেছেন, “দলের জন্য স্বার্থত্যাগ করেছিল সচিন। চার নম্বরে ওর দায়িত্ব ছিল ৪৫ ওভার পর্যন্ত টিকে থাকা। আর তা খেটেও গিয়েছিল। বীরু দারুণ সফল হয়েছিল ওপেনিংয়ে।” ভারতের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে বীরুকে ওপেনিংয়ে পাঠিয়ে সচিন প্রথমবার চার নম্বরে নেমেছিলেন। ইংল্যান্ডে ন্যাটওয়েস্ট ট্রফিতে এই ব্যাটিং অর্ডারই করেছিল বাজিমাত। ২০০৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশ্বকাপের সময় সচিন অবশ্য ফিরে আসেন ওপেনিংয়ে। সঙ্গী হন সহবাগের। সৌরভ নেমে যান তিনে।