ব্রিটনি গ্রিনার ফাইল ছবি
মাদক পাচারের দায়ে আমেরিকার তারকা বাস্কেটবল খেলোয়াড়কে ন’বছরের জন্যে জেলে পাঠাল রাশিয়ার আদালত। এই নিয়ে দু’দেশের মধ্যে শুরু হয়ে গেল উত্তেজনা। অনেকেই মনে করছেন, ইউক্রেন আক্রমণ নিয়ে যে ভাবে রাশিয়ার বিরোধিতা করেছিল আমেরিকা, এই ঘটনা তারই প্রতিশোধ। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন স্পষ্ট বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয়।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে আমেরিকার দু’বারের সোনাজয়ী বাস্কেটবল খেলোয়াড় ব্রিটনি গ্রিনারকে মস্কো বিমানবন্দরে আটক করা হয়। তাঁর কাছে গাঁজা-সহ আরও বিভিন্ন মাদক পাওয়া যায়। রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের কয়েক দিন পরে এই ঘটনা ঘটে। তখন থেকেই বিচারব্যবস্থা নিয়ে দু’দেশের উত্তেজনা চরমে উঠেছে। গ্রিনারকে শাস্তি দেওয়ার পর সেই বিবাদ আরও বেড়েছে। বিচারকরা প্রথমে গ্রিনারকে সাড়ে ন’বছর জেলে পাঠানোর কথা ভেবেছিলেন। তা কমিয়ে ন’বছর করা হয়েছে। তাঁকে ১৬,৫৯০ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ১৩ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা) জরিমানা দিতে হবে।
গ্রিনারকে শাস্তি দেওয়ার পরেই এক বিবৃতিতে বাইডেন বলেছেন, ‘অন্যায় ভাবে ব্রিটনিকে আটক করে রেখেছে রাশিয়া। কোনও ভাবেই এটা গ্রহণযোগ্য নয়। এখনই ওকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি, যাতে ও স্ত্রী, বন্ধুবান্ধব এবং সতীর্থদের কাছে ফিরে যেতে পারে।” বাইডেন এ-ও জানিয়েছেন, গ্রিনারকে দেশে ফেরানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করা হবে আমেরিকার তরফে।
নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন গ্রিনার। বলেছেন, “মানছি আমি ভুল করেছি। তবে আশা করি এখানেই আমার জীবন শেষ হয়ে যাবে না। আদালতকে আমি বোঝাতে চেয়েছি যে তাড়াহুড়ো এবং চাপে থাকার জন্য এই ভুল হয়ে গিয়েছে। আমি দ্রুত দলে যোগ দিতে চেয়েছিলাম।” গ্রিনারের ব্যাখ্যা, তিনি কোনও ভাবেই নিষিদ্ধ মাদক নিয়ে আইন ভাঙতে চাননি।
গ্রিনারের আইনজীবীদের দাবি, আমেরিকার বাস্কেটবল খেলোয়াড়ের স্বপক্ষে কোনও যুক্তিই শুনতে চায়নি আদালত। যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। সম্পূর্ণ অযাচিত ভাবে তাঁকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। গ্রিনার দাবি করেন, চোট পাওয়ার পর যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে গাঁজা মেশানো ওষুধ খেতে হয় তাঁকে।
আমেরিকায় বাস্কেটবলের মরসুম না থাকলে অনেকেই অতিরিক্ত অর্থের জন্য বিভিন্ন দেশে গিয়ে স্থানীয় লিগে খেলে থাকেন। গ্রিনারও রাশিয়ার একাতেরিনবার্গের একটি ক্লাবের হয়ে খেলতে গিয়েছিলেন। আগে ইউরোপের অন্য দেশের লিগেও খেলেছেন। আদালতে তিনি সতীর্থদের সঙ্গে উচ্ছ্বাসের একটি ছবিও দেখান। কোনও কিছুই গ্রাহ্য করা হয়নি।
আমেরিকা গ্রিনারকে ফেরানোর চেষ্টা করছে। ‘সোয়াপ’ চুক্তির মাধ্যমে গ্রিনার এবং আমেরিকার নৌ-চালক পল হুইলানকে দেশে ফেরানো হতে পারে। বদলে আমেরিকার হাতে থাকা রাশিয়ার দুই বন্দিকে নিজেদের দেশে ফেরানো হতে পারে।