পরিবার-প্রেমেই জীবনের সেরা সময় হিটম্যানের

রোহিতের জীবনে প্রশংসা এবং সমালোচনা, দুটোই সমান ভাবে এসেছে। গত ১২ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জীবনে বহু চড়াই-উতরাইয়ের সাক্ষী থেকেছেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:২৩
Share:

সুখী: স্ত্রী ও কন্যার বন্ধনেই পাল্টে গিয়েছে সব কিছু, বলছেন রোহিত। টুইটার

গত এক বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শাসন করেছেন রোহিত শর্মা। যে রোহিতের ব্যাট থেকে ২০১৯ সালে এসেছে ২,৪৪২ রান। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে তো বটেই, টেস্টেও ওপেন করার চ্যালেঞ্জ নিয়ে সফল হয়েছেন।

Advertisement

গত ১২ মাসে পাওয়া এই দুরন্ত সাফল্যের রহস্য কী? সোমবার সংবাদসংস্থাকে রোহিত বলেছেন, ‘‘আমি এখন অন্য রোহিত। আগে যে ভাবে ভাবনা চিন্তা করতাম, এখন আর সে ভাবে করি না। আমার পরিবারের জন্য আমি এখন খুব ভাল জায়গায় আছি। আমার স্ত্রী রিতিকা এবং মেয়ে সামাইরা আমার পাশে আছে। এখন কে কী বলছে, তা নিয়ে মাথা ঘামাই না।’’

রোহিতের জীবনে প্রশংসা এবং সমালোচনা, দুটোই সমান ভাবে এসেছে। গত ১২ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জীবনে বহু চড়াই-উতরাইয়ের সাক্ষী থেকেছেন তিনি। এখন তাই শিখে গিয়েছেন সমালোচনা গায়ে না মাখতে। রোহিতের মন্তব্য, ‘‘আমার স্ত্রী, মেয়ে সব সময় আমাকে ভালবাসা আর খুশিতে ভরিয়ে রাখে। আমি সেই পরিধির মধ্যেই থাকতে চাই। তাই এখন আর ভাবি না রাম, শ্যাম, যদু আমাকে নিয়ে কী বলল।’’

Advertisement

ইংল্যান্ডের মাটিতে বিশ্বকাপ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে প্রচারিত হয়েছিল, ভারতের সিনিয়র ক্রিকেটাররা তাঁদের স্ত্রী-পরিবারকে নির্দিষ্ট সময়সীমার বাইরেও সঙ্গে রেখে দিয়েছেন। এই নিয়ে রোহিতের প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমাদের পরিবার সব সময় আমাদের পাশে থাকে। আমাদের খুশি রাখে। এই সব যখন লেখা হচ্ছিল, তখন আমার কয়েক জন বন্ধু এসে কথাটা বলেছিল। শুনে আমি খুব হেসেছিলাম।’’ এর পরে রোহিত এও বলছেন, ‘‘তবে ব্যাপারটা অনেক দূর পর্যন্ত টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। আমার পরিবারকেও জড়িয়ে ফেলা হয়েছিল। আমার সম্পর্কে বলুন। কিন্তু আমার পরিবারকে জড়াবেন না। আমার মনে হয় বিরাটেরও (কোহালি) এই ব্যাপারে একই মনোভাব। পরিবার আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।’’

রোহিত পরিষ্কার করে দিয়েছেন, সমালোচনায় প্রভাবিত হওয়ার বয়স তিনি পেরিয়ে এসেছেন। সাদা বলের ক্রিকেটে ভারতীয় দলের সহ-অধিনায়ক বলেছেন, ‘‘আমার সম্পর্কে কেউ ভাল বলুক বা খারাপ, তাতে প্রভাবিত হই না। কারণ সেই বয়সটা আমি পেরিয়ে এসেছি। সত্যি কথা বলতে কী, এখন আর এ সব নিয়ে মাথাই ঘামাই না।’’

গত বছরই টেস্টে ওপেনার হিসেবে ‘অভিষেক’ ম্যাচেই ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে। যে ইনিংস দেখে অনেকেই মনে করছেন, বীরেন্দ্র সহবাগের পরে আর এক জন বিস্ফোরক ওপেনার পেয়ে গেল ভারত। রোহিতের সাফ জবাব, ‘‘টেস্ট ম্যাচ নিয়ে ভাবনা চিন্তা করা অনেক দিন আগে ছেড়ে দিয়েছি।’’ প্রশ্ন উঠছে, কেন? রোহিতের ব্যাখ্যা, ‘‘আগে টেস্টে সফল হওয়ার ব্যাপারে বেশি ভাবতাম। কেন ম্যাচে এ রকম হল, কেন ওই শটটা খেললাম, এই নিয়ে ভাবতাম। প্রতিটা টেস্ট ইনিংসের পরে ভিডিয়ো বিশ্লেষকের সঙ্গে বসে নিজের ইনিংসটা কাটাছেঁড়া করতাম। বিভ্রান্ত হয়ে যেতাম। পরে বুঝি, যা করেছি, ঠিক করিনি।’’

টেস্ট ক্রিকেটে একটা সময় রোহিতকে ব্যর্থ হতে দেখে অনেক ক্রিকেট বিশেষজ্ঞই বলেছিলেন, মুম্বইয়ের এই ব্যাটসম্যানের টেকনিকে গলদ আছে। রোহিত নিজে বলছেন, ‘‘টেকনিক নিয়ে খুব বেশি ভাবতে গিয়ে আমি আর খেলাটা উপভোগ করতে পারছিলাম না। তখন মনের মধ্যে শুধু একটা কথাই ঘোরাফেরা করত— কী ভাবে টেস্টে সফল হব। তাই ২০১৮-১৯ সালের অস্ট্রেলিয়া সফরের আগে নিজেকে বলি, ‘বস্, যা হওয়ার হবে। আর টেকনিক নিয়ে ভাবতে বসব না।’ দিনের শেষে সতীর্থদের সঙ্গে হাসিঠাট্টা করব আর সময়টা উপভোগ করব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement