দায়বদ্ধ: নীচের দিকের খেলোয়াড়দের নিয়েও ভাবছেন রজার। এএফপি
টেনিস র্যাঙ্কিংয়ে নীচের দিকে থাকা খেলোয়াড়দের পুরস্কার অর্থ বাড়ানোর দাবি তুললেন রজার ফেডেরার। বুধবার ভারতীয় সময় রাতের দিকে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে বসনিয়ার দামির জুমহুরের কাছে প্রথম সেট হেরেও শেষ পর্যন্ত ৩-৬, ৬-২, ৬-৩, ৬-৪ ফলে জেতেন ফেডেরার। তার পরেই তিনি বলেন, টেনিসে র্যাঙ্কিংয়ের উপরের দিকে থাকা খেলোয়াড়দের জন্য পুরস্কার অর্থ বেড়েছে খুব ভাল ভাবেই। কিন্তু নীচের দিকে যাঁরা আছেন, তাঁদের কথা গুরুত্ব দিয়ে ভাবা হয়নি।
কিংবদন্তি টেনিস তারকা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি এ ব্যাপারে উদ্যোগী হবেন। এটিপি প্লেয়ার কাউন্সিলে রাফায়েল নাদালের সঙ্গে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। সেখানে নতুন প্রস্তাব দেবেন ফেডেরার যে, এটিপি টুর্নামেন্টে পুরস্কার অর্থের বৃহত্তর অংশ এমন খেলোয়াড়দের জন্য বরাদ্দ করা হোক, যারা প্রতিযোগিতায় বেশি দূর এগোতে পারেন না। ‘‘আমরা এর জন্য লড়াই করব। জানি, টুর্নামেন্ট কর্তৃপক্ষের জন্য এটা খুব গ্রহণযোগ্য ভাবনা হবে না। যারা প্রথম বা দ্বিতীয় রাউন্ডের বেশি এগোতে পারছে না, তাদের পুরস্কার অর্থ বাড়ানোর কথা অনেকেই ভাবতে চাইবে না। তবু আমরা লড়ব।’’
এখানেই শেষ নয়। নীচু র্যাঙ্কিংয়ের খেলোয়াড়দের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি আরও বলেছেন, ‘‘চ্যালেঞ্জার বা কোয়ালিফাইং পর্বের খেলোয়াড় এবং দ্বিতীয় রাউন্ডে গিয়ে হেরে যাওয়াদের আরও বেশি টাকা প্রাপ্য। আমার মনে হয়, উপরের দিকে আর টাকা বাড়ানো উচিত নয়। আমরা যারা সেখানে আছি, প্রত্যেকেই বেশ ভাল জায়গা পৌঁছে গিয়েছি। অর্থ বাড়াতে হলে নীচের দিকে বাড়ানো উচিত।’’ কিংবদন্তি এবং বিশ্বের সর্বোচ্চ আয় করা টেনিস খেলোয়াড় হলেও ফেডেরারের এমন উদারতা খেলার ইতিহাসে উদাহরণ হয়েই থেকে যাবে। যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে পুরুষ ও মহিলাদের বিভাগে চ্যাম্পিয়ন পান ৩.৮৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২৭ কোটি ৬৪ লাখ টাকা)। সেখানে এ বছর অঙ্কটা বাড়ানোর পরে প্রথম রাউন্ডের অ্যাপিয়ারেন্স ফি ৫৮,০০০ মার্কিন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৪১ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকা) হয়েছে। চ্যালেঞ্জার ট্যুর বা গ্র্যান্ড স্ল্যাম কোয়ালিফায়ার্সে যাঁরা খেলেন, অনেক সময় অর্থাভাবে কেরিয়ারকে গড়েই তুলতে পারেন না। এই স্তরের খুব কম খেলোয়াড়ের স্পসনসর রয়েছে। কোচ ভাড়া করা থেকে শুরু করে উচ্চ পর্যায়ের ট্রেনিং মিলিয়ে টেনিস খুবই ব্যয়বহুল খেলা। মানবিক ফেডেরার বলছেন, প্রতিভা থেকেও কেউ যাতে অর্থের অভাবে হারিয়ে না যান, সেটা দেখা তাঁদের কর্তব্য। ‘‘আমরা যারা উপরের দিকে রয়েছি, তাদের মতোই পরিশ্রম করেন নীচের দিকে থাকা খেলোয়াড়েরা। অনেক আত্মত্যাগ করেন ওঁরা। তাই বর্ধিত অর্থ প্রাপ্য ওদের। আশা করছি, আগামী পাঁচ থেকে দশ বছরে এই বৈষম্য দূর করে ফেলতে পারব আমরা।’’
রজার ফেডেরার সত্যিই এক বড় উদাহরণ। কী কোর্টে, কী কোর্টের বাইরে!