চর্চায়: জর্জিনহোকে ব্যালন দেওয়ার দাবি উঠেছে গণমাধ্যমে। ছবি—রয়টার্স।
ইউরো ২০২০-র সেমিফাইনালে স্পেনকে টাই-ব্রেকারে ৪-২ হারানোর পরে ইটালির কোচ রবের্তো মানচিনি জানিয়ে দিলেন, আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই। লড়াই এখনও শেষ হয়নি। রবিবার ইউরো ফাইনাল জেতার পরেই উৎসবে মাতবেন তাঁরা।
ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের মানচিনি বলেছেন, ‘‘এই জয়ের নেপথ্যে ছেলেদের অবদান অনস্বীকার্য। তবে এখানেই থেমে গেলে চলবে না। আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই। এখনও লড়াই শেষ হয়নি।’’ যোগ করেছেন, ‘‘জানতাম, প্রতিযোগিতার সব চেয়ে কঠিন ম্যাচ খেলতে চলেছি আমরা। ষষ্ঠ ম্যাচে এই ধরনের প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে খেলা খুবই কঠিন। প্রত্যেককে তরতাজা চেয়েছি। আমি ভাগ্যবান, প্রত্যেকে নিজেদের সেরাটা উজাড়
করে দিয়েছে।’’ দ্বিতীয়ার্ধে ফেদেরিকো কিয়েসার গোলে এগিয়ে যায় ইটালি। ৮০ মিনিটে স্পেন সমতা ফেরায় আলভারো মোরাতার গোলে। টাই-ব্রেকারে প্রথম কিক নষ্ট করেন লোকাতেল্লি। কিন্তু আলভারো মোরাতার কিক বাঁচিয়ে নায়ক জানলুইজি ডোনারুমা। মানচিনি বলেছেন, ‘‘শুটআউটে কোনও ম্যাচ জেতা মানে লটারি পাওয়ার সমান। যে কোনও কিছুই ঘটতে পারে। তবে আমরা ফাইনালে যাওয়ার জন্যই নেমেছিলাম। যোগ্য দল হিসেবে লক্ষ্যপূরণ করেছি।’’
ইটালির হয়ে টাই-ব্রেকারে শেষ কিক নিতে এসেছিলেন জর্জিনহো। ঠান্ডা মাথায় উনাই সিমোনের বাঁ-প্রান্ত দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন তিনি। গণমাধ্যমে সমর্থকেরা দাবি করতে শুরু করেন, এ বারের ব্যালন ডি’ওর যেন ইটালি দলের ‘প্রফেসর’-এর হাতেই তুলে দেওয়া হয়। কী ভাবে এতটা চাপ নিয়ন্ত্রণ করলেন তিনি? জর্জিনহোর কথায়, ‘‘শট নেওয়ার আগে লম্বা শ্বাস নিয়ে নিজেকে বলি, এটাই দেশকে জেতানোর সুযোগ। তার পরে ভবিষ্যতের কথা না ভেবেই শট নিই।’’
ম্যাচ শেষে আরও একটি মজার ঘটনা ঘটে। পরিচিত একজনের সঙ্গে দেখা করতে গ্যালারির সামনে চলে যান ইটালি দলের ডিফেন্ডার লিয়োনার্দো বোনুচ্চি। ফেরার সময় এক নিরাপত্তারক্ষী বাধা দেন তাঁকে। মাঠে প্রবেশ করার অনুমতি দিচ্ছিলেন না। সমর্থকেরা তাঁর পরিচয় দেওয়ার পরেই ক্ষমা চেয়ে নেন ওই নিরাপত্তারক্ষী। বোনুচ্চি যদিও কিছু মনে করেননি। ম্যাচ শেষে বলেছেন, ‘‘উনি নিজের কাজ ঠিকঠাক করছিলেন। এটাই সব চেয়ে বড় কথা।’’ বোনুচ্চি স্বীকার করেছেন, স্পেনের বিরুদ্ধে এই সেমিফাইনাল তাঁর জীবনের সব চেয়ে কঠিন ম্যাচের মধ্যে অন্যতম। তাঁর কথায়, ‘‘বল দখলের লড়াইয়ে আমরা বরাবরই পিছিয়ে ছিলাম। ওরা অনেক বেশি পাস খেলেছে। আমাদের প্রান্তে এসে এত পাস খেলছিল যে, কোথায় দাঁড়ালে বল ছিনিয়ে নিতে পারব, বোঝা যাচ্ছিল না।’’
ক্ষমাপ্রার্থী মোরাতা: ইউরো থেকে বিদায়ের জন্য যাঁর দিকে আঙুল উঠছে বারবার, টাইব্রেকারে পেনাল্টি নষ্ট করা স্পেনের সেই আলভারো মোরাতা মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন। ইনস্টাগ্রামে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে তিনি লিখেছেন, ‘‘এ বারের ইউরো থেকে আমাদের আরও অনেক কিছু পাওয়ার ছিল।’’ কোচ এনরিকে অবশ্য জুভেন্টাস তারকার পাশেই আছেন। তাঁর বক্তব্য, পেনাল্টি থেকে গোল করতে না পারাও ফুটবলের অঙ্গ। তা মেনে নিতেই হবে।’’