মহড়া: গোয়ায় সতীর্থদের সঙ্গে অনুশীলনে লাল-হলুদের নতুন নাইজিরীয় স্ট্রাইকার ব্রাইট। এসসি ইস্টবেঙ্গলের টুইটার
সপ্তম আইএসএলে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের যদি তালিকা তৈরি করা হয়, শীর্ষে থাকবে ওড়িশা এফসি। দু’নম্বরে এসসি ইস্টবেঙ্গল।
দুই শিবিরেই এখনও পর্যন্ত জয় অধরা। সাত ম্যাচে এসসি ইস্টবেঙ্গলের পয়েন্ট তিন। হেরেছে চারটি ম্যাচ। ড্র করেছে তিনটিতে। রক্ষণের ব্যর্থতায় সর্বাধিক গোল খেয়েছে (১৩টি) লিগ টেবলের দশম স্থানে থাকা রবি ফাওলারের দল।
সাত ম্যাচে দু’পয়েন্ট নিয়ে একাদশতম স্থানে ওড়িশা। হেরেছে পাঁচটি ম্যাচ। ড্র করেছে দুটিতে। আজ, রবিবার দু’দলের কোচই স্বপ্ন দেখছেন নতুন বছরে ঘুরে দাঁড়ানোর।
আইএসএলে এসসি ইস্টবেঙ্গল শেষ ম্যাচ খেলেছিল গত ২৬ ডিসেম্বর চেন্নাইয়িন এফসি-র বিরুদ্ধে। পিছিয়ে পড়েও মাঠি স্টেনম্যানের জোড়া গোলে কোনও মতে হার বাঁচিয়েছিল তারা। এই এক সপ্তাহ ফাওলার ব্যস্ত ছিলেন ভুলত্রুটি শুধরে নতুন ভাবে দলকে গড়ে তুলতে। যার অঙ্গ হিসেবে এটিকে-মোহনবাগান থেকে নিয়েছেন ডিফেন্ডার অঙ্কিত মুখোপাধ্যায়কে। সই করিয়েছেন রক্ষণের আর এক অভিজ্ঞ ফুটবলার রাজু গায়কোয়াড়কে। তবে তিনি সব চেয়ে বেশি নির্ভর করছেন সদ্য যোগ দেওয়া ২২ বছর বয়সি নাইজিরীয় স্ট্রাইকার ব্রাইট এনোবাখারের উপরে।
নববর্ষে কি এসসি ইস্টবেঙ্গলকে নবরূপে দেখা যাবে? শনিবার ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে ফাওলার বললেন, ‘‘মরসুমের শুরুতে আমাদের কী পারফরম্যান্স ছিল, তা ভুলিনি। সব ম্যাচেই আমরা একটু একটু করে উন্নতি করেছি। এক সপ্তাহের এই বিরতি আমাদের জন্য খুবই ইতিবাচক ছিল।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘দু’টো ম্যাচের মধ্যে সময় খুব কম থাকায় আমরা ঠিক মতো প্রস্তুতি নিতে পারিনি। যা সমস্যায় ফেলছিল। বার বার আমার পরিকল্পনা ভেস্তে যাচ্ছিল। এখন তা অনেকটাই কাটিয়ে উঠতে পেরেছি।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ছেলেরা সত্যিই খুব ভাল খেলছে। আমরা এখনও ম্যাচ জিততে পারিনি ঠিকই। তবে গত চারটি ম্যাচের মধ্যে মাত্র একটিতেই হেরেছি। কারণ, আমরা ঠিক পথেই এগোচ্ছি।’’
আইএসএলের শুরু থেকেই রক্ষণ ও আক্রমণভাগের ব্যর্থতা ডোবাচ্ছিল লাল-হলুদকে। হতাশায় ষষ্ঠ ম্যাচে কেরল ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে কোনও স্ট্রাইকার ছাড়াই প্রথম একাদশ গড়েছিলেন ফাওলার। সেই ম্যাচে এগিয়ে গিয়েও লাল-হলুদের জয় অধরা থেকে গিয়েছিল সংযুক্ত সময়ে ডিফেন্ডারদের ভুলে গোল খাওয়ায়। তার পরেই স্ট্রাইকার বলবন্ত সিংহ-সহ ন’জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এত দিন অ্যান্টনি পিলকিংটনকে ‘ফল্স নাইন’ হিসেবে ব্যবহার করছিলেন ফাওলার। এ বার ব্রাইট যোগ দেওয়ায় অনেকটাই চাপমুক্ত লিভারপুল কিংবদন্তি। তবে রবিবার ওড়িশার বিরুদ্ধে ব্রাইট শুরু থেকেই খেলবেন কি না, তা এখনও নিশ্চিত নয়। লাল-হলুদ অন্দরমহলে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, রক্ষণ শক্তিশালী করতে রাজু হয়তো প্রথম থেকেই খেলবেন। কারণ, শেহনাজ সিংহের হাল্কা চোট রয়েছে। তাঁকে পাওয়া যাবে না। ব্রাইটকে একটু পরে নামানোর সম্ভাবনাই বেশি। ফাওলারের কথায়, ‘‘ব্রাইট দারুণ বুদ্ধিমান ফুটবলার। প্রচণ্ড গতি রয়েছে। তবে আমি কখনওই বলব না, ও দলের নয় নম্বর জার্সি পরে খেলা স্ট্রাইকারের মতো প্রচুর গোল করবে। ব্রাইট রক্ষণকেও সাহায্য করতে পারে।’’
আইএসএলে বিদেশি ফুটবলারদের বয়স নিয়ে সমালোচনার জবাবও দিয়েছেন লাল-হলুদ কোচ। বলেছেন, ‘‘অনেকেরই ধারণা, ফুটবলজীবনের শেষ প্রান্তে পৌঁছে বিদেশিরা আইএসএলে খেলতে আসছে। ব্রাইটের বয়স কিন্তু খুবই কম।’’ তবে লিগ টেবলে সবার শেষে থাকলেও ওড়িশাকে হাল্কা ভাবে নিতে রাজি নন ফাওলার। বললেন, ‘‘ওড়িশার কোচ অসাধারণ। ওদের শক্তি তারুণ্য। ’’ ওড়িশার কোচ স্টুয়ার্ট ব্যাক্সটারের হুঙ্কার, ‘‘অধিকাংশ ম্যাচেই আমরা অল্পের জন্য হেরেছি। এএসি ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে আমাদের খুব একটা পার্থক্য নেই। ওদের কিন্তু সহজে জিততে দেব না।’’
ওড়িশার বিরুদ্ধে ম্যাচের আগেই ফের সংঘাত তীব্র হল ইস্টবেঙ্গলের কর্তাদের সঙ্গে বিনিয়োগকারী সংস্থার। কন্যাশ্রী কাপে রানার্স হওয়ার জন্য আইএফএ-র তরফে চেক পাঠানো হয়েছিল লগ্নিকারী সংস্থায়। তারা গ্রহণ করছে না। লাল-হলুদের লগ্নিকারী সংস্থার কর্তাদের কথায়, ‘‘আমরা তো এই প্রতিযোগিতায় খেলার জন্য কোনও ছাড়পত্র দিইনি। আইএফএ-র তরফেও আগে যোগাযোগ করা হয়নি।’’