সিন্ধুর লড়াই ভরসা দিচ্ছে হলদিয়ার ঋতুপর্ণাকে

‘তুই পারবি পদক আনতে’, রিও পাড়ি দেওয়ার আগেই বন্ধুকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছিলেন হলদিয়ার ঋতুপর্ণা দাস।হায়দরাবাদে গোপীচাঁদের ব্যাডমিন্টন অ্যাকাডেমিতে পিভি সিন্ধুর লড়াই সামনে থেকে দেখেছেন তিনি।

Advertisement

আরিফ ইকবাল খান

হলদিয়া শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৬ ০১:৩৩
Share:

সিন্ধুর সঙ্গে ঋতুপর্ণা দাস। ফাইল ছবি ।

‘তুই পারবি পদক আনতে’, রিও পাড়ি দেওয়ার আগেই বন্ধুকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছিলেন হলদিয়ার ঋতুপর্ণা দাস।

Advertisement

হায়দরাবাদে গোপীচাঁদের ব্যাডমিন্টন অ্যাকাডেমিতে পিভি সিন্ধুর লড়াই সামনে থেকে দেখেছেন তিনি। আগ্রাসন আর অদম্য জেদই যে তাঁকে অন্য সকলের থেকে এগিয়ে দেবে, শিষ্যের উপর সেই বিশ্বাস ছিল কোচ গোপীচাঁদেরও। ফাইনালে হারলেও অলিম্পিক্সে ব্যাডমিন্টনে প্রথম বার রুপো জিতে সেই বিশ্বাসেরই মান রাখলেন সিন্ধু। এই জয়েই সামনে এগোনোর অনুপ্রেরণা পাচ্ছে ঋতুপর্ণাও।

গত পাঁচ বছর হায়দরাবাদে গোপীচাঁদের অ্যাকাডেমিতে ঋতুপর্ণা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। গত বছর শ্রীলঙ্কায় একটি প্রতিযোগিতায় হাঁটুতে চোট পান তিনি। সুস্থ হয়ে সম্প্রতি হায়দারাবাদে গিয়ে পুরোদমে প্রস্তুতি শুরু করেছেন। সকাল সাড়ে ছ’টা থেকে ন’টা, কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে ফের ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত চলে অনুশীলন। বিকেলে তিনটা থেকে ফের অনুশীলন চলে টানা ছ’ঘণ্টা।

Advertisement

ঋতুপর্ণার কথায়, ‘‘গোপী স্যার হাতে ধরে আমাদের নানা ‘টেকনিক’ শিখিয়েছেন। উনি সব সময় বোঝান, শুধু শারীরিক নয় মানসিক শক্তিও একটা ‘ফ্যাক্টর’। গোপী স্যার আমাদের সবাইকে বলেন, কোনও ভাবেই ম্যাচ থেকে ‘ফোকাস’ সরাবে না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘স্যারকে দেখে যতই শান্ত মনে হোক, আসলে তিনি তা নন। প্র্যাকটিসে একটু ভুল হলেই গোপী স্যার খুব বকেন। আর বারবার বলেন প্রাকটিস হোক বা ম্যাচ, আগ্রাসন দরকার। এতেই বিপক্ষ দমে যাবে।’’

২০১৩ সালে দিল্লিতে এক প্রতিযোগিতায় সিন্ধুর মুখোমুখি হন ঋতুপর্ণা। বন্ধুর কাছে সে বার ঋতুপর্ণা হেরেও যান। যদিও প্রতিযোগিতার ফাইনালে দুই শিষ্যের লড়াই নজর কেড়েছিল গোপী স্যারের। হায়দরাবাদে যাওয়ার আগে হলদিয়ায় বাদল ভট্টাচার্য, সোমনাথ কর, লাল্টু গুহদের কাছে প্রশিক্ষণ নিতেন ঋতুপর্ণা। খেলা দেখেই তাঁকে গোপীচাঁদ নিজেই হলদিয়া থেকে হায়দরাবাদ নিয়ে যান।

ঋতুপর্ণা বলেন, ‘‘সিন্ধু নিজের খেলায় একটা বিপ্লব এনেছে। ও দারুণ উন্নতি করেছে।’’ সাইনা নেহওয়াল কোনও পদক না পাওয়ায় কিছুটা হলেও মন খারাপ অ্যাকাডেমির সকলের। ঋতুপর্ণা বলেন, ‘‘সাইনা আমাদের কাছে বিরাট অনুপ্রেরণা। আমি বা সিন্ধু অনুশীলন করলে অনেক সময় দাঁড়িয়ে আমাদের উৎসাহ দেন।’’

আগে হায়দরাবাদে একাই থাকতেন ঋতুপর্ণা। বেশ কিছুদিন হল হায়দরাবাদে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে মেয়ের সঙ্গেই থাকেন মা অনন্যাদেবী। ফোনে অনন্যাদেবী বলেন, ‘‘ঋতুর জন্য খারাপ লাগছে। চোট না পেলে হয়তো ও রিও যেতে পারত। তবে সিন্ধুর সাফল্যে ঋতু খুব খুশি।’’ তাঁর বিশ্বাস, ‘‘চোট সারিয়ে ঋতু ঘুরে দাঁড়াবেই। ওঁকে নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন।’’ সিন্ধুর সাফল্যে যখন আনন্দে ভাসছে ১২৫ কোটির দেশ, তখন দাঁতে দাঁত চেপে ফের লড়াই শুরুর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন হলদিয়ার ঋতুপর্ণা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement