দূষিত ‘স্মগ’-এর আঁধারে থাকা রাজধানীর বাসিন্দাদের মুখে কিছুটা হলেও হাসি ফোটালেন সে রাজ্যের ছেলে। দেশের অন্যপ্রান্তে রঞ্জি ট্রফিতে উজ্জ্বল কীর্তি গড়ে। ঋষভ পন্থ।
ঝাড়খন্ডের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার দিল্লির কুড়ি বছর বয়সি উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান রীতিমতো ঝড় তুলে দিলেন তিরুবনন্তপুরমে সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ মাঠে। ৪৮ বলে সেঞ্চুরি করে। প্রথম শ্রেনির ক্রিকেটে যা কোনও ভারতীয় ব্যাটসম্যানের দ্রুততম। ঋষভের যে ইনিংস ভেঙে দেয় ২৮ বছরের রেকর্ড। ১৯৮৮-তে তামিলনাড়ুর ভিবি চন্দ্রশেখর যে নজির গড়েছিলেন ইরানি কাপে অবশিষ্ট ভারতের বিরুদ্ধে ৫৬ বলে সেঞ্চুরিতে পৌঁছে। তাঁর নজির ভাঙার পর প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তরুণ ব্যাটসম্যানকে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি সতর্কও করেন চন্দ্রশেখর। তিনি বলেছেন, ‘‘ঋষভকে শুভেচ্ছা। ২৮ বছর লাগল রেকর্ডটা ভাঙতে। তাই ওকে প্রতি বার ব্যাট হাতে নেমে রেকর্ড ভাঙার চেষ্টা যাতে না করে সেই পরামর্শই দেব।’’ শেষ পর্যন্ত ঋষভ এ দিন থামেন ৬৭ বলে ১৩৫ রান করে। তাঁর ইনিংস সাজানো ১৩টা ছয় আর আটটা বাউন্ডারি দিয়ে। শুধু ম্যাচ নয়, চলতি মরসুমটাও দুরন্ত খেলছেন ঋষভ। দ্বিতীয় ম্যাচেই মহারাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ৩০৮ রান করেছিলেন। সাত ইনিংসে তাঁর মোট রান ৭৯৯। গড় ১৩৩.১৬। স্ট্রাইক রেট ১১৩.১৭। এর মধ্যেই তিনি পাঁচটি ম্যাচে ৪৪টি ছক্কা হাঁকিয়ে ফেলেছেন। যার মধ্যে ঝাড়খন্ডের বিরুদ্ধেই ম্যাচে মেরেছেন ২১টা ছক্কা। প্রথম শ্রেনির ক্রিকেটে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
ঋষভের দাপটে প্রথম ইনিংসে ঝাড়খন্ড ইষান কিষাণের ২৭৩ রানের জোরে ৪৯৩ রান তুলেও ম্যাচ দখল করতে পারল না। প্রথম ইনিংসে ঋষভ করেছিলেন ১০৬ বলে ১১৭। দিল্লি তুলেছিল ৩৩৪। ফলো অনের পর ফের ব্যাট করতে নেমে দিল্লি দ্বিতীয় ইনিংসে তোলে ৪৮০-৬। ম্যাচ ড্র।
ব্যাট হাতে নামলেই এমন খুনে মেজাজে কেন দেখা যাচ্ছে ঋষভকে? চলতি মরসুমের গোড়ার দিকে ঋষভকে ভারত ‘এ’-র অস্ট্রেলিয়া সফরে দলে নেওয়া হয়নি। সেটাই তাতিয়ে দিয়েছিল তাঁকে। ঠিক করেছিলেন ঘরোয়া মরসুমে দেখিয়ে দেবেন। ট্রিপল সেঞ্চুরির পরই তাই ঋষভ বলেছিলেন, ‘‘অস্ট্রেলিয়া সফরে দলে না নেওয়াটা আমায় আঘাত দিয়েছিল। তারপরই ঠিক করে নিই এত রান করব যাতে কেউ আর আমায় উপেক্ষা না করতে পারে।’’