মেলবোর্নে দুর্ঘটনা ঘটালেন ডেনিস

বর্তমান টেনিস যুগ বলতে যদি রজার ফেডেরার মনে হয়, ফরাসি ওপেন বলতে যদি রাফায়েল নাদাল মনে হয়, তা হলে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন বলতে একটাই নাম ভেসে ওঠে— নোভাক জকোভিচ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:২৪
Share:

উচ্ছ্বসিত ইস্তোমিন। বৃহস্পতিবার মেলবোর্নে।

বর্তমান টেনিস যুগ বলতে যদি রজার ফেডেরার মনে হয়, ফরাসি ওপেন বলতে যদি রাফায়েল নাদাল মনে হয়, তা হলে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন বলতে একটাই নাম ভেসে ওঠে— নোভাক জকোভিচ।

Advertisement

কিছু বছর আগে এই রড লেভার এরিনাতেই নেমে বিশ্বজুড়ে সারা ফেলে দিয়েছিলেন এক তরুণ। জো উইলফ্রেড সঙ্গাকে হারিয়ে নিজের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছিলেন জকোভিচ। আর সেখান থেকেই অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ও জকোভিচের প্রেমের সূচনা। ডাবল হ্যাটট্রিক। একটার পর একটা ঐতিহাসিক জয়। জোকারের হাতে ঝকঝক করছে ট্রফি।

কিন্তু বৃহস্পতিবার নিজের প্রিয় গ্র্যান্ড স্ল্যামে জকোভিচের মুখে তখন যেন অমাবস্যা। যে রড লেভার এরিনা তাঁকে অসংখ্য শিরোপার সামনে পৌঁছে দিয়েছে, সেই প্রিয় মঞ্চই হয়ে উঠল দুঃস্বপ্নের। দ্বিতীয় রাউন্ডেই শেষ হল গত বারের চ্যাম্পিয়নের সফর। বিশ্বর‌্যাঙ্কিংয়ে ১১৭ নম্বরে থাকা উজবেকিস্তানের এক অনামী ওয়াইল্ড কার্ড ডেনিস ইস্তোমিনের বিরুদ্ধে ৭-৬, ৫-৭, ২-৬, ৭-৬, ৬-৪ হেরে ছিটকে গেলেন জকোভিচ।

Advertisement

জোকার ঘাতক
ডেনিস ইস্তোমিন

• বয়স ৩০

• দেশ উজবেকিস্তান

• বিশ্বর‌্যাঙ্কিং ১১৭

• ডান হাতি টেনিস প্লেয়ার

• ২০১২ উইম্বলডন ও ২০১৩ যুক্তরাষ্ট্র ওপেনের চতুর্থ রাউন্ডে উঠেছিলেন।

• ডাবলসে তিনটে খেতাব জিতেছেন।

চার ঘণ্টা আটচল্লিশ মিনিটের রদ্ধশ্বাস লড়াই শেষে সার্বিয়ান টেনিস মহাতারকার মাথা তখন নিচু। জকোভিচ ম্যাচ মানেই একটা লম্বা যুদ্ধ। এ দিনও প্রথম সেট ৪-৬ হেরেও জবাবে পরের দুটো সেট জেতেন জকোভিচ। তখন সবাই ধরে নিয়েছিলেন, বারোটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ী তারকার কাছে জয় মাত্র সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু হল ঠিক উল্টো। চতুর্থ সেট ৭-৬ জেতেন ইস্তোমিন। পাঁচ নম্বরে ২-২ থাকার পরে ব্রেক করেন ইস্তোমিন। সেই পরিস্থিতি থেকে আর বেরিয়ে আসতে পারেননি জোকার।

গোটা ম্যাচে ন’টা ডাবল ফল্ট আর ৭২টা আনফোর্সড এরর করেন সার্বিয়ান টেনিস তারকা। ম্যাচ হেরে হতাশ জকোভিচ বলছেন, ‘‘ডেনিসের প্রশংসা করতে চাই। কঠিন পরিস্থিতিতে ও অনেক ভাল খেলেছে। আগ্রাসী খেলেছে। সার্ভ করেছে ভাল। এর থেকে বেশি আর কিছু করতে পারতাম না। অবশ্যই খারাপ লাগছে। অস্ট্রেলীয় ওপেনের দ্বিতীয় রাউন্ডে হারতে আমি অভ্যস্ত নই। শেষ দশ বছরে ছ’বার জিতেছি। নিজের খেলায় আমি হতাশ। কিন্তু দিনের শেষে ব্যাপারটা মেনে নিতেই হবে।’’

হতাশ জোকার।

চোখে চশমা পরে খেলতে নামা ইস্তোমিন কে? ইন্টারনেট ঘাঁটলে দেখা যাচ্ছে, ২০০১ সালে এক গাড়ি দুর্ঘটনার পর কেরিয়ার প্রায় শেষ হয়ে যাচ্ছিল ইস্তোমিনের। পা ভেঙে যায়। ডাক্তাররা তো বলেই দিয়েছিলেন, আর কোর্টে নামা কঠিন। কিন্তু তাঁর মা বিশ্বাস যুগিয়ে গিয়েছেন। ‘‘নোভাককে পাঁচ সেটে হারালাম এটা বিশ্বাসই করতে পারছি না। নোভাকের জন্য খারাপ লাগছে। আজ আমি খুব ভাল খেলেছি। মা আমার উপর যে বিশ্বাসটা রেখেছিল, তার মর্যাদা রাখতে পেরেছি,’’ বলছেন ইস্তোমিন।

জকোভিচের হারের দিন আরাম করেই তৃতীয় রাউন্ডে উঠলেন রাফায়েল নাদাল। মার্কোস বাকতাদিসের বিরুদ্ধে এক তরফা ম্যাচে ৬-৩, ৬-১, ৬-৩ জিতলেন নাদাল।

মেয়েদের সিঙ্গলসে আবার দাপুটে জয় পেলেন সেরিনা উইলিয়ামস। লুসি সাফারোভাকে দু’সেটে ৬-৩, ৬-৪ উড়িয়ে দিলেন সেরিনা। যদিও তৃতীয় বাছাই আগ্নিয়েস্কা রাদওয়ানস্কা ছিটকে গেলেন। মিরয়ানা লুচিচ বারোনির বিরুদ্ধে ৩-৬, ২-৬ হারলেন তিনি।

ছবি: এএফপি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement