বাবা হওয়ার পর থেকে ক্রিকেটকে ‘প্রায়োরিটি লিস্ট’-এ দু’নম্বরে রাখলেও তাঁর মন পড়ে রাজকোটে।
হরভজন সিংহ।
ক্রিকেটমহলে অনেকে যাঁকে নিরুদ্দেশ বলতে শুরু করে দিয়েছিলেন। সেই হরভজন ভারতীয় স্পিনত্রয়ীর বিরুদ্ধে রাজকোটে ইংরেজ ব্যাটসম্যানদের পাঁচশোর উপর রান তোলা দেখে বললেন, ‘‘চ্যালেঞ্জিং উইকেটে ভাল বল করাটাই তো আসল মজা।’’
স্পিন সহায়ক উইকেট না পেলে রবিচন্দ্রন অশ্বিন তেমন কার্যকর হন না, আকারে-ইঙ্গিতে এই অপ্রিয় সত্যিটা প্রকাশ করে সম্প্রতি বিতর্কে জড়িয়েছিলেন হরভজন। এ দিনও সরাসরি সে রকম কিছু না বললেও, তিনি বলে দেন, ‘‘মজা তো তব হ্যায়, যব উইকেট চ্যালেঞ্জিং হো (উইকেট চ্যালেঞ্জিং হলে তবেই তো মজা আসে)। এ রকম উইকেটে লাইন ঠিক রাখতে হয়। আর বিভিন্ন রকমের কৌশল নিয়ে বল করতে হয়। প্রচণ্ড পরিশ্রম করতে হয় এই উইকেটে। তা হলেই তো তার বোলিং স্কিলের আসল পরিচয় পাওয়া যায়। যেখানে চার-সাড়ে চার দিন ম্যাচ গড়ায়, সে রকম উইকেটই তো টেস্টের পক্ষে ভাল।’’
রাজকোটে অশ্বিন ৪৬ ওভারে ১৬৭ রান দিয়ে দু’উইকেট নিয়েছেন। রবীন্দ্র জাডেজা ৩০ ওভারে ৩-৮৬ ও অমিত মিশ্র সাড়ে ২৩ ওভারে ১-৯৮। অশ্বিনের এই পারফরম্যান্স নিয়ে ভাজ্জি শুধু বলেন, ‘‘একটা দিন খারাপ গেল ওর।’’ ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদেরও প্রশংসা করেন টেস্ট-হ্যাটট্রিক পাওয়া এই অফস্পিনার। নয়াদিল্লিতে এক বাণিজ্যিক প্রচারের অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘‘রুট, স্টোকস, মইনরা প্রত্যেকেই ভাল ব্যাটসম্যান। ওদের দলটা তরুণদের নিয়ে গড়া। এখন পর্যন্ত ওরা ভাল ব্যাট করেছে ঠিকই। তবে ভারতীয় বোলারদের উড়িয়ে দেবেন না। আমার মনে হয় অশ্বিন, জাডেজারা দ্বিতীয় ইনিংসে ভাল বল করবেই। অশ্বিনও অনেক উইকেট পাবে এই সিরিজে।’’
রাজকোটে যে হারছেন না, অ্যালিস্টার কুকরা দ্বিতীয় দিন তা প্রায় সুনিশ্চিত করলেও হরভজন মনে করেন, ভারতের এই সিরিজ অন্তত ৩-০-য় জেতা উচিত।
বাবা হওয়ার পর ক্রিকেট থেকে প্রায় নিরুদ্দেশ হয়ে গেলেও রঞ্জি ট্রফিতে তিনি ক্রিকেটে ফিরছেন বলে নিজেই জানিয়ে দিলেন ‘টার্বানেটর’। ২১ নভেম্বর পঞ্জাবের হয়ে তামিলনাড়ুর বিরুদ্ধে নাগপুরে ক্রিকেটে ফিরবেন তিনি। এই ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘‘এখন আমাকে জিজ্ঞেস করলে বলব, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য আমি এখনই তৈরি নই। কিন্তু ২১ নভেম্বরের পর থেকে আমি যে কোনও চ্যালেঞ্জের জন্য তৈরি।’’
দু’টো বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য ছিলেন তিনি। কিন্তু বাবা হওয়াকে তার চেয়েও ভাল অভিজ্ঞতা বলছেন দেশের জার্সি গায়ে সাতশোর উপর উইকেট পাওয়া এই স্পিনার। বলেন, ‘‘বিশ্বকাপ, টেস্ট সিরিজ জয়— এগুলোর চেয়ে এখন বাবা হওয়াটাই আমার কাছে বড়। আমার মেয়েই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় উপহার।’’