চ্যাম্পিয়ন: এগারো নম্বর ট্রফি নিয়ে আবেগ সামলানোর চেষ্টা রাফায়েল নাদালের। রবিবার প্যারিসে। ছবি: রয়টার্স।
দোমিনিক থিমের শটটা বাইরে পড়তেই দু’হাত উপরে তুলে পরিচিত ভঙ্গিতে উৎসবে মাতলেন রাফায়েল নাদাল। আলাদা উচ্ছ্বাস নেই, অতিরিক্ত কোনও উন্মাদনা নেই। যেন এটাই খুব স্বাভাবিক।
কিন্তু নাদালের কথায় বোঝা গেল, তিনি ভিতরে ভিতরে কতটা চাপে ছিলেন। প্যারিসে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে তাই হয়তো বললেন, ‘‘স্বপ্নেও ভাবা যায় না। রলঁ গারোসে ১১ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা অসম্ভব ব্যাপার।’’ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে নাদাল আরও বলেন, ‘‘দারুণ খুশি খেতাব জিতে। বিশেষ করে তৃতীয় সেটে পেশিতে টান ধরার পরেও সেটা সামলে যে ভাবে জয়টা এসেছে সেটা আরও আনন্দের।’’
নাদালের প্রতিদ্বন্দ্বী দোমিনিক থিম বলেন, ‘‘আমার কাছে ফাইনালে নাদালের বিরুদ্ধে খেলাটা স্বপ্ন ছাড়া আর কিছু নয়। নাদাল যে কৃতিত্ব দেখালো এখানে, সেটা খেলাধুলোর ক্ষেত্রে বিরাট ব্যাপার।’’ নাদালই ফেভারিট ছিলেন খেতাব জয়ের দৌড়ে।
বিশ্বের এক নম্বর হিসেবে এই নিয়ে তৃতীয় বার তিনি ফরাসি ওপেনে চ্যাম্পিয়ন হলেন। এ ছা়ড়া দু’নম্বর হিসেবে পাঁচ বার, বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে চার নম্বর হিসেবে নেমে দু’বার এবং বিশ্ব ক্রমপর্যায়ে পাঁচ নম্বর হিসেবে এক বার
জিতেছেন (২০০৫)।
৩২ বছর বয়সি স্প্যানিশ তারকা ১৭ নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতলেন। রজার ফেডেরারের (২০) পরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের রেকর্ড আরও মজবুত করলেন ক্লে-কোর্টের সম্রাট। তবে রবিবার নাদালের বিরুদ্ধে থিমকে কেউ কেউ এগিয়ে রেখেছিলেন। থিম নিজেও হুঙ্কার দিয়ে রেখেছিলেন, ‘‘নাদালকে আগেও হারিয়েছি। ওকে ফরাসি ওপেনের ফাইনালে হারানোর জন্য আলাদা পরিকল্পনা ছকে রেখেছি।’’
কিন্তু সেটা কাজে লাগাতে পারলেন কোথায়! উল্টে রবিবার তারকা ভরা গ্যালারি নাদাল-জ্বরে ভাসল। নাদালের প্রাক্তন কোচ কাকা টোনি তো ছিলেনই, স্প্যানিশ তারকার এই গর্বের মুহূর্তের সাক্ষী হতে উপস্থিত ছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের সদ্য প্রাক্তন কোচ জ়িনেদিন জ়িদানও।
মার্গারেট কোর্টের পরে দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে কোনও গ্র্যান্ড স্ল্যাম ১১ বার জেতার রেকর্ড করলেন নাদাল। মার্গারেট ১১ বার সিঙ্গলস জিতেছেন অস্ট্রেলীয় ওপেনে। পুরস্কার নেওয়ার পরে নাদালকে এ দিন আবেগতাড়িত হয়ে পড়তে দেখা যায়। তাঁর এগারো বার খেতাব জয়ের সম্মানে স্পেনের জাতীয় সঙ্গীত বাজার সময় চোখের জল সামলাতে পারেননি তিনি।
ম্যাচ শেষ হওয়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ফিলিপ শতিয়ে কোর্ট ভাঙার কাজ শুরু হয়ে যায়। সংস্কার চলছে। সেই কাজের অংশ হিসেবে দু’বছরের মধ্যে নতুন ছাদ তৈরি হয়ে হয়তো কোর্টের ভোলবদল হবে। কিন্তু তাতে ফরাসি ওপেনে রাফায়েল নাদালের দাপট কি কমবে? বিশেষজ্ঞরা তেমন সম্ভাবনা দেখছেন না।