উচ্ছ্বাস: উইম্বলডনে শুক্রবার নাদাল, ভিনাস। ছবি: রয়টার্স
উইম্বলডনে এখনও পর্যন্ত তাঁর সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জে সসম্মানে উত্তীর্ণ হলেন রাফায়েল নাদাল। বিগ সার্ভার কারেন কাশানভকে ৬-১, ৬-৪, ৭-৬ (৩) হারিয়ে শেষ ষোলোয় পৌঁছে গেলেন নাদাল। ৬ ফিট ৬ ইঞ্চির রাশিয়ান খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে ৪১টি উইনার মারেন রাফা। যা প্রমাণ করছে, অনেকটাই পুরনো দিনের ফর্ম নিয়ে এ বারে তিনি উইম্বলডনে নেমেছেন।
তবে তৃতীয় সেটে গিয়ে কিছুটা সমস্যায় পড়েছিলেন নাদাল। ব্রেক পয়েন্ট বাঁচিয়ে সেট বাঁচান। তার পর টাইব্রেকে দুর্দান্ত সার্ভে ম্যাচ জিতে নেন। ‘‘কিছু সময় ধরে আমি দারুণ খেলছিলাম। প্রথম সেটের পুরোটা, তার পর দ্বিতীয় সেটের মাঝামাঝি পর্যন্ত। কিন্তু তার পর থেকেই পরিস্থিতি কঠিন হয়ে উঠেছিল,’’ ম্যাচ জেতার পর বলেছেন নাদাল।
রুশ প্রতিভা কাশানভ মাঝেমধ্যে তাঁর প্র্যাকটিস পার্টনার হয়েছেন। প্রতিদ্বন্দ্বীর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথাও বলেছেন নাদাল। কিন্তু শুক্রবারের ম্যাচে প্রথম চল্লিশ মিনিটের ঝড়ে তিনি কাশানভের যাবতীয় সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন। লন্ডনের বেশ গরমের মধ্যেও কোর্টের মধ্যে দারুণ নড়াচড়া করেছেন রাফা, যা তাঁকে টুর্নামেন্টে অনেক দূর যাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী করে তুলবে। প্রথম গেমটা তিনি জেতেন মাত্র এক মিনিটে। দু’টো ‘এস’ মারেন, যার মধ্যে একটি দ্বিতীয় সার্ভে। দ্বিতীয় গেমে এমনই জোরাল একটি ফোরহ্যান্ড মারেন তিনি, যা দেখে সেন্টার কোর্টের দর্শকেরা পর্যন্ত স্তব্ধ হয়ে যান। আর সেই দর্শকদের মধ্যে ছিলেন প্রাক্তন ফুটবল তারকা ডেভিড বেকহ্যাম এবং স্প্যানিশ গল্ফার সের্জিও গার্সিয়া। দু’জনেই নাদালের ম্যাচ দেখতে হাজির ছিলেন রয়্যাল বক্সে। ‘‘আমি কয়েকটা ভাল শট খেলেছি। ফোরহ্যান্ড, ব্যাকহ্যান্ড সব ধরনের। সব মিলিয়ে আমি নিজের খেলায় খুশি,’’ বলেন রাফা।
আরও পড়ুন: মেসির বিয়ের বেঁচে যাওয়া খাওয়ার গেল চ্যারিটিতে
উইম্বলডনে পাঁচ বার ফাইনাল খেলেছেন নাদাল। দু’বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। কিন্তু গত কয়েক বছরে অল ইংল্যান্ড ক্লাবের কোর্ট মোটেও তাঁর উপরে সদয় ছিল না। নোভাক জকোভিচের কাছে ২০১১ ফাইনালে হারের পর থেকে টানা চার বার তিনি কোয়ার্টার ফাইনালে বিদায় নিয়েছেন। এর পর তাঁর প্রতিপক্ষ জাইল মুলার, যিনি ঘাসের কোর্টে বিপজ্জনক বলে সুনাম রয়েছে। নাদালও সেটা জানেন। ‘‘ঘাসের কোর্ট ওর প্রিয়। আমাকে আক্রমণাত্মক টেনিস খেলতে হবে,’’ বলেছেন তিনি। এ দিনের অন্যতম সেরা অঘটন অবশ্য ঘটালেন রবার্তো বাতিস্তা আগুত। হারিয়ে দিলেন কে নিশিকোরি-কে। গত বারের চ্যাম্পিয়ন অ্যান্ডি মারেও উঠলেন শেষ ষোলোয়। ফাবিও ফোগিনিনি-কে চার সেটের লড়াইয়ে ৬-২, ৪-৬, ৬-১, ৭-৫ হারলেন মারে।
কন্তা, ভিনাস এগোচ্ছেন: সেরিনা উইলিয়ামসের অনুপস্থিতিতে দিদি ভিনাস কি ফেভারিট হয়ে উঠলেন? এই প্রশ্ন উঠে পড়েছে মেয়েদের বিভাগে। কোয়ার্টার ফাইনাল থকে আর এক ধাপ দূরে ভিনাস। নাওমি ওসাকার আক্রমণাত্মক টেনিসকে সামলে তিনি এ দিন জিতলেন এক ঘণ্টা পঁচিশ মিনিটে। ওসাকা কিন্তু যেমন-তেমন প্রতিপক্ষ নন। তাঁকে ডাকা হয় ‘বুলেট ট্রেন’ নামে। উনিশ বছর বয়সে তাঁকে অন্যতম সেরা প্রতিভা বলা হচ্ছে। অন্য দিকে, কন্তা চতুর্থ রাউন্ডে উঠলেন সহজেই। ৬-৪, ৬-১ হারালেন মারিয়া সাকারিকে। তাঁকে অন্যতম ফেভারিট ধরা হচ্ছে জেনেও সতর্ক থাকতে চান কন্তা।
শুক্রবারের ফল: পুরুষদের সিঙ্গলস (তৃতীয় রাউন্ড): রাফায়েল নাদাল ৬-১, ৬-৪, ৭-৬ (৭-৩) ক্যারেন কাশানভ। কেই নিশিকোরি ৪-৬, ৬-৭ (৩-৭), ৬-৩, ৩-৬ রবার্তো বাতিস্তা আগুত। মারিন সিলিচ ৬-৪, ৭-৬, ৬-৪। জাইলস মুলার ৭-৬, ৭-৫, ৬-৪ আলজাজ বেদেনে। অ্যান্ডি মারে ৬-২, ৪-৬, ৬-১,৭-৫ ফাবিও ফোগনিনি। মেয়েদের সিঙ্গলস (তৃতীয় রাউন্ড): ভিনাস উইলিয়ামস ৭-৬ (৭-৩), ৬-৪ নাওমি ওসাকা। ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কা ৪-৬, ৬-১, ৬-৪ হিদার ওয়াটসন। ইয়োহানা কন্টা ৬-৪, ৬-১ মারিয়া সাক্কারি। সিমোনা হালেপ ৬-৪, ৭-৬ (৯-৭) সুই পেং।