দুরন্ত: ফরাসি ওপেনে ফাইনালে ওঠার পরে রাফায়েল নাদাল। শুক্রবার প্যারিসে।
ফরাসি ওপেন ফাইনালের আগে বিধ্বংসী মেজাজে ক্লে-কোর্টের সম্রাট রাফায়েল নাদাল। শুক্রবার রলঁ গারোসে খুয়ান মার্টিন দেল পোত্রোকো প্রায় উড়িয়ে দিলেন তিনি। জিতলেন ৬-৪, ৬-১, ৬-২। দশ বারের ফরাসি ওপেন খেতাবজয়ী প্যারিসের ১১ নম্বর ফাইনালে উঠতে নিলেন দু’ঘণ্টা ১৪ মিনিট। রবিবার ফাইনালে তাঁর মুখোমুখি হবেন বিশ্বের আট নম্বর অস্ট্রিয়ার ডমিনিক থিম। যিনি এ দিন নাদালের চেয়ে তিন মিনিট বেশি সময়ে হারান ইতালির মার্কো চেকিনাতোকে। ফল ৭-৫, ৭-৬ (১২-১০), ৬-১।
ফাইনালের দুই প্রতিদ্বন্দ্বীই শেষ চারের লড়াইয়ে আগ্রাসী মেজাজে থাকলেও নাদাল এ দিন ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। থিমকে প্রথম সেটে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পরে দ্বিতীয় সেট টাই ব্রেকারে জিততে হয়। কিন্তু নাদালের পারফরম্যান্স এ দিন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছিল বারুদে ঠাসা।
বিশ্বের ছ’নম্বর দেল পোত্রোকে প্রায় সারা ম্যাচেই চাপে রেখেছিলেন স্প্যানিশ কিংবদন্তি। ম্যাচের পরে তিনি বলেন, ‘‘প্রথম সেটটা সহজ ছিল না। খুয়ানের সামনে প্রচুর সুযোগ এসেছিল। তবে ওর ভাগ্য আজ সে ভাবে সঙ্গ দেয়নি ওকে।’’
প্রত্যয়ী: নাদালকে ফাইনালে চ্যালেঞ্জ জানাবেন থিম।
প্যারিসে সেমিফাইনালের গণ্ডী পেরিয়ে যাওয়ার পরে তাঁকে কোনও দিন রোখা যায়নি। শুক্রবার দ্বিতীয় সেটে ৫-০-য় এগিয়ে যান নাদাল। কিন্তু কোনও রকমে একটি গেম জিতে মান বাঁচান আর্জেন্তিনার অভিজ্ঞ তারকা। শেষ ১৭টির মধ্যে ১৪টি গেমেই জেতেন নাদাল। দেল পোত্রো সাতবার ব্রেক পয়েন্ট পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেননি। রলঁ গারোসে ১১ বার ফাইনালে উঠে রজার ফেডেরারকে ছুঁলেন নাদাল। এই মাইলফলক ছোঁয়া নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘প্রথমবার যখন এখানে ফাইনালে উঠেছিলাম, তখন ভাবিইনি এখানে আর একটা ফাইনালে উঠতে পারব। আসলে পরিশ্রম আর টেনিসটা নেশা হয়ে গিয়েছে বলেই এই জায়গায় পৌঁছতে পেরেছি।’’
বিশ্বসেরা টেনিস তারকা বলেন, ‘‘ফাইনালে এই ছন্দটা ধরে রাখতে চাই। ফাইনালে থিমের বিরুদ্ধে কোর্টে নামাটা একটা ভাল অভিজ্ঞতা হবে আশা করছি।’’ ক্লে কোর্টে একমাত্র থিমই নাদালকে গত দুই মরসুমে হারাতে পেরেছেন। এ বছর মাদ্রিদে ও গত বছর রোমে। থিমকে নিয়ে নাদাল বলেন, ‘‘ও দুর্দান্ত খেলোয়াড়। প্রবল শক্তি দিয়ে খেলে। ওকে হারাতে গেলে আমাকে সেরা পারফরম্যান্স দেখাতে হবে। তবে আমার বিশ্বাস ফাইনালের জন্য আমি তৈরি।’’
শনিবার মেয়েদের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছেন বিশ্বের এক নম্বর সিমোনা হালেপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন তারকা স্লোয়ান স্টিফেন্স। এর আগে তিন-তিনটে গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে উঠেও হেরে যেতে হয়েছে হালেপকে। শনিবার ফের ফাইনাল খেলতে নেমে সেই দুঃসহ ব্যর্থতার স্মৃতি তাঁকে ঘিরে ধরতে পারে। তিনি নিজে অবশ্য বলছেন, ‘‘মাথা থেকে এই ব্যাপারটা মুছেই ফেলার চেষ্টা করছি। এমনকী শনিবারের ফাইনাল নিয়েও বেশি ভাবছি না। এই নিয়ে বাড়তি চাপ নিয়ে লাভ নেই।’’
বিশ্বের এক নম্বর এই রোমানিয়ান তারকা দু’বার ফরাসি ওপেনের ফাইনালে হেরেছেন মারিয়া শারাপোভা ও ইয়েলেনা অস্তাপেঙ্কোর কাছে। এ বছর জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালেও হারেন ক্যারোলিন ওজনিয়াকির কাছে। তবে এ বার যে হেতু তিনি স্টিফেন্সের সঙ্গে অতীতের মুখোমুখিতে ৫-২ এগিয়ে, তাই আর সেই অঘটন ঘটবে বলে মনে করেন না। হালেপ বলেন, ‘‘এ বার আমি অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। কারণ, স্লোয়ানের চেয়ে অভিজ্ঞতায় আমি এগিয়ে। তবে টেনিসে কেউ বলতে পারে না, কখন কী হবে। লড়াইটা অবশ্য কঠিন হবে। গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনাল বলে কথা।’’ স্টিফেন্স যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। ফের এক গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে নামার আগে বলছেন, ‘‘সিমোনা যে এখন বিশ্বের এক নম্বর, তার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। ওর বিরুদ্ধে কোর্টে নামার জন্য মুখিয়ে রয়েছি।’’
ছবি: এএফপি।