দ্বৈরথ: বার্সেলোনা ওপেনে ফাইনালের পরে ট্রফি নিয়ে রানার্স চিচিপাস এবং চ্যাম্পিয়ন নাদাল। রবিবার। রয়টার্স
প্রত্যাশিত ভাবেই বার্সেলোনা ওপেনে জিতলেন রাফায়েল নাদাল। এই নিয়ে ১২ বার তিনি এখানে চ্যাম্পিয়ন হয়ে নজিরও গড়লেন। রবিবার ফাইনালে স্পেনীয় মহাতারকা ৬-৪, ৬-৭(৬-৮) ও ৭-৫ সেটে হারান গ্রিসের স্টেফানোস চিচিপাসকে। এমনিতেও টেনিস বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, বার্সেলোনায় রেকর্ড বারো নম্বর ট্রফি জয়ের দিকেই এগোচ্ছেন নাদাল। তাঁদের ভবিষ্যদ্বাণীই মিলে গেল। যদিও ফাইনাল মোটেই একপেশে হয়নি। ক্লে কোর্টের সম্রাট রাফা প্রথম সেট সহজে জিতলেও দ্বিতীয় সেটে দারুণ ভাবে ঘুরে দাঁড়ান চিচিপাস। এবং তৃতীয় সেট ও ম্যাচ হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পরে
জেতেন নাদাল।
মন্টে কার্লোতে হেরে বিদায় নেওয়ার পরে বার্সেলোনায় দারুণ কিছুই করতে চেয়েছিলেন নাদাল। সেমিফাইনালে স্পেন জাতীয় দলে তাঁর সতীর্থ পাবলো কারোনা বুস্তা তো কার্যত দাঁড়াতেই পারেননি। রাফা জেতেন ৬-৩, ৬-২ সেটে। ফাইনালে প্রতিপক্ষ চিচিপাসকে নিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘‘ওকে এ বার হারানো সত্যিই কঠিন। আমার বিরুদ্ধে নামবে মন্টে কার্লো আর এখানে এখন পর্যন্ত একটা সেটও না হারিয়ে। বুঝতেই পারছেন, কাজটা কতটা কঠিন।’’ ঘটনা হচ্ছে, বিশ্বের তিন নম্বর তারকার কাজটা সত্যিই কঠিন হয়ে উঠেছিল! রীতিমতো কাঠখড় পুড়িয়ে এ দিন নাদালকে জিততে হয়।
এ বার বার্সেলোনায় অবশ্য নাদাল ছন্দেই ছিলেন। পাবলো কারোনা বুস্তার আগে তিনি ক্যামেরন নোরিকে কার্যত উড়িয়ে দেন। যদিও বিশ্বের তিন নম্বর তারকা সেই ম্যাচে নিজের খেলায় দারুণ কিছু খুশি ছিলেন না। বলেছিলেন, দ্বিতীয় সেটে তিনি এলোমেলো টেনিস খেলেছেন। সেমিফাইনালে তার পুনরাবৃত্তি চাননি। তেমন কিছু হয়ওনি। নাদালের সার্ভিস আর অনবদ্য সব রিটার্নের সামনে বুস্তাকে রীতিমতো অসহায় লেগেছে। এই প্রতিযোগিতা নিয়ে তিনি এতটাই উদ্বিগ্ন ছিলেন যে নোরিকে হারিয়ে উঠেই কোচ কার্লোস মোয়াকে নিয়ে অনুশীলন শুরু করে দিয়েছিলেন। সম্ভবত মন্টে কার্লোতে আন্দ্রে রুবলভের কাছে হারের স্মৃতি তাঁকে চিন্তায় রেখেছিল। বার্সেলোনা থেকে তাই কোনও ভাবেই খালি হাতে ফিরতে চাননি।
নিজের দেশের শহরে খেলা, তাও ক্লে কোর্টে, নাদাল বলেছিলেন, ‘‘আমার গ্রাউন্ড স্ট্রোক নিয়ে একটু সমস্যা হচ্ছিল। তাই কোচের সঙ্গে অনুশীলন কোর্টে নেমে পড়েছিলাম ম্যাচ শেষ করেই। আসলে বার্সায় খুব ভাল কিছু কারাটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। অন্য কিছু মাথায় রাখছি না।’’ এ দিকে, চিচিপাস এখানে ফাইনালে ওঠেন ইটালির ইয়ানিক সিনারকে হারিয়ে। ফাইনাল নিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘‘ক্লে কোর্টে রাফার সঙ্গে পেরে ওঠা কঠিন। সেটা ভাল করেই জানি। তবু শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করার চেষ্টা করব।’’ অবশ্য গ্রিসের এই তারকা নিজেও ইদানীং ক্লে কোর্টে বেশ ভাল খেলছেন। মন্টে কার্লোতে তিনি চ্যাম্পিয়ন হয়ে সবাইকে চমকে দেন। নাদালের বিরুদ্ধে নামার আগে টানা ন’টি ম্যাচ জিতেছিলেন। এবং সব চেয়ে বড় ব্যাপার, এ বারের অস্ট্রেলীয় ওপেনে তাঁর কাছে হেরেই বিদায় নেন রাফা। তাও সেই ম্যাচে চিচিপাস দু’সেট পিছিয়ে ছিলেন।