বাবা-মায়ের সঙ্গে গায়ত্রী (মাঝে)। ফাইল ছবি
২১ বছর আগে অল ইংল্যান্ড ট্রফি হাতে তুলে নিয়েছিলেন তাঁর বাবা। সেই সময় তাঁর জন্মই হয়নি। আরও দু’বছর পর তিনি জন্ম নেন। বাবা এবং মাকে দেখে স্বাভাবিক ভাবেই বেছে নিয়েছেন ব্যাডমিন্টন খেলাকে। পুল্লেলা গোপীচাঁদের মেয়ে অবশেষে খেলে ফেললেন অল ইংল্যান্ড ওপেনেও।
সিঙ্গলসে নয়, ডাবলস এবং মিক্সড ডাবলসে অংশ নিয়েছেন গোপীচাঁদের মেয়ে গায়ত্রী। ত্রিসা জলির সঙ্গে জুটি বেঁধে প্রথম রাউন্ডে হারিয়ে দিয়েছেন সদ্য ইন্ডিয়া ওপেন বিজয়ী তাইল্যান্ডের জুটি বেনিয়াপা এবং নুনতাকার্ন আইমসার্ডকে। তবে ম্যাচ এক সময় তাঁদের হাত থেকে বেরিয়েই যেতে চলেছিল। প্রথম গেমে ১৭-২১ পয়েন্টে হেরে যাওয়ার পর দ্বিতীয় গেমেও ১২-১৮ পয়েন্টে পিছিয়ে ছিলেন তাঁরা। সেখান থেকে গেম পকেটে পুরে নেন। তৃতীয় গেমেও জিতে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে যান এই জুটি।
নেটের সামনের দিকে খেলতে বেশি স্বচ্ছন্দ ১৯ বছরের গায়ত্রী। পাশাপাশি, সতীর্থের থেকে চাপ কেড়ে নিতেও পারেন। এই কারণেই ম্যাচ জেতার পর গায়ত্রীর প্রশংসায় ভেসেছেন ত্রিসা। তবে আক্রমণাত্মক খেলাই বেশি পছন্দ গায়ত্রীর।
বাবা গোপীচাঁদ প্রথমে দেশের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তার পরে কোচ। তাঁর হাত ধরেই উঠে এসেছেন সাইনা নেহওয়াল, পিভি সিন্ধুর মতো খেলোয়াড়রা। নিজের মেয়েকেও ব্যাডমিন্টন শিখিয়েছেন। কিন্তু আলাদা করে কোনও দিনই তাঁকে বেশি গুরুত্ব দেননি। বরং সাইনা না সিন্ধু, কে গোপীচাঁদের বেশি পছন্দের, সেই নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। রাগে সাইনা এক সময় গোপীর অ্যাকাডেমিও ছেড়ে চলে যান। সম্প্রতি সিন্ধুও আলাদা করে কোরীয় কোচের কাছে অনুশীলন করছেন। ফলে জীবনের অনেকটা সময়ই গায়ত্রীর দেখাশোনা করেছেন তাঁর মা তথা প্রাক্তন ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় পিভিভি লক্ষ্মী।
গায়ত্রীর উঠে আসা সে দিক থেকে কার্যত নিঃশব্দেই। প্রথমে বিভিন্ন বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতায় খেলেছেন। এর পর ধীরে ধীরে জাতীয় দলে সুযোগ পান। ২০১৮-র এশিয়ান গেমসে ভারতীয় দলে ছিলেন। দক্ষিণ এশীয় গেমসে ভারতের মহিলা দল সোনা জেতে। সেই দলের সদস্য ছিলেন গায়ত্রী। সম্প্রতি ওড়িশা ওপেন জিতেছেন এই ত্রিসার সঙ্গেই। এ ছাড়া, গত বছর ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল চ্যালেঞ্জেও জিতেছেন। তবে সিঙ্গলসের থেকে বেশি সাফল্য ডাবলসেই। সিঙ্গলস যে একেবারে খেলেন না তা নয়, কিন্তু ডাবলসে তিনি অনেক বেশি স্বচ্ছন্দ। তার প্রমাণ রয়েছে র্যাঙ্কিংয়েই। সিঙ্গলসে যেখানে এখন তাঁর র্যাঙ্কিং ২৮১, সেখানে ডাবলসে ৪৬। তাই এই মুহূর্তে ডাবলস খেলাতেই বেশি মন দিয়েছেন গায়ত্রী।
বাবা ছিলেন দেশের এক নম্বর ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়। মেয়ে কি সেই সাফল্য দেখাতে পারবেন? সময়ই বলবে।