সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে সুপার কাপ বয়কট করেছিল আই লিগের সাতটি ক্লাব। এ বার শাস্তি থেকে বাঁচতে ফেডারেশন কর্তাদেরই দ্বারস্থ হলেন ক্লাব জোটের প্রতিনিধিরা! এআইএফএফ সূত্রের খবর, সুপার কাপ না খেলার জন্য কয়েকটি ক্লাবের কর্তারা ইতিমধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমাও নাকি চেয়েছেন।
সুপার কাপকে কেন্দ্র করে নজিরবিহীন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। ফেডারেশন সভাপতি আলোচনায় না বসলে এই প্রতিযোগিতায় খেলবে না বলে হুমকি দেয় আই লিগের নয়টি ক্লাব। যোগ্যতা অর্জন পর্বের ম্যাচে দলও নামায়নি মিনার্ভা এফসি, নেরোকা এফসি ও গোকুলম এফসি। পরে অবশ্য জোট ভেঙে বেরিয়ে যায় দু’টি ক্লাব (চেন্নাই সিটি এফসি ও রিয়াল কাশ্মীর এফসি)। ফেডারেশন সভাপতি আলোচনায় বসার আশ্বাস দেওয়ার পরে ‘বিদ্রোহী’ ক্লাব জোট দাবি করে নতুন ভাবে প্রতিযোগিতা শুরু করতে হবে। যা খারিজ করে দেন ভারতের ফুটবল নিয়ামক সংস্থার কর্তারা। তাঁরা জানিয়ে দেন, না খেললে কড়া শাস্তির মুখে পড়বে সাতটি ক্লাব। তাতেও সিদ্ধান্ত বদলাননি জোটের কর্তারা। এখানেই শেষ নয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভাজন স্পষ্ট হয়ে ওঠে ইস্টবেঙ্গল অন্দরমহলেও।
লাল-হলুদ কর্তারা সুপার কাপে খেলার পক্ষে ছিলেন। কিন্তু বিনিয়োগকারী সংস্থার কর্তারা রাজি হননি। অথচ এখন শাস্তি এড়াতে ক্লাবকর্তারাই ভরসা তাঁদের! ইস্টবেঙ্গলের অন্দরমহলের খবর, বেঙ্গালুরুর অফিস থেকে ক্লাবকর্তাদের অনুরোধ করা হচ্ছে, ফেডারেশন যাতে শাস্তি না দেয় তার উদ্যোগ নিতে। তাই বিনিয়োগকারী সংস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ থাকলেও শতবর্ষের প্রাক্কালে ক্লাবের সম্মান রক্ষা করতে আসরে নেমেছেন ক্লাবকর্তারা। শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সামনে তাঁদের বক্তব্য শোনার জন্য ইতিমধ্যেই অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন। জানা গিয়েছে, ফেডারেশন তা মেনেও নিয়েছেন। আজ, শনিবার শুনানি হবে মোহনবাগানের। ২৮ এপ্রিল লাল-হলুদের এক প্রতিনিধি দিল্লি যাচ্ছেন বক্তব্য পেশ করতে।
তবে বিনিয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে দূরত্ব বেড়েই চলেছে লাল-হলুদ কর্তাদের। কারণ, পরের মরসুমের দল কী হবে তা নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহত। এখনও পর্যন্ত নতুন কোনও ফুটবলারের সঙ্গে চুক্তি করতে পারেননি তাঁরা। গত মরসুমের দলের কয়েক জনের সঙ্গেই শুধু চুক্তি পুনর্নবিকরণ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়। পরের মরসুমেও আইএসএলে না খেলার যে ইঙ্গিত দিয়েছেন বিনিয়োগকারী সংস্থার কর্তারা, তা নিয়েও অসন্তোষ বাড়ছে।
ফেডারেশন সূত্রে খবর, শাস্তির আশঙ্কায় বিদ্রোহী জোটের মধ্যে ভাঙন শুরু হয়েছে। এক দিকে কর্তারা একে অপরকে কাঠগড়ায় তুলছেন। অন্য দিকে শাস্তি এড়াতে ফেডারেশনের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। অনুরোধ করছেন শাস্তি না দেওয়ার। যদিও সেই সম্ভাবনা ক্ষীণ।