ছবি: সংগৃহীত।
একটিও শট না-হলেও বিজয়ী উইম্বলডন! অল ইংল্যান্ড ক্লাবের একটি মানবিক সিদ্ধান্ত হৃদয় জিতে নিচ্ছে ক্রীড়াপ্রেমীদের। এ সপ্তাহের শেষেই হওয়ার কথা ছিল উইম্বলডন ফাইনাল। কিন্তু করোনাভাইরাস অতিমারির কারণে প্রতিযোগিতা বাতিল হয়ে গেলেও উইম্বলডন কর্তৃপক্ষ পুরস্কার মূল্য বিতরণ করছেন খেলোয়াড়দের মধ্যে।
এবং, সেটা সম্ভব হচ্ছে কারণ বিমা সংস্থার সঙ্গে এ ভাবেই তাঁরা চুক্তি করে রেখেছিলেন যে, অতিমারির কারণে প্রতিযোগিতা পণ্ড হলে আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে। কোনও রকম গড়িমসি না করে সেই প্রাপ্য অর্থ দিয়ে দিচ্ছে বিমা সংস্থা। এবং, নিজেদের কোষাগারে না ভরে, সেই টাকা র্যাঙ্কিং অনুযায়ী খেলোয়াড়দের মধ্যে ভাগ করে দিচ্ছে উইম্বলডন কর্তৃপক্ষ। সব মিলিয়ে ১০ মিলিয়ন পাউন্ড (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৯৫ কোটি টাকা) ৬২০ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে। করোনার প্রকোপে বাতিল না হলে এই ৬২০ জন খেলোয়াড়ই অংশ নিতেন টেনিসের বিখ্যাত অল ইংল্যান্ড ক্লাবের সবুজ ঘাসের প্রতিযোগিতায়। অল ইংল্যান্ড ক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খেলা না হলেও র্যাঙ্কিংয়ের উপরে নির্ভর করে যোগ্যতামান পর্বে অংশ নিতে পারতেন এমন ২২৪ জন খেলোয়াড়ের প্রত্যেককে দেওয়া হবে ১২,৫০০ পাউন্ড (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১২ লক্ষ) করে। সিঙ্গলসে মূল পর্বে সরাসরি খেলতে পারতেন এমন ২৫৬ জন খেলোয়াড়ের প্রত্যেককে দেওয়া হবে ২৫,০০০ পাউন্ড (ভারতীয় মুদ্রায় ২৩ লক্ষের বেশি) করে। ডাবলসে তেমনই প্রত্যেকে পাবেন ৬,২৫০ পাউন্ড (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৬ লক্ষ) করে। হুইলচেয়ার ইভেন্টে ৬,০০০ পাউন্ড (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় পাঁচ লক্ষের বেশি) করে, কোয়াড হইলচেয়ারে প্রত্যেকের জন্য বরাদ্দ হচ্ছে ৫,০০০ পাউন্ড (ভারতীয় মুদ্রায় সাড়ে চার লক্ষের বেশি) করে। একটিও ম্যাচ না-হয়েও এমন অভিনব পুরস্কার বিতরণকে কুর্নিশ জানিয়েছে টেনিস দুনিয়া।
‘‘দুর্দান্ত কাজ। বরাবরই আমাদের খেলায় নেতৃত্ব দিয়ে এসেছে উইম্বলডন। কত যে আলাদা, আবারও দেখিয়ে দিল,’’ প্রাক্তন এক নম্বর কিম ক্লিস্টার্স টুইট করেছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এই প্রথম বার উইম্বলডন বাতিল হল। কিন্তু খেলা না হলেও এ ভাবে পুরস্কার অর্থ বিতরণ করা নজিরবিহীন। ‘‘আমরা জানি, অনিশ্চয়তার এই কঠিন সময়টা খেলোয়াড়দের মধ্যে কতটা উদ্বেগ তৈরি করেছে। অনেকে আর্থিক সমস্যার মধ্যেও পড়েছেন। তাঁরা অনেকেই হয়তো উইম্বলডনের এই সময়টার দিকে তাকিয়ে ছিলেন, র্যাঙ্কিং অনুযায়ী পুরস্কার অর্থ থেকে আয় করার জন্য,’’ বলেছেন অল ইংল্যান্ড ক্লাবের চিফ এগজিকিউটিভ রিচার্ড লুইস। যোগ করছেন, ‘‘বিমা সংস্থার সঙ্গে আমাদের চুক্তির ফলে খেলোয়াড়দের হাতে এই অর্থ তুলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। খেলোয়াড়েরা পরিশ্রম করে র্যাঙ্কিং তৈরি করেছেন, তাকে সম্মান জানানো যে সম্ভব হচ্ছে, সেটা দেখেই আমরা খুশি।’’
বলা যেতেই পারে গেম, সেট, ম্যাচ— উইম্বলডন!