সংশয়: অলিম্পিক্স নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যেও রয়েছে মতানৈক্য। ফাইল চিত্র
নতুন করে করোনা সংক্রমণ আবারও বাড়িয়ে দিয়েছে টোকিয়ো অলিম্পিক্স আয়োজক কমিটির সদস্যদের রক্তচাপ। তবে নতুন বছরের প্রথম দিনেই তাঁদের আশ্বস্ত করলেন প্রধানমন্ত্রী। শুক্রবার ইয়োশিহিদে সুগা জানিয়ে দিয়েছেন, আগের ঘোষণা অনুযায়ী ২৩ জুলাই থেকেই টোকিয়োতে বসবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়ানুষ্ঠান।
সাম্প্রতিক সময়ে নতুন করে কোভিড সংক্রমণের খবর প্রকাশ করেছে সরকার। তাদের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় এক হাজার মানুষের শরীরে ধরা পড়েছে কোভিড। মনে করা হচ্ছে, গ্রেট ব্রিটেনে কোভিডের যে নতুন স্ট্রেন ধরা পড়েছে, সেই ভাইরাসেই সংক্রমিত হয়েছেন এরা। যা নিয়ে আগেই সতর্কবার্তা জারি করে দিয়েছেন টোকিয়োর গভর্নর ইউরিকো কোইকে। তিনি জানান, দ্রুত সাবধান না হলে সংক্রমিতের সংখ্যা লাফিয়ে বেড়ে যেতে পারে।
সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী, ৩১ ডিসেম্বর কোভিডে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৩৩৭। শুক্রবার নতুন করে আরও ৭৮৩ জনের শরীরে ধরা পড়ে সেই ভাইরাস। এখনও পর্যন্ত জাপানে করোনায় আক্রান্তের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২,৩৯,০৪১। মৃত্যুর সংখ্যা ৩৩৩৭। ফলে আয়োজক কমিটিও প্রবল চাপে পড়ে গিয়েছে। করোনার কারণে অলিম্পিক্স পিছিয়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত খরচের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লক্ষ ৯ হাজার ৮৫ কোটি টাকা। আয়োজকদের তরফেও জানানো হয়েছে, করোনা থেকে ক্রীড়াবিদদের রক্ষা করতে যে বিশেষ সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হয়েছে, তার জন্য অতিরিক্ত খরচ হয়ে গিয়েছে। ফলে শেষ পর্যন্ত নির্দিষ্ট সময় এই বছরে সব কিছু সম্পন্ন হলে তা হবে অলিম্পিক্স ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহূল ক্রীড়ানুষ্ঠান।
সম্প্রতি একটি নাগরিক সমীক্ষায় উঠে আসে, জাপানের এক বড় অংশের মানুষ চান, আরও কিছুটা সময় পিছিয়ে দেওয়া উচিত অলিম্পিক্স। আর এক অংশের মানুষ মনে করেন, এই পরিস্থিতিতে বাতিল করে দেওয়া হোক তা। তবে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী সুগা বলেছেন, “কোনও অবস্থাতেই অলিম্পিক্স স্থগিত হবে না। এর সঙ্গে বিশ্ব সংহতির প্রশ্নও জড়িয়ে রয়েছে। তাই আমাদের টোকিয়ো অলিম্পিক্স আয়োজন করতেই হবে।”
প্রসঙ্গত করোনা সংক্রমণ থেকে খেলোয়াড়দের রক্ষা করতে ইতিমধ্যে নতুন নিয়ম চালু করার কথা জানিয়ে দিয়েছে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক সংস্থা। যেখানে বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট ইভেন্টের পাঁচ দিন আগে অলিম্পিক ভিলেজে প্রবেশ করতে পারবেন ক্রীড়াবিদরা। প্রাথমিক রাউন্ড থেকে বিদায় নিলে আগামী দু’দিনের মধ্যেই বেরিয়ে যেতে হবে ভিলেজ থেকে। তাতে করোনা সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তা নিয়ে টোকিয়ো অলিম্পিক কমিটির সদস্যদের সঙ্গে দীর্ঘ কথা হয়েছে আইওসি প্রেসিডেন্ট থোমাস বাখের। তারই সঙ্গে উদ্বোধনী এবং সমাপ্তি অনুষ্ঠানে বেশ কিছু ইভেন্টের প্রতিযোগীরা অংশ নিতে পারবেন না বলেও ঠিক হয়েছে। এ ছাড়াও নিয়মিত ভাবে চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে খেলোয়াড়দের করোনা পরীক্ষাও হবে। সব মিলিয়ে অলিম্পিক্স সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করতে মরিয়া টোকিয়ো আয়োজক কমিটির সদস্যরা। তবে নতুন করে করোনার সংক্রমণ তাঁদের স্বপ্নে কাঁটা হয়ে দাঁড়ায় কি না, সেটাই এখন দেখার।