আইএসএলের প্লে-অফ অঙ্কে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
SC East Bengal

সবুজ-মেরুন কার্যত নিশ্চিতই, পরীক্ষা কঠিন লাল-হলুদের

প্লে-অফে খেলা চূড়ান্ত করার জন্য উগো বুমোস-দের দরকার ছিল মাত্র এক পয়েন্ট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:১৫
Share:

সন্দেশের সঙ্গে হাবাস।

প্রথম দল হিসেবে সপ্তম আইএসএলে প্লে-অফে খেলা মুম্বই সিটি এফসি ইতিমধ্যেই নিশ্চিত করে ফেলেছে। এটিকে-মোহনবাগানের শেষ চারে যোগ্যতা অর্জন এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। প্লে-অফে বাকি দু’টি দল কারা হবে? এসসি ইস্টবেঙ্গল কি পারবে অভিষেকের মরসুমেই দেশের সর্বোচ্চ লিগে প্রথম চারটি দলের মধ্যে জায়গা করে নিতে?

Advertisement

মুম্বই সিটি এফসি (১৬ ম্যাচে ৩৪ পয়েন্ট): প্লে-অফে খেলা চূড়ান্ত করার জন্য উগো বুমোস-দের দরকার ছিল মাত্র এক পয়েন্ট। গত সোমবার এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ড্র করে লক্ষ্যপূরণ করে ফেলেছে মুম্বই। শেষ চারটি ম্যাচে সের্খিয়ো লোবেরা-র দলের লড়াই বেঙ্গালুরু এফসি (১৫ ফেব্রুয়ারি), জামশেদপুর এফসি (২০ ফেব্রুয়ারি), ওড়িশা এফসি (২৪ ফেব্রুয়ারি)। সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ২৮ ফেব্রুয়ারি এটিকে-মোহনবাগানের বিরুদ্ধে। ফুটবল বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দ্বৈরথের উপরেই নির্ভর করবে লিগ পর্বে পয়েন্ট টেবলের শীর্ষ স্থানে থেকে প্লে-অফ খেলবে
কোন দল।

এটিকে-মোহনবাগান (১৬ ম্যাচে ৩৩ পয়েন্ট): প্লে-অফে যোগ্যতা অর্জনের জন্য রয় কৃষ্ণদের দরকার মাত্র এক পয়েন্ট। হাতে রয়েছে চারটি ম্যাচ। ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিপক্ষ জামশেদপুর এফসি। ১৯ ফেব্রুয়ারি আইএসএলের ফিরতি ডার্বিতে এটিকে-মোহনবাগানের লড়াই এসসি ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে। ২২ ফেব্রুয়ারি লড়াই প্লে-অফের দৌড়ে থাকা হায়দরাবাদ এফসি-র সঙ্গে। ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রতিপক্ষ মুম্বই সিটি এফসি। সবুজ-মেরুনের স্পেনীয় কোচ আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাসের পাখির চোখ এখন শীর্ষ স্থান পুনরুদ্ধার করা।

Advertisement

এফসি গোয়া: (১৬ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট): আইএসএলে লিগ টেবলে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান দখল করা নিয়ে আটটি দলের মধ্যে লড়াই তুঙ্গে। এই মুহূর্তে তিন নম্বরে থাকলেও গোয়া শিবিরে খুব একটা স্বস্তি নেই। কারণ, চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে থাকা হায়দরাবাদ এফসি ও নর্থ ইস্ট ইউনাইটেডেরও ১৬ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট। গোল পার্থক্যে এগিয়ে থাকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছেন ইগর আঙ্গুলো-রা। বাকি চারটি ম্যাচে গোয়ার প্রতিপক্ষ চেন্নাইয়িন এফসি (১৩ ফেব্রুয়ারি), ওড়িশা এফসি (১৭ ফেব্রুয়ারি), বেঙ্গালুরু এফসি (২১ ফেব্রুয়ারি) ও হায়দরাবাদ এফসি (২৮ ফেব্রুয়ারি)। প্লে-অফে যোগ্যতা অর্জনের জন্য ইগর-দের প্রয়োজন অন্তত নয় পয়েন্ট। অর্থাৎ, তিনটি ম্যাচ জিতে ৩২ পয়েন্ট অর্জন করতে হবে তাঁদের। তা না হলে তাকিয়ে থাকতে হবে ঘাড়ের কাছে নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করা হায়দরাবাদ ও নর্থ ইস্টের দিকে।

হায়দরাবাদ এফসি (১৬ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট): কঠিন লড়াইয়ের সামনে হায়দরাবাদ। শেষ চারটি ম্যাচে নিজামের শহরের দলের প্রতিপক্ষ এসসি ইস্টবেঙ্গল (১২ ফেব্রুয়ারি), কেরল ব্লাস্টার্স (১৬ ফেব্রুয়ারি), এটিকে-মোহনবাগান (২২ ফেব্রুয়ারি) ও এফসি গোয়া (২৮ ফেব্রুয়ারি)। চারটি ম্যাচে যদি জেতে হায়দরাবাদ, তা হলে ৩৫ পয়েন্ট নিয়ে প্লে-অফে যোগ্যতা অর্জন করবে। কারণ গোয়া ৩২ পয়েন্টের বেশি সংগ্রহ করতে পারবে না। কিন্তু হায়দরাবাদ যদি ৩০ পয়েন্টের বেশি তুলতে না পারে, তা হলেই সমস্যা।

আলোচনা ফাওলার-মাগোমার।

নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড এফসি (১৬ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট): অন্তর্বর্তীকালীন কোচ খালিদ জামিলের হাত ধরে নাটকীয় প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছেন ডেসহর্ন ব্রাউন-রা। টানা ছ’টি ম্যাচে অপরাজিত নর্থ ইস্ট। জয় ও ড্র তিনটি করে ম্যাচে। গোয়া ও হায়দরাবাদের সঙ্গে পয়েন্ট সমান হলেও গোল পার্থক্যে পিছিয়ে থাকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছে তারা। শেষ চারটি ম্যাচে নর্থ ইস্টের প্রতিপক্ষ ওড়িশা এফসি (১৪ ফেব্রুয়ারি), চেন্নাইয়িন এফসি (১৮ ফেব্রুয়ারি), এসসি ইস্টবেঙ্গল (২৩ ফেব্রুয়ারি) ও কেরল ব্লাস্টার্স (২৬ ফেব্রুয়ারি)। সব কটি জিতলেও খালিদ জামিলের দলকে তাকিয়ে থাকতে হবে গোয়া বনাম হায়দরাবাদ ম্যাচের ফলের দিকে।

জামশেদপুর এফসি (১৭ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট): চেন্নাইয়িন এফসি-কে হারিয়ে লিগ টেবলের ছবিটাই বদলে দিয়েছে আওয়েন কয়েলের দল। বেঙ্গালুরুকে টপকে ষষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছে জামশেদপুর এফসি। নেরিউস ভাল্সকিসদের খেলা বাকি রয়েছে এটিকে-মোহনবাগান (১৪ ফেব্রুয়ারি), মুম্বই সিটি এফসি (২০ ফেব্রুয়ারি) ও বেঙ্গালুরু এফসি-র (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিরুদ্ধে। তিনটি ম্যাচ জিতলে ৩০ পয়েন্ট হবে জামশেদপুরের। তবে প্লে-অফে খেলা নিশ্চিত করার জন্য অপেক্ষা করতে হবে গোয়া, নর্থ ইস্ট ও হায়দরাবাদের পয়েন্ট নষ্ট করার জন্য।

বেঙ্গালুরু এফসি (১৭ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট): এটিকে-মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ০-২ হারের ফলে সুনীল ছেত্রীদের প্লে-অফে খেলা কঠিন হয়ে গিয়েছে। তবে সম্ভাবনা পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি। বাকি তিনটি ম্যাচে বেঙ্গালুরু মুখোমুখি হবে মুম্বই সিটি এফসি (১৫ ফেব্রুয়ারি), এফসি গোয়া (২১ ফেব্রুয়ারি) ও জামশেদপুর এফসি (২৫ ফেব্রুয়ারি)। তিনটি ম্যাচ জিতলে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে শেষ করবেন সুনীলেরা। প্লে-অফে খেলার জন্য তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য দলগুলির দিকে। গোয়া, নর্থ ইস্ট ও হায়দরাবাদকে চার পয়েন্টের বেশি অর্জন করলে হবে না। অন্য দলগুলিকেও শেষ ম্যাচে পয়েন্ট নষ্ট করতে হবে।

চেন্নাইয়িন এফসি (১৭ ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট): দু’বারের আইএসএল চ্যাম্পিয়নদের প্লে-অফে খেলার আশা কার্যত শেষ হয়ে গেল বুধবার জামশেদপুরের বিরুদ্ধে হারের পরে। চেন্নাইয়িনের খেলা বাকি গোয়া (১৩ ফেব্রুয়ারি), নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড এফসি (১৮ ফেব্রুয়ারি) ও কেরল ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে। সব ম্যাচ জিতলে ২৬ পয়েন্ট হবে তাদের। অঘটন না ঘটলে শেষ চারটি দলের মধ্যে থাকার সম্ভাবনা নেই চেন্নাইয়িনের।

কেরল ব্লাস্টার্স (১৭ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট): চেন্নাইয়িনের মতোই হাল কিবু ভিকুনা-র দলের। সবার শেষে থাকা ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে ড্র করে এসসি ইস্টবেঙ্গলকে টপকে নবম স্থানে উঠলেও প্লে-অফে খেলার আশা কার্যত শেষ কেরল ব্লাস্টার্সের। গ্যারি হুপারদের ম্যাচ বাকি রয়েছে হায়দরাবাদ এফসি (১৬ ফেব্রুয়ারি), চেন্নাইয়িন এফসি (২১ ফেব্রুয়ারি) ও নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড এফসি-র (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিরুদ্ধে। শেষ তিনটি ম্যাচ জিতলে ২৫ পয়েন্ট হবে কেরলের। যদিও অঙ্কের বিচারে প্লে-অফে খেলার সম্ভাবনা এখনও শেষ হয়ে যায়নি কেরলের।

এসসি ইস্টবেঙ্গল (১৬ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট): জামশেদপুর এফসি-র বিরুদ্ধে দুরন্ত জয় লাল-হলুদ শিবিরে প্লে-অফে খেলার আশা বাঁচিয়ে রেখেছে। শেষ চারটি ম্যাচে ব্রাইট এনোবাখারে-দের লড়াই এখন হায়দরাবাদ এফসি (১২ ফেব্রুয়ারি), এটিকে-মোহনবাগান (১৯ ফেব্রুয়ারি), নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড এফসি (২৩ ফেব্রুয়ারি) এবং ওড়িশা এফসি-র (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিরুদ্ধে। ডার্বি-সহ সব কটি ম্যাচ জিতলে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে লিগ পর্বের খেলা শেষ করবে এসসি ইস্টবেঙ্গল। যদিও প্লে-অফে যোগ্যতা অর্জনের জন্য তাকিয়ে থাকতে হবে বাকি দলগুলির দিকে। অর্থাৎ গোয়া, হায়দরাবাদ ও নর্থ ইস্টকে শেষ চারটি ম্যাচ থেকে চার পয়েন্টের বেশি অর্জন করলে চলবে না। পয়েন্ট নষ্ট করতে হবে বেঙ্গালুরু, জামশেদপুর, চেন্নাইয়িনকেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement