পর্তুগাল-১ (এডার) : ফ্রান্স-০

রোনাল্ডো ছাড়াই ইউরো সেরা পর্তুগাল

ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো কি পারবে সেমিফাইনালের ফর্মটা ধরে রাখতে? নাকি ফ্রান্স প্রমাণ করবে ঘর যার, ট্রফিও তার? এই সমস্ত প্রশ্নের জবাব খুঁজতেই তো রবিবার রাতে টিভি চালিয়ে ইউরো ফাইনাল দেখতে বসেছিলাম। ফ্রান্সকে যতই সবাই ফেভারিট বলুক না কেন বিপক্ষে রোনাল্ডোর মতো ফুটবলার থাকলে ম্যাচে যা খুশি হতে পারে।

Advertisement

সুব্রত ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৬ ০৪:০৬
Share:

কাপ হাতে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো, সঙ্গে গোটা পর্তুগাল।

ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো কি পারবে সেমিফাইনালের ফর্মটা ধরে রাখতে? নাকি ফ্রান্স প্রমাণ করবে ঘর যার, ট্রফিও তার? এই সমস্ত প্রশ্নের জবাব খুঁজতেই তো রবিবার রাতে টিভি চালিয়ে ইউরো ফাইনাল দেখতে বসেছিলাম। ফ্রান্সকে যতই সবাই ফেভারিট বলুক না কেন বিপক্ষে রোনাল্ডোর মতো ফুটবলার থাকলে ম্যাচে যা খুশি হতে পারে। সেমিফাইনালে রোনাল্ডোর যা খেলা দেখেছিলাম, তাতে মনে হয়েছিল দেশকে কিছু না দিতে পারার কালো দাগ মুছতে ও বদ্ধপরিকর।

Advertisement

তবে ২৪ মিনিটে ফাইনালটার সংজ্ঞাই পাল্টে গেল। যখন দেখলাম রোনাল্ডো কাঁদতে কাঁদতে স্ট্রেচারে মাঠ ছাড়ছে। পায়েতের কড়া ট্যাকলের পরেও রোনাল্ডো চেয়েছিল মাঠে থাকার। কিন্তু ও যখন বসে পড়ে কাঁদতে শুরু করল তখনই বুঝে গিয়েছি রোনাল্ডোর ফাইনাল শেষ।

দলের মহাতারকাকে হারানোর একটা মানসিক ধাক্কা তো থাকেই। কিন্তু মাঝে মাঝে সেটা তাতিয়ে দেয় দলকে। পর্তুগালের মধ্যেও সেটাই ছিল। ১০৯ মিনিটের মাথায় এডারের গোলটাও দুর্দান্ত ছিল। এ রকম একটা রোনাল্ডো-হীন ম্যাচে চাপ নেওয়া সহজ কথা নয়। কিন্তু অতিরিক্ত সময়ে এডারের গোলটা ছিল ক্লিনিকাল ফিনিশ। গ্রাউন্ডার শট। হুগো লরিসের কিছুই করার ছিল না।

Advertisement

রোনাল্ডো মাঠ ছাড়ার আগে অবধি ফ্রান্স বেশ তেড়েফুঁড়ে খেলছিল। নিজেদের মধ্যে ছোটপাস খেলে খেলে পজেশন রাখে মাতুইদি-পোগবারা। উইংয়ে সিসোকো বুলডোজারের মতো বল নিয়ে এগিয়ে সুযোগ তৈরি করার চেষ্টা করছিল। গ্রিজম্যানের একটা দারুণ হেড প্রায় গোলে ঢুকেই যাচ্ছিল যদি না রুই প্যাট্রিসিও দুর্দান্ত বাঁচাত বলটা। ওই সময় পর্তুগালকে দেখে মনে হচ্ছিল রবিবার হয়তো বল ধাওয়া করেই কাটাতে হবে। পর্তুগালের কেউ বল পেলেই হাইপ্রেসিংয়ের ফাঁদ পেতে রেখেছিল ফ্রান্স। দু’তিন জন মিলে ঘিরে নিয়েছিল।

পর্তুগালের সেরা ফুটবলার বসে যাওয়ার পরে মনে হয়েছিল ফ্রান্সের গোলটা সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু হল ঠিক উল্টোটা। ফ্রান্স সম্পূর্ণ নিষ্প্রভ হয়ে পড়ে। পর্তুগাল বলের পজেশন পেতে শুরু করে। রোনাল্ডোর জায়গায় নামা কোয়ারেসমা উইংয়ে খেলাটা ছড়ায়। রেনাতো স্যাঞ্চেজ ড্রিবল করে ওপেনিং খুঁজতে থাকে।

বিরতির পরে ফ্রান্স আক্রমণের পর আক্রমণ তৈরি করে। কিন্তু ফিনিশ করতে পারেনি। গ্রিজম্যান একটা সহজ হেড বাইরে মারল। জিনিয়াকের শটটা পোস্টে লাগল।

পর্তুগাল কিন্তু ডিফেন্সিভ শেপ পাল্টায়নি। পেপে-ফন্তে জুটি আঁটসাঁট ছিল। মাঝমাঠে উইলিয়াম কারভালহো দারুণ নেতৃত্ব দিয়েছে। পোগবা-গ্রিজম্যানের কোনও কম্বিনেশন তৈরি হতে দেয়নি। ফুটবলে নিয়মই হচ্ছে, তুমি পনেরোটা সুযোগ তৈরি করতে পারো। কিন্তু গোলটা না করতে পারলে কোনও লাভ নেই। ফ্রান্স সেই দোষটাই করল। পেনাল্টি মিস করে চোখের জলে ট্রফি মাঠে ফেলে এসেছিল মেসি। রোনাল্ডো নিজে চোট পেয়ে মাঠ থেকে চোখের জলে বেরিয়ে এলেও শেষ হাসি কিন্তু তার মুখেই। তার জমানাতেই প্রথম কোনও বড় টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হল পর্তুগাল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement