লেস্টার ম্যানেজারের সঙ্গে। ছবি: গেটি ইমেজেস
মোয়েস জমানার দুঃস্বপ্ন যেন আবার ফিরে আসছে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে। জঘন্য হার এবং তার ফল হিসেবে সিনিয়র ফুটবলারদের বিদ্রোহ এ সবের মুখে পড়তে হয়েছিল মোয়েসকে। এ বার লেস্টার সিটির বিরুদ্ধে বিপর্যয়ের পর ঠিক সেই অবস্থায় পড়তে হচ্ছে লুই ফান গলকেও। ড্রেসিংরুমে ফুটবলারদের গালাগাল হজম করতে হয় ম্যান ইউয়ের ডাচ কোচকে।
ব্রিটিশ প্রচারমাধ্যমের খবর, লেস্টার সিটি-র কাছে হারের পর ড্রেসিংরুমে ফুটবলাররা একে অপরকেই শুধু গালিগালাজই করেননি, কোচকেও খারাপ ভাষায় আক্রমণ করেন। জানা গিয়েছে কোনও এক ফুটবলার রীতিমতো উত্তেজিত ভাবে ফান গলকে বলতে থাকেন, “হোয়াট দ্য ....!! কেন আপনি দি মারিয়াকে তুলে নিলেন?” দলের ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার রাফায়েলও বাকি ফুটবলারদের ক্ষোভের মুখে পড়েন। রাফায়েলের ট্যাকলেই পেনাল্টি পায় লেস্টার। কোচও চুপ করে থাকেননি। প্রত্যেক ফুটবলারকে তাঁদের ভুলগুলো চোখে আঙুল তুলে দেখিয়ে দেন। এমনকী ফান গল নাকি এও বলেছেন, এর পরেও উন্নতি করতে না পারলে এই দলটাই ম্যান ইউয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ দল হয়ে থাকবে।
সমর্থকদের মতো ম্যান ইউয়ের কিংবদন্তি ফুটবলার ফিল নেভিলও খুবই চিন্তিত তাঁর দলের অবস্থা দেখে। যিনি মনে করছেন, দি মারিয়া, ফালকাওর মতো ফুটবলারদের দিয়েও হয়তো বড় ট্রফি জেতা অসম্ভব হয়ে উঠবে ফান গলের পক্ষে। আর এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য একটা টোটকা দিচ্ছেন নেভিল। আবার দলবদলের বাজারে ১০০ মিলিয়ন খরচ করতে হবে কোচকে। “আরও ভাল ফুটবলার লাগবে দলে। রক্ষণে একটা অভিজ্ঞ সেন্টার ব্যাক। লেস্টার সিটি যেমন সহজ ভাবে হারাল ম্যান ইউকে, বোঝাই যাচ্ছে, দলকে আরও খরচ করতে হবে। দরকার পড়লে আবার ১০০ মিলিয়ন!” বলেছেন নেভিল।
ম্যান ইউ যেখানে ফুটছে, লেস্টার শেখানে শান্ত। আর এই শান্তির মেজাজই নাকি সাফল্যের অন্যতম কারণ। লেস্টার ম্যানেজার নাইজেল পিয়ার্সনের সাফল্যের কারণ খুঁজতে গিয়ে উঠে আসছে কয়েক জন বৌদ্ধ সন্ন্যাসীর কথা। ম্যাচের দিন কয়েক আগেই লেস্টারের তাইল্যান্ডের মালিক তাঁর দেশ থেকে কয়েক জন বৌদ্ধ সন্ন্যাসীকে ক্লাবে নিয়ে আসেন। যাঁরা দলের সবাইকে ব্যক্তিগত ভাবে আশীর্বাদ করেন। এও দেখা যায়, তাঁরা মাঠের মাঝখানে দাঁড়িয়ে মন্ত্রোচ্চারণ করছেন। গোটা দলকে তাঁরা বোঝান, চাপের মধ্যে কী করে মাঠা ঠান্ডা রাখতে হবে। কী করে মনঃসংযোগ আরও নিখুঁত করতে হবে। শোনা যাচ্ছে, লেস্টারের উল্লোয়া থেকে নিউজেন্ট, সবাই মনে করছেন বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের টোটকাই দলকে উদ্বুদ্ধ করেছে ম্যান ইউ-কে হারানোর ক্ষেত্রে। নিউজেন্ট তো বলেই ফেলেন, “আশা করছি সন্ন্যাসীরা প্রতি সপ্তাহে আমাদের ম্যাচের আগে আসবেন। ওঁরা আমাদের দলের কাছে সৌভাগ্যের প্রতীক।”