মুখোমুখি: হাবাসের সঙ্গে আলেসান্দ্রো। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
পাপা বাবাকর জিওয়াহা এখনও মাঠে নামেননি। তা সত্ত্বেও লা লিগার প্রথম ডিভিশনে খেলা এই তারকা স্ট্রাইকারকে দেখতে বুধবার বিকেলে যুবভারতী সংলগ্ন মাঠে হাজির প্রচুর মোহনবাগান সমর্থক। নতুন বছরের শুরু। তাই কারও হাতে শুভেচ্ছা কার্ড, কারও হাতে ফুল। রিয়াল মাদ্রিদ, আতলেতিকো দে মাদ্রিদের বিরুদ্ধে সেভিয়ার জার্সিতে গোল করে আসা পাপার সঙ্গে ছবি তোলার জন্য হুড়োহুড়ি ভক্তদের।
রিয়াল কাশ্মীরের বিরুদ্ধে খেলতে যাওয়ার আগে শেষ অনুশীলনের পরে এই দৃশ্য দেখে পাপা মুখ খোলেননি। তবে মোহনবাগান কোচ কিবু ভিকুনা কার্যত বলেই দিলেন, রবিবার শুরু থেকেই এই নতুন তারকাকে নামাবেন। ‘‘পাপাকে আমি দশ বছর আগে থেকে চিনি। তখন ওর কম বয়স ছিল। সেভিয়ার মতো দলে খেলেছে। যে দল লা লিগায় চার বা পাঁচে থাকে। প্রচুর গোল করেছে সেরা দলের বিরুদ্ধে। ও খেলার জন্য তৈরি। কতক্ষণ ওকে খেলাব, সেটা ঠিক করব ম্যাচের আগে।’’ যা থেকে স্পষ্ট, শুরু থেকেই দেখা যাবে সালভা চামোরোর পরিবর্তকে।
এ দিন আড়াই ঘণ্টার অনুশীলনে পাপাকে প্রথম একাদশে রেখে সুহের ভি পি-র সঙ্গে স্ট্রাইকারে খেলিয়েছেন কিবু। পাপার মতো অনুশীলনে নজর কেড়েছেন কোমরন তুর্সুনভ। ছোটখাটো চেহারার তাজিকিস্তানের ফুটবলারটির গতি চোখে পড়ার মতো। দ্রুত জায়গা বদল করতে পারেন কোমরন। তাঁকে আজ, বৃহস্পতিবার ভোরের বিমানে কাশ্মীরে না নিয়ে গেলেও সবুজ-মেরুনের স্পেনীয় কোচ বলে দিলেন, ‘‘তুর্সুনভ দুটো উইংয়ে খেলতে পারে। স্ট্রাইকার পজিশনেও খেলতে সক্ষম। সব জায়গায় ব্যবহার করে যাবে ওকে।’’ কোমরন ভাঙা ভাঙা ইংরেজি বলতে পারেন। প্রথম দিন অনুশীলনের পরে বললেন, ‘‘আমি খেলার মধ্যেই আছি। সই হয়ে গেলে পরের ম্যাচ থেকেই খেলতে তৈরি।’’
কাশ্মীরে এখন বরফ পড়ছে। ডাল লেক সংলগ্ন স্টেডিয়ামের কৃত্রিম ঘাস যেন বরফের চাদর। তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রির কাছাকাছি। তা ছাড়া বুধবার ভোরেও অশান্তি হয়েছে ভূস্বর্গে। মোহনবাগান কর্তারা এই অবস্থায় খেলা হবে কি না জানতে চেয়েছিলেন ফেডারেশনের কাছে। তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বরফ-বৃষ্টি না হলে খেলা হবে। স্টেডিয়ামের খুব কাছে ফ্রান গঞ্জালেসদের হোটেলে সেনা মোতায়েন থাকবে বলে জানিয়েছে সেখানকার প্রশাসন। সে জন্যই আজ ভোরের বিমানে, ম্যাচের তিন দিন আগে যাচ্ছেন কিবুরা। আগের ম্যাচে ঠান্ডার কাছেই হেরে গিয়েছিল গতবারের চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই সিটি। কিবু সে জন্যই বললেন, ‘‘ঠান্ডার সঙ্গে মানিয়ে নিতেই আগে যাচ্ছি। ভারত দারুণ দেশ। কোথাও গরম, কোথাও ঠান্ডা। সব জায়গাতেই খেলতে হবে। এটা ভেবে লাভ নেই। কাশ্মীর থেকে তিন পয়েন্ট নিয়ে আসাটাই আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জ।’’
আই লিগে ঘরের মাঠে ডেভিড রবার্টসনের দলের বিরুদ্ধে জিততে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। ডুরান্ডে আবার রিয়াল কাশ্মীরকে হারিয়েছিল মোহনবাগান। এ সব কিছুই অবশ্য মাথায় নিয়ে নামতে চান না কিবু। বলেছেন, ‘‘ডুরান্ডে যে দলকে হারিয়েছিলাম সেই কাশ্মীর দলে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আমাদের দলেও বদল হয়েছে। বিদেশির সংখ্যা তিন থেকে পাঁচ হয়েছে দু’দলেই।’’ পাশাপাশি তাঁর মন্তব্য, ‘‘কাশ্মীর দল শারীরিকভাবে খুব শক্তিশালী। মেসন রবার্টসন এ বারের আই লিগের সব চেয়ে লম্বা ফুটবলার। সমস্ত কিছু মাথায় রেখেই খেলতে হবে। নতুন বছরে আমাদের লক্ষ্য একই থাকছে। একটি করে ম্যাচ ধরে এগোতে চাই।’’
মোহনবাগান তিন দিন আগে কাশ্মীর গেলেও ইস্টবেঙ্গল অবশ্য তাদের সূচি একই রাখছে। শনিবার চার্চিল ব্রাদার্সের বিরুদ্ধে গোয়ায় ম্যাচ। আলেসান্দ্রো মেনেন্দেস দল নিয়ে যাবেন শুক্রবার অনুশীলনের পরে। বুধবার অনুশীলনে গোড়ালিতে চোট পেলেন সামাদ আলি মল্লিক। তাঁর খেলা নিয়ে সংশয় আছে। এ দিন আন্তোনিও লোপেস হাবাসের সঙ্গে দেখা হয় আলেসান্দ্রোর। মাঠে অনুশীলনের পরে নতুন বছরের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন স্পেনীয় দুই কোচ।