দেশে পা দিলেন পাক অধিনায়ক। ছবি: টুইটার
বিরাট কোহালি!
নামটা গোটা পাকিস্তান দলে সম্ভ্রমের সঙ্গে উচ্চারিত হচ্ছে এখন। পাকিস্তান ক্রিকেট সমাজ লিখলেও ভুল হবে না। ওয়াঘার এ পার থেকেই ওয়াঘার ও পারের মেজাজটা বেশ টের পাচ্ছি। দিনভর পাক ক্রিকেটের অন্দরে ফোনাফুনি চালিয়ে।
জাভেদ মিয়াঁদাদের মতো ঠোঁট কাটা প্রাক্তন পাক নক্ষত্রও বলে দিয়েছেন, কোহালি তাঁকে গ্রেট সচিন তেন্ডুলকরের কথা মনে পড়িয়ে দিচ্ছেন ইদানীং খেলা প্রায় প্রতিটা ইনিংসে। ‘‘বিরাট আমাকে গ্রেট সচিনের সেরা ফর্মের ব্যাটিংয়ের স্মৃতি উসকে দিয়েছে। এমনকী সচিনের যেটা ছিল না, সেটাও এই ছেলেটার খেলায় আছে। কী ভাবে রান তাড়ায় সফল হতে হয়। ওয়ান ডে-তে বিরাট কাজটা অনেক বার সফল ভাবে করার পর এখন টি-টোয়েন্টিতেও ম্যাচের পর ম্যাচে করছে। সেটাও বড় টুর্নামেন্টে। মারাত্মক চাপে।’’
এশিয়া কাপ আর বিশ্ব টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের হতাশজনক পারফম্যান্সের পর কোচ ওয়াকার ইউনিসের চাকরি যতই অনিশ্চিত হোক না কেন, তিনি বিরাট-প্রসঙ্গ তুলে নিজের দলের ব্যাটসম্যানদের সমালোচনা করতে এ দিন ছাড়েননি। ‘‘আমাদের টিমে বিরাটের মতো কেউ নেই। পাকিস্তান ব্যাটসম্যানদের উচিত বিরাটের খেলা দেখে ব্যাটিংটা শেখা,’’ বলেছেন তিনি। এখানেই থামেননি ওয়াকার। বলেন, ‘‘আহমেদ শেহজাদ বিরাটকে নকল করার একটা চেষ্টা করে। কিন্তু ওই পর্যন্তই। দু’জনের ব্যাটিং স্কিলে, মানসিকতায় অনেক তফাত। বরং বাবর আজমের প্রতিভা আছে ভবিষ্যতে পাকিস্তানের বিরাট হয়ে ওঠার।’’
বাবর আজম গত জানুয়ারিতে পাকিস্তানের নিউজিল্যান্ড সফরে দু’টো ওয়ান ডে ম্যাচে দু’টো খুব ভাল হাফসেঞ্চুরির ইনিংস খেলেছিলেন। সম্পর্কে কামরান-উমর আকমলের তুতোভাই বাবর। তবে মোটেই ওঁদের মতো ব্যাটিং মানসিকতা নয়। যদিও বাবরকে নিয়ে ওয়াকারের এত জলদি ভবিষ্যদ্বাণীতে অবাক পাক ক্রিকেটমহলের কেউ কেউ। বরং শোয়েব মালিকের বিরাট সম্পর্কে সম্ভ্রম মনে দাগ কাটার মতো।
সানিয়া মির্জার স্বামী বলেছেন, ‘‘বিরাট এখনই কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান হয়ে উঠেছে। এশিয়া কাপে হাতে অল্প রান নিয়েও আমরা মীরপুরের খুব খারাপ উইকেটে যখন শুরুতেই ভারতের তিন উইকেট ফেলে দিয়েছিলাম তখন কোহালি ওই চাপের মধ্যেও অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ে ম্যাচ বার করে নিয়ে চলে যায়। তার পর বিশ্বকাপে ইডেনেও একই কাজ করেছিল। দু’বারই আমরা ভারতের কাছে নয়, বিরাটের কাছে হেরেছি।’’ এর পরে শোয়েব বলেন, ‘‘তবে ওর ব্যাটিং সুযোগ পেলেই দেখি আমি। টিভিতে ভারতের ম্যাচ দেখিই যতক্ষণ বিরাট ব্যাট করে। রবিবারও তাই করেছি।’’ আর শাহিদ আফ্রিদি?
পাক টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক এ দিনই দুবাই থেকে প্রায় গোপনে করাচিতে এসে নামেন। বিমানবন্দরে আমাদের দেশের মাত্র একজন রিপোর্টার ছিলেন। তিনিই আফ্রিদির করাচি বিমানবন্দরে নামার ছবি সোশ্যাল নেটওয়ার্কে পোস্ট করেছেন। দেশে ফিরে আফ্রিদি মিডিয়ার সঙ্গে কোনও কথা বলেননি। কিন্তু এহেন আফ্রিদিও বিরাট নিয়ে দুবাইয়ে সপ্রশংস মন্তব্য করেছেন। বলেছেন, ‘‘কাল সন্ধেয় বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে টিভিতে মোহালির ম্যাচটা দেখেছি। বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের মতোই ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচেও দু’দলের মধ্যে পার্থক্য ছিল কোহালিই। এই ফর্ম্যাটেও ক্লাসিক্যাল ব্যাটিং করল। অবিশ্বাস্য!’’
আর মহম্মদ আমের তো সেই এশিয়া কাপ থেকেই বিরাটে মজে! যিনি কোহালির মোহালি ইনিংস দেখার পর বলছেন, ‘‘বিরাট কোহালি শুধু অসাধারণ ব্যাটসম্যান নয়, অসাধারণ মানুষও। এশিয়া কাপে ভারত-পাক ম্যাচে ওই চাপের মধ্যেও ও ব্যাট করতে করতে আমার কাছে এসে বলে, খুব ভাল বোলিং করছ! বিরাটের থেকে অনেক কিছু শেখার আছে আমাদের।’’