হতাশ না হয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর শপথ পিভি-র

ফাইনালে সেই মারিনের র‌্যাকেটেই ফের স্বপ্নভঙ্গ সিন্ধুর

হারলেও সিন্ধু কিন্তু বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ফের রুপো জিতে রেকর্ড করে ফেললেন। এই নিয়ে চতুর্থ পদক জিতলেন তিনি এই প্রতিযোগিতায়। ২০১৩ গুয়াংঝৌ এবং ২০১৪ কোপেনহাগেনে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৮ ০৪:০৪
Share:

অধরা ট্রফি। হতাশ সিন্ধু। ছবি: এএফপি।

একটা বদলা নিয়ে নিয়েছিলেন কোয়ার্টার ফাইনালেই। নজোমি ওকুহারাকে হারিয়ে। তাঁর ভক্তরা ভেবেছিলেন, আরও একটা বদলা নিয়েই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম সোনা জিতবেন পি ভি সিন্ধু। ফাইনালে হারিয়ে দেবেন অলিম্পিক্স চ্যাম্পিয়ন ক্যারোলিনা মারিনকে। যাঁর কাছে দু’বছর আগে ফাইনালে হেরে গিয়েছিলেন হায়দরাবাদি তারকা। কিন্তু সেই আশা পূরণ হল না সিন্ধুর ভক্তদের। মারিনের বিরুদ্ধে ১৯-২১, ১০-২১ হেরে টানা দ্বিতীয় বার বিশ্বচ্যাম্পিয়নের খেতাব অধরা থাকল সিন্ধুর।

Advertisement

৪৫ মিনিটের ম্যাচে মারিনের দুরন্ত গতির জবাব দিতে পারেননি সিন্ধু। বিশেষ করে দ্বিতীয় গেমে। প্রথম গেমে তাই প্রায় পুরো সময়টাই এগিয়ে থাকার পরে শেষ দিকে আর মারিনকে রুখতে পারেননি তিনি। দ্বিতীয় গেমে মারিন আর কোনও সুযোগ দেননি সিন্ধুকে। চোখের পলকে এগিয়ে যান। সিন্ধু চেষ্টা করেছিলেন ফিরে আসার। ততক্ষণে ম্যাচের পুরো নিয়ন্ত্রণ চলে এসেছিল মারিনের হাতে।

হতাশ সিন্ধু ম্যাচের পরে বলেন, ‘‘আবার এ ভাবে ফাইনালে হেরে যাওয়াটা ভীষণ হতাশার। গত বারও আমি ফাইনালে উঠেছিলাম। তাই খুব দুঃখ হচ্ছে। তবে হতাশ হলে চলবে না। আমাকে উঠে দাঁড়াতে হবে। আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসতে হবে।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘সব মিলিয়ে ম্যাচটা খারাপ হয়নি। ফের ফাইনালে উঠতে পেরে আমি খুশি। হার-জিত জীবনের অঙ্গ। যা সামনে আসবে সেটাই মেনে নিতে হবে।’’

Advertisement

চ্যাম্পিয়ন মারিন। ছবি: গেটি ইমেজেস।

তবে হারলেও সিন্ধু কিন্তু বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ফের রুপো জিতে রেকর্ড করে ফেললেন। এই নিয়ে চতুর্থ পদক জিতলেন তিনি এই প্রতিযোগিতায়। ২০১৩ গুয়াংঝৌ এবং ২০১৪ কোপেনহাগেনে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন তিনি। তার পর টানা দু’বার জিতলেন রুপো। পাশাপাশি ইতিহাস গড়লেন ক্যারোলিনা মারিনও। প্রথম মেয়ে খেলোয়াড় হিসেবে তৃতীয় বার সোনা জিতলেন তিনি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে। সিন্ধুর শেষ শট বাইরে পড়তেই আবেগে কেঁদে ফেলেছিলেন মারিন। ম্যাচের পরে স্পেনীয় চ্যাম্পিয়ন বলেন, ‘‘জেতার পরে অনুভূতিটা বলে বোঝাতে পারছি না। আবেগে ভাসছি। অনেক দিন ধরে এই মূহূর্তটার অপেক্ষা করছিলাম। নিজের উপরে যে বিশ্বাস রাখতে রেখে শেষ পর্যন্ত জিততে পেরেছি, তাতে আরও বেশি খুশি।’’ প্রতিদ্বন্দ্বীকে প্রশংসায় ভরিয়ে দেন সিন্ধুও। সিন্ধু বলেন, ‘‘সব মিলিয়ে মারিন অনেক ভাল খেলেছে। যদি প্রথম গেমটা জিততে পারতাম, তা হলে হয়তো ম্যাচটা অন্য দিকে গড়াতে পারত। কিন্তু দ্বিতীয় গেমে আমি প্রচুর ভুল করেছি। আমার স্ম্যাশগুলো কোর্টের বাইরে পড়ছিল। এটাই বলতে পারি, দিনটা আমার ছিল না।’’ তবে মারিনের পরিকল্পনা আন্দাজ করে তিনি যে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন সেটা জানাতে ভোলেননি সিন্ধু, ‘‘ক্যারোলিনা খুব আগ্রাসী গতিতে খেলতে পছন্দ করে। সেই গতিটাই ও এই ম্যাচেও ধরে রেখেছিল। গোটা টুর্নামেন্টেই ও দ্রুত গতিতে খেলেছে। আমি ওর গতি সামলানোর জন্য প্রস্তুতি নিয়েই নেমেছিলাম।’’

বড় প্রতিযোগিতার ফাইনালে কী ভাবে হার

• রিও অলিম্পিক্স (২০১৬) বনাম ক্যারোলিনা মারিন (২১-১৯, ১২-২১, ১৫-২১)

• হংকং সুপার সিরিজ (২০১৬, ২০১৭) দু’বারই তাই জু ইং হারান (১৫-২১, ১৭-২১ ও ১৮-২১, ১৮-২১)

• সুপার সিরিজ ফাইনালস (২০১৭) বনাম আকানে ইয়ামাগুচি (২১-১৫, ১২-২১, ১৯-২১)

• ইন্ডিয়ান ওপেন (২০১৮) বনাম বেইওয়েন ঝ্যাং (১৮-২১, ২১-১১, ২০-২২)

• তাইল্যান্ড ওপেন (২০১৮) বনাম নজোমি ওকুহারা (১৫-২১, ১৮-২১)

• বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ (২০১৭, ২০১৮) বনাম নজোমি ওকুহারা ও ক্যারোলিনা মারিন (১৯-২১, ২২-২০, ২০-২২ ও ১৯-২১, ১০-২১)

প্রথম গেমে এক সময় অনেকটা এগিয়ে গিয়েও যে ভাবে হারতে হল, তাতে হতাশ সিন্ধু। তিনি বলেন, ‘‘এক সময় আমি ১৪-৯ এগিয়ে গিয়েছিলাম প্রথম গেমে। অনেক সহজ পয়েন্ট আমি হাতছাড়া করেছি। ম্যাচে ফিরে আসার চেষ্টা করতে গিয়েও ভুল হয়েছে অনেক। যখন ১৯-১৯ ছিল তখন আমায় আরও ধৈর্য রাখতে হত। ক্যারোলিনা তখন আক্রমণ করেই যাচ্ছিল।’’

এর পরে সিন্ধুর চ্যালেঞ্জ এশিয়ান গেমস। যেখানে চিন, জাপানের তারকাদের পাশাপাশি সামলাতে হতে পারে বিশ্বের এক নম্বর তাই জু ইংয়ের চ্যালেঞ্জও। দেখার সিন্ধু আরও শক্তিশালী হয়ে এশিয়ান গেমসে ফিরে আসতে পারেন কি না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement