ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়াম।—ফাইল চিত্র।
মাঠের ভিতরে ও বাইরে একাধিক সমস্যায় বিপর্যস্ত ওড়িশা এফসি। ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামের মাঠ তৈরি না হওয়ায় এ বার পুণের পথে নারায়ণ দাস, সিসকো হার্নান্দেসরা।
অধরা আইএসএল খেতাবের খোঁজে দিল্লি ডায়নামোস এফসি এই মরসুমে নাম বদলে ওড়িশা এফসি নামে খেলছে। দিল্লির বদলে তাদের নতুন ঠিকানা এখন ওড়িশার রাজধানী ভুবনেশ্বর। কিন্তু তাতেও ছবিটা বদলায়নি। আইএসএলের প্রথম ম্যাচে ১-২ হার জামশেদপুর এফসি-র কাছে। দ্বিতীয় ম্যাচে একই ব্যবধানে হার নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি-র কাছে। তৃতীয় ম্যাচে অবশেষে ঘুরে দাঁড়ায় ওড়িশা। দুরন্ত খেলে মুম্বই সিটি এফসিকে তাদের ঘরের মাঠে ৪-২ হারিয়ে যখন ফের খেতাবের স্বপ্ন দেখছেন সিসকোরা, তখনই বিপর্যয়। জানা গিয়েছে, ডিসেম্বরের আগে নিজেদের ঘরের মাঠ ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে কোনও ম্যাচ খেলতে পারবে না ওড়িশা। কারণ, মাঠ এখনও তৈরি হয়নি! তাই বিকল্প হিসেবে টিম ম্যানেজমেন্টের ভাবনায় এই মুহূর্তে পুণে। সূত্রের খবর, দু’-এক দিনের মধ্যেই সরকারি ভাবে পুণেকে ওড়িশা এফসি-র ঘরের মাঠ হিসেবে ঘোষণা করার হতে পারে।
প্রশ্ন উঠছে কেন সময় মতো মাঠ তৈরি হল না? দিল্লি ডায়নামোজ নাম বদলে ওড়িশা থেকে আইএসএলে খেলার অন্যতম কারণ ছিল সরকারি সাহায্যের প্রতিশ্রুতি। মাঠ থেকে নিরাপত্তা— সব দায়িত্বই নিয়েছিল ওড়িশা সরকার। অথচ প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যাওয়ার সপ্তাহ দু’য়েক পরেও মাঠ তৈরি হল না। আইএসএল কর্তৃপক্ষও হতাশ ওড়িশাকে নিয়ে। কেউ কেউ বলেই দিলেন, ‘‘চলতি বছরের মার্চ মাস থেকেই ওড়িশা সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে ওড়িশা এফসি কর্তৃপক্ষের। এর মধ্যে সুপার কাপের ম্যাচ ছিল। অনূর্ধ্ব-১৭ মেয়েদের বিশ্বকাপের জন্য কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে সংস্কারের কাজ চলছে। তার উপরে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব। এই পরিস্থিতিতে সময় মতো যাতে মাঠ তৈরি হয়ে যায়, তার জন্য ওঁদের আরও তৎপর হওয়া উচিত ছিল। সব কিছু সরকারের উপরে ছেড়ে দিলে হয় না। নিজেদের দায়িত্ব নিতে হয়।’’
ম্যাচ সমস্যায় প্রচুর আর্থিক ক্ষতির মুখেও পড়তে চলছে আলেসান্দ্রো দেল পিয়েরো, রবার্তো কার্লোসের মতো বিশ্বকাপজয়ী তারকাদের পুরনো ক্লাব। আইএসএলের ক্রীড়াসূচি অনুযায়ী ঘরের মাঠে ওড়িশা এফসি-র প্রথম ম্যাচ ২৪ নভেম্বর এটিকের বিরুদ্ধে। তার পরের ম্যাচ বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে ৪ ডিসেম্বর। হায়দরাবাদ এফসি-র বিরুদ্ধে খেলা ১১ ডিসেম্বর। এই তিনটি ম্যাচকে কেন্দ্র করে এখন থেকেই উন্মাদনা তুঙ্গে। টিকিটের চাহিদা প্রবল। কিন্তু মাঠ তৈরি না হওয়ায় টিকিট বিক্রি শুরু করতে পারেনি ওড়িশা কর্তৃপক্ষ। এখন যা অবস্থা, পুণেতে খেলতে হবে এই তিনটি ম্যাচ। ওড়িশা দলের এক কর্তা বলছিলেন, ‘‘অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই ওড়িশার মানুষ আমাদের আপন করে নিয়েছিলেন। এখানে ম্যাচ হলে স্টেডিয়াম ভর্তি হয়ে যেত। পুণেতে তা হবে না। ওড়িশা এফসি-কে নিয়ে ওখানকার স্থানীয় মানুষের আগ্রহ না থাকাই স্বাভাবিক। আমাদের প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’’