বিজয়ী: হাতে ট্রফি। নজির গড়ে সেন্টার কোর্টে নোভাক। ছবি: রয়টার্স
পাঁচ মিনিটও লাগেনি রবিবার উইম্বলডনের ফাইনালে নোভাক জোকোভিচের প্রতিপক্ষ কেভিন অ্যান্ডারসনের সার্ভিস ভাঙতে। যার পাল্টা জবাব দক্ষিণ আফ্রিকার খেলোয়াড় বাকি দু’ঘণ্টা ১৯ মিনিটেও দিতে পারেননি সার্বিয়ার প্রাক্তন এক নম্বরকে।
ফলে চতুর্থ উইম্বলডন এবং কেরিয়ারের ১৩ নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিততে বিশেষ বাধার মুখে পড়তেই হল না জোকোভিচকে। মজার হল, উইম্বলডনে যে তিনি এ ভাবে দুরন্ত প্রত্যাবর্তন ঘটাতে পারবেন সেটা জোকোভিচ নিজেও জানতেন না। ‘‘এই পর্যায়ের টেনিসে যে ফিরতে পারব সেটা ভাবিনি। ঘাসের কোর্টের মরসুমেই এ বার নামতে পারব নিশ্চিত ছিল না।’’
অ্যান্ডারসন তৃতীয় সেটে ম্যাচ আরও দীর্ঘ করার দিকে টেনে নিয়ে যেতে সফলও হয়ে গিয়েছিলেন প্রায়। পাঁচ বার সেট পয়েন্টের সামনে চলে এসেছিলেন। প্রত্যেক বার জোকোভিচ ব্রেক বাঁচিয়েছেন। এর পরে টাইব্রেকারের সময় অ্যান্ডারসনের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে চলে গিয়েছেন দ্রুত। তুলে এনেছেন নিজেকে টেনিসের ইতিহাসে পুরুষদের মধ্যে চতুর্থ সর্বোচ্চ গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ীর আসনে। তাঁর সামনে এখন শুধু রজার ফেডেরার (২০), রাফায়েল নাদাল (১৭) এবং পিট সাম্প্রাস (১৪)।
রবিবার আরও একটা দৃশ্য ফিরে এল উইম্বলডনে। অ্যান্ডারসনের ফোরহ্যান্ড রিটার্ন নেটে লাগতেই জোকোভিচের জয় নিশ্চিত হয়ে গেলে তিনি উইম্বলডনে নিজের সংস্কার অনুযায়ী কোর্টের কয়েকটি ঘাস ছিঁড়ে মুখে দেন। পরে মজা করে বলেন, ‘‘খুব সুস্বাদু লাগল ঘাসগুলো।’’ যে দৃশ্য এর আগেও দেখা গিয়েছে ২০১১, ২০১৪ এবং ২০১৫-এ। সার্বিয়ান তারকা আরও বলেন, ‘‘এ বার তো আরও বেশি করে উৎসব পালন করব। এ ভাবে ফিরে আসার জন্য।’’ তবে গত তিন বারের তুলনায় একটা ব্যাপার কিন্তু আলাদা ছিল এ বার এসডব্লিউ নাইনটিনে— জোকোভিচের ছেলে, তিন বছর বয়সি স্তেফানের উপস্থিতি। ফাইনালের পরে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে হাজির ছিল সে। পরে জোকোভিচ ছেলেকে দেখেই কোলে তুলে নেন। যা নিয়ে বিশ্বের প্রাক্তন এক নম্বর বলে দেন, ‘‘প্রথম বার আমার জীবনে ‘বাবা, বাবা’ বলে চিৎকার করার মতো এক জন চলে এসেছে। এই অনুভূতি যে কী, বলে বোঝানো যাবে না।’’ তবে রবিবারও দর্শকদের একাংশের আচরণে ক্ষুব্ধ হন জোকোভিচ। পয়েন্টের মাঝে দর্শকদের চেঁচামেচিতে বিরক্ত হয়ে চেয়ার আম্পায়ারকে এক বার অভিযোগও করেন। তবু উইম্বলডনে এই জয়ের গুরুত্ব যে তাঁর কাছে কতটা জোকোভিচের কথাতেই স্পষ্ট হয়ে যায়। তিনি বলে দেন, ‘‘বিশ্বে প্রত্যাবর্তনের এত ভাল মঞ্চ আর কোথাও নেই। উইম্বলডন একটা পবিত্র জায়গা।’’