নোভাক জোকোভিচ। ফাইল ছবি।
করোনা টিকা তিনি নেবেন না। গ্ল্যান্ড স্লামের মতো প্রতিযোগিতা খেলতে না পারলেও পরোয়া নেই নোভাক জোকোভিচের। তাই উইম্বলডনকেই বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন বিশ্বের তিন নম্বর টেনিস খেলোয়াড়।
করোনা টিকা না নেওয়ায় অস্ট্রেলিয়ান ওপেন খেলতে পারেননি জোকোভিচ। ফরাসি ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে গিয়েছেন রাফায়েল নাদালের কাছে। ইউএস ওপেনেও সম্ভবত তাঁর খেলা হবে না করোনা টিকা না নেওয়ায়। তাই পয়েন্ট না থাকলেও উইম্বলডনকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন জোকোভিচ। গ্র্যান্ড স্ল্যামহীন বছর মানতে পারছেন না।
এটিপি ক্রমতালিকায় এক নম্বর থেকে তিন নম্বরে নেমে গিয়েছেন। ইউএস ওপেন খেলতে না পারলে আরও নেমে যেতে পারেন। তবু টিকা নেবেন না জোকোভিচ। নিজের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত বদলাতে নারাজ সার্বিয়ান। ৩৫ বছরের জোকোভিচ অবশ্য দাবি করেছেন, ইউএস ওপেন খেলতে পারবেন না, এই ব্যাপারটাই তাঁকে উইম্বলডন জিততে আরও বেশি উদ্বুদ্ধ করছে।
২২ টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতেছেন নাদাল। তিনি এবং রজার ফেডেরারের গ্র্যান্ড স্ল্যামের সংখ্যা ২০। উইম্বলডন জিতলেও নাদালকে ছুঁতে পারবেন না। নাদাল জিতলে আরও পিছিয়ে পড়বেন। জোকোভিচ গ্র্যান্ড স্ল্যামের সংখ্যা, ক্রমতালিকায় অবস্থান এ সব নিয়ে ভাবতে নারাজ।
উইম্বলডনই হয়তো চলতি মরসুমে জোকোভিচের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যাম। তিনি বলেছেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি, আমাকে আমেরিকায় ঢুকতে দেওয়া হবে না। জানি সেটা। এটাই আমাকে উইম্বলডন জিততে আরও বেশি মরিয়া করছে। আশা করছি এ বারের প্রতিযোগিতা আমার ভালই কাটবে। শেষ তিন বছর তো ভালই কেটেছে। উইম্বলডন জিতে অপেক্ষা করব। আমেরিকা আমাকে ঢুকতে দেবে কি না, তখন ভাবব।’’
এ বার চ্যাম্পিয়ন হলে আধুনিক যুগে জোকোভিচই প্রথম খেলোয়াড় হিসাবে টানা চার বার উইম্বলডন জিতবেন। স্পর্শ করবেন পিট সাম্প্রাসের সাত বার উইম্বলডন জয়ের কৃতিত্ব। ফেডেরারের থেকে কেবল একটি জয় থেকে পিছিয়ে থাকবেন। জোকোভিচ বলেছেন, ‘‘মনে হয় আমি আরও এক বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো অবস্থায় থাকব। সাম্প্রাস যে বার প্রথম উইম্বলডন জেতেন, সেই ফাইনালই টিভিতে দেখা আমার প্রথম টেনিস ম্যাচ। এই প্রতিযোগিতার সঙ্গে সম্পর্ক পরে আরও নিবিড় হয়েছে। সাম্প্রাস সাত বার জিতেছিল। মনে হচ্ছে, এ বারেই আমি ওকে ছুঁয়ে ফেলব।’’
চ্যাম্পিয়ন হলেও ২০০০ র্যাঙ্কিং পয়েন্ট হারাবেন জোকোভিচ। কারণ, এ বারের উইম্বলডন থেকে কোনও পয়েন্ট পাবেন না খেলোয়াড়রা। ইউক্রেনে যুদ্ধ চালানোর জন্য রাশিয়া ও বেলারুশ নিয়ে কঠোর নীতি নিয়েছেন উইম্বলডন কর্তৃপক্ষ। এই দুই দেশের খেলোয়াড়দের নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে টেনিসের দুই নিয়ামক সংস্থা এটিপি এবং ডব্লিউটিএ উইম্বলডনের উপর পাল্টা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এই নিয়ে জোকোভিচ বলেছেন, ‘‘এখন আমার প্রাধান্য বদলে গিয়েছে। দু’পক্ষের অবস্থানই বুঝি। কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল বলতে পারব না। আমি খেলতে না পারলে এক জন খেলোয়াড় হিসাবে কষ্ট পাই। আমার নয়ের দশকের কথা মনে পড়ছে। ’৯২ থেকে ’৯৬ পর্যন্ত সার্বিয়ার কোনও খেলোয়াড়ই আন্তর্জাতিক কোনও খেলায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি। তাদের অনেককেই আমি চিনি। ফলে খেলতে না পারার যন্ত্রণা বুঝি।’’