দেল পোত্রো। ফ্লাশিং মেডোয় অঘটন ঘটাতে পারেন যিনি।
যুক্তরাষ্ট্র ওপেন এসে পড়ল। তবে এ বার টুর্নামেন্টটা অলিম্পিক্সের পরেই শুরু হচ্ছে বলে হয়তো অনুভূতিটা একটু অন্য। অলিম্পিক্সে ব্যস্ত থাকায় প্লেয়াররা মরসুমের শেষ গ্র্যান্ড স্ল্যামের আগে সে ভাবে ওয়ার্ম আপ টুর্নামেন্টগুলো খেলতে পারেনি।
অবশ্য বছরটাই টেনিসে যেন পালাবদলের। বছরের প্রায় মাঝামাঝি থেকে ফেডেরার কোর্টে নেই। নাদাল এখনও ফিটনেস নিয়ে সমস্যায়। ফলে টেনিসের ফ্যাব ফোর কার্যত বদলে গিয়েছে বিগ টু-তে। লড়াইটা জকোভিচ বনাম মারে। এই দু’জনের কোর্টের শত্রুতা ক্রমশ টেনিসের মহান প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলোর পর্যায় পৌঁছচ্ছে।
সেই প্যারিস থেকে মারের ফর্ম অসাধারণ চলছে। মানতেই হবে, এক নম্বরের দৌড়ে নোভাককে প্রায় ধরে ফেলার জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে। মারের ক্ষেত্রে পরিবর্তন ঠিক কোথায় হয়েছে, কী পাল্টেছে ওর খেলায়, সেটা কিন্তু আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে পারব না। কারণ, ওকে আমার বরাবর কমপ্লিট প্লেয়ার মনে হয়। আমার এও মনে হয়, মরেসমো ওর জন্য খুব ভাল কোচ ছিল। তবে মারের টিমে আমার পুরনো বন্ধু লেন্ডলকে ফিরতে দেখে দারুণ লাগছে। তবে কোচ বদল নয়, আমার ধারণা মারের খেলায় সবচেয়ে বড় পরিবর্তন এসেছে ওর মানসিকতায়। ওর জীবনে ইদানীং স্থিরতা এসেছে, আগের চেয়ে পরিণতও হয়ে উঠেছে।
মারের কেরিয়ারে প্রথম বড় ঘটনা ২০১২ অলিম্পিক্সে সোনা জেতা। তার পর সে বছরই যুক্তরাষ্ট্র ওপেন ওর প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাব। তবে ২০১৩-য় উইম্বলডন জেতার পর থেকে নিজের সংগ্রহে যতগুলো গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাব দেখলে ও সন্তুষ্ট হতে পারত, ততগুলো জিততে পারেনি। তবে এ বছর পরপর উইম্বলডন আর অলিম্পিক্স চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা বলে দিচ্ছে, আজকাল ও অনেক চাপমুক্ত। খোলা মনে খেলতে পারছে বলেই আমার ধারণা সামনের কয়েকটা গ্র্যান্ড স্ল্যামে ও নোভাকের শ্রেষ্ঠত্বকে কোর্টে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে। আর বিশ্বাস করি নোভাকের মতো বিয়ে আর বাবা হওয়াটা মারেকেও বিরাট সাহায্য করেছে। আসলে পরিবার হলে জীবনে স্থায়িত্ব আসে।
নোভাকের কথায় বলব, উইম্বলডনে তৃতীয় রাউন্ডে বিদায় ওকে ধাক্কা দিয়েছিল। কিন্তু অলিম্পিক্সে দেল পোত্রোর কাছে প্রথম রাউন্ডেই হেরে অসম্ভব কষ্ট পেয়েছে। নিজের দেশকে পদক দিতে না পারার চেয়ে বড় হতাশা আর কিছু নেই। অবশ্য চোট সারিয়ে লম্বা সময়ের পর ফেরা দেল পোত্রোর পাওয়ার গেমটাও ফিরে এসেছে। আগের চেয়ে কোর্টে ওর নড়াচড়া আরও ভাল হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে ও রিওর সাফল্যর পরেই নামছে। ওর দিকে নজর রাখুন। দেল পোত্রো কিন্তু চমকে দিতে পারে।
রাডারের মধ্যে থাকা আর একজন রাওনিচ। এই লম্বুর জন্যই টেনিসে আবার বুম-বুম সার্ভ ফেরত এসেছে। রাওনিচ ঘাসের কোর্টে বেশি স্বচ্ছন্দ। তবে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনেও ওকে হিসেবে রাখতেই হবে। মানসিক দিক থেকে ছেলেটা শক্তিশালী। গ্রাউন্ডস্ট্রোকেও শক্তিশালী। ফলে বিগ টু-কে চ্যালেঞ্জ করার মতো আরও দু’জন কিন্তু রয়েছে এ বার।
এ দিকে, চোট এখনও সমস্যা গত বারের চ্যাম্পিয়ন নোভাকের। কব্জির যে চোট সেই উইম্বলডন থেকে ওকে ভোগাচ্ছিল, সেটা এখনও পুরোপুরি সারেনি। তবে খেতাব ধরে রাখতে কঠিন ট্রেনিং করছে। এ বারও আমার কাছে ও-ই ফেভারিট।