নয়া সার্ভিস নিয়ে চাপে নেই জোকার

মেলবোর্নে ১৪ নম্বর বাছাই হয়ে নামলেও আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি নেই জোকারের। বলেন, ‘‘আমি কতটা কী পারি বা না পারি, তা আমি খুব ভাল করেই জানি। বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে কতটা কী করতে পারি, তাও জানা আছে আমার।’’

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:০৫
Share:

নোভাক জকোভিচ।—ফাইল চিত্র।

চোটের জন্য ছ’মাস কোর্টের বাইরে থাকায় টেনিস সার্কিটের উত্তেজনার আগুনে দগ্ধ হওয়ার নেশা এ ক’দিন উপভোগ করতে পারেননি। সে জন্য কম আফসোস নেই নোভাক জকোভিচের। তবে অবশেষে কোর্টে ফিরতে পেরে উত্তেজনায় টগবগ করে ফুটছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে শুরু থেকেই কঠিন প্রতিপক্ষের মুখে পড়বেন জেনেও কোর্টে নামতে মুখিয়ে রয়েছেন জোকার। এবং এই প্রত্যাবর্তনের পথে জকোভিচের অস্ত্র হচ্ছে তাঁর নতুন সার্ভ। আন্দ্রে আগাসি এবং রাদেক স্টেপানেকের পরামর্শে যে সার্ভিস এখন কাজে লাগাচ্ছেন জোকার।

Advertisement

শনিবার জকোভিচ বলেছেন, ‘‘আন্দ্রে এবং রাদেক দু’জনেই আমার সার্ভিস ভাল ভাবে বিশ্লেষণ করেছে। অনেক ভেবে চিন্তেই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এতে আমার কনুইয়ের ওপর কম চাপ পড়বে। আশা করব, কোর্টে নেমে কোনও সমস্যা হবে না।’’

গত কয়েক বছর ধরে তাঁর কনুইয়ের অবস্থা ক্রমশ খারাপ হওয়ার পরে গত ছ’মাসে সেই চোট সারিয়ে শেষে কোর্টে ফিরেছেন তিনি। সার্ভ করতে গিয়ে মারাত্মক যন্ত্রণা হত কনুইয়ে। চিকিৎসকরা জানিয়ে দেন পরিচর্যা ও বিশ্রাম ছাড়া কোনও রাস্তা নেই। এখনও যে পুরোপুরি সেরে গিয়েছে এই চোট, তাও না। জকোভিচ নিজেই বলছেন, ‘‘এখনও একশো শতাংশ সেরে গিয়েছে বলা যাবে না। তবে আমি খেলতে নামতে পারি। প্রত্যেকদিন আরও সেরে উঠছে। জানি না গোটা টুর্নামেন্টে কেমন থাকব। তবে পুরো সেরে উঠেও ছ’মাস পরে কোর্টে ফিরলে এমনই মনে হতো।’’

Advertisement

মেলবোর্নে ১৪ নম্বর বাছাই হয়ে নামলেও আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি নেই জোকারের। বলেন, ‘‘আমি কতটা কী পারি বা না পারি, তা আমি খুব ভাল করেই জানি। বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে কতটা কী করতে পারি, তাও জানা আছে আমার। যদি আমি নিজের পাফরম্যান্সকে প্রত্যাশিত স্তরে নিয়ে যেতে পারি, মানসিক ও শারীরিক ভাবে, তা হলে অনেক দূর যেতে পারব। অন্যান্য বারের মতো হয়তো এ বার এই টুর্নামেন্টে এগোবো না। অন্য ভাবে এগোবো। আসলে পরিস্থিতিটাই যে ভিন্ন।’’

এই প্রত্যাবর্তনে সার্বিয়ান তারকা এগোচ্ছেন আর এক কিংবদন্তিকে সামনে রেখে। তিনি রজার ফেডেরার। জকোভিচের মতে, ‘‘বয়সটা নেহাতই যে একটা সংখ্যা, তা তো রজারই দেখিয়ে দিয়েছে। কী ভাবে নিজের যত্ন নিয়ে ফিরে আসতে হয়, আর সঠিক প্রস্তুতি নিয়ে আসল সময়ে নিজেকে কী ভাবে ফর্মের শিখরে নিয়ে যেতে হয়, সেটা ওর কাছ থেকেই শিখেছি।’’ ৩৬ বছর বয়সে কোর্ট থেকে ছ’মাস দূরে থাকার পরেও ফিরে এসে ফেডেরারের দু-দু’টো গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতা নিয়ে ছ’বারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনজয়ী বলেন, ‘‘ছ’মাস পরে কোর্টে ফিরে ও যে জোড়া গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতবে, কেউ ভাবতে পেরেছিলেন? আসলে কোনও কিছুই অসম্ভব নয়।’’

নিজের ব্যাপারে জকোভিচ বলছেন, ‘‘এ বছর শারীরিক ভাবে কোন জায়গায় থাকতে পারব, জানি না। আসলে আমার শরীর, মন, আত্মায় শুধুই টেনিস। টেনিসটা এখনও নেশা। এখনও আগুনটা জ্বলছে আমার মধ্যে। তাই কোর্টের বাইরে থাকতে পারি না বেশি দিন।’’

ও দিকে চোট সারিয়ে ফিরে আসা আর এক তারকা স্ট্যানিসলাস ওয়ারিঙ্কা এ দিনই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলা নিশ্চিত করলেন। তিন বারের গ্র্যান্ড স্ল্যাম ওপেন চ্যাম্পিয়ন ওয়ারিঙ্কাও অবশ্য পুরোপুরি সুস্থ হয়ে নামতে পারছেন না। নিজেই সে কথা জানিয়ে বলেন, ‘‘নিজেকে সেরা জায়গায় নিয়ে যেতে এখনও শারীরিক ভাবে আমাকে অনেক তৈরি হতে হবে। টেনিস দক্ষতাতেও ঘষা-মাজা করতে হবে। সে জন্য সময় চাই।’’ মেলবোর্নে সপ্তাহ খানেক জকোভিচ, নাদালদের সঙ্গে অনুশীলনের পরে সুইস তারকা এই কথা বলছেন। কিন্তু তারকারা যেখানে নিজেদের একশো শতাংশ তৈরি না করেই গ্র্যান্ড স্ল্যামে নামছেন, সেখানে ফের না তাঁদের এই প্রবণতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement