সম্রাট: ফুরফুরে মেজাজে ট্রফি নিয়ে মেলবোর্নে পার্কের মহানায়ক নোভাক জোকোভিচ। সোমবার ভিক্টোরিয়ার রয়্যাল বটানিক গার্ডেন্সে ফোটো শুটে আট বারের চ্যাম্পিয়ন। গেটি ইমেজেস
আট নম্বর অস্ট্রেলীয় ওপেন খেতাব জিতে ওপেন যুগে মেলবোর্ন পার্কে সর্বাধিক ট্রফি জয়ের রেকর্ড গড়েও পুরোপুরি তৃপ্ত নন নোভাক জোকোভিচ। তাঁর পরের লক্ষ্য রজার ফেডেরারের জোড়া রেকর্ড। অর্থাৎ সুইস কিংবদন্তির সর্বাধিক ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয় এবং ৩১০ সপ্তাহ বিশ্ব ক্রম পর্যায়ে শীর্ষে থাকার নজির ভেঙে দেওয়া।
রবিবারই ফাইনালে ডমিনিক থিমকে হারিয়ে বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে উঠে আসা নিশ্চিত করে ফেলেছেন জোকোভিচ। এই নিয়ে ২৭৬তম সপ্তাহ। এ ভাবেই সার্বিয়ান তারকা শীর্ষস্থান ধরে রাখতে পারলে এ বছরেই ফেডেরারের রেকর্ড ভেঙে দিতে পারেন। সঙ্গে তাঁর লক্ষ্য থাকবে ২১তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম। সম্ভব হলে যে লক্ষ্য ২০২১ অস্ট্রেলীয় ওপেনেই হয়তো ছুঁয়ে ফেলতে চান তিনি। ‘‘প্রথম যখন বছরে কয়েকটা গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতলাম এবং তার পরে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলাম, তখন মাথায় এল হয়তো আমি রজার বা পিট সাম্প্রাসের রেকর্ডকে চ্যালেঞ্জ করতে পারি। ওরা সবাই টেনিসের ইতিহাসে সর্বাধিক গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার রেকর্ড গড়ছে তখন।’’
বিশ্বের এক নম্বর হিসেবে রেকর্ড গড়ার স্বপ্ন কবে দেখতে শুরু করেন তা নিয়ে জোকোভিচ বলেছেন, ‘‘বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে থাকার রেকর্ডটা আমার মাথায় প্রথমে আসেনি। যখন বেশ কয়েক বছর টানা এক নম্বর হিসেবে বছর শেষ করতে পারলাম, তখনই ব্যাপারটা ভাবতে থাকলাম। এই দুটোই আমার সব চেয়ে বড় লক্ষ্য। এতে লুকোনোর কিছু নেই।’’
আরও পড়ুন: দেশে শেষ লড়াই, আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান লি
শুধু নিজের জন্যই নয় দুই সন্তান তারা (বয়স দুই বছর) এবং স্তেফানের (বয়স পাঁচ বছর) সামনেও গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিততে চান তিনি। যাতে দুই সন্তান বুঝতে পারে, তাদের বাবা কী ভাবে টেনিসের মহার্ঘ ট্রফি জিতছে। ‘‘আমার সন্তানরা আমায় সমর্থন করছে কোর্টে, বুঝতে পারছে কী হচ্ছে, এটা সব চেয়ে বড় স্বপ্ন। ওরা আমার জীবনের দুই রত্ন। আমার জীবনের দুই আশীর্বাদ,’’ বলেন দেন জোকোভিচ।
তবে পেশাদার জীবনের লক্ষ্য পূরণ করতে গিয়ে পরিবারের কথাও মাথায় রাখতে চান তিনি। দুটোর মধ্যে ভারসাম্য রাখাটাই তাঁর লক্ষ্য। সে জন্য যদি টেনিস খেলায় কোনও আপস করতে হয়, তাতেও রাজি জোকোভিচ। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি এক জন বাবা, স্বামীও। শুধু টেনিস খেলোয়াড় নই। পেশাদার টেনিসে এত সফর করতে গিয়ে আমারও পরিবারের কথা খুব মনে হয়। সন্তানেরা বড় হচ্ছে। ওদের সঙ্গে আমারও সময় কাটাতে খুব ইচ্ছে করে। সেরা বাবা হতে ইচ্ছে করে। তাই এমন একটা সময় চলে এসেছে যখন আমাকেও সফরে কাটছাঁট করতে হতে পারে। সব সময় আমি সফর করব, এটা এখন না-ও হতে পারে।’’
আগামী কয়েক মরসুমে তাই তিনি কী ভাবে পেশাদার টুর পরিকল্পনা করছেন, তার ইঙ্গিত দেন জোকোভিচ, ‘‘হয়তো এর পরে আমি পেশাদার টুরে এত খেলব না। বেছে বেছে প্রতিযোগিতায় নামব।’’ ঠিক রজার ফেডেরারের মতো। ফেডেরারও পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে মরসুমের প্রথম প্রতিযোগিতা এটিপি কাপে খেলেননি। ওপেন যুগে জোকোভিচই প্রথম খেলোয়াড় যিনি তিনটি আলাদা দশকে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের নজির গড়লেন। সব মিলিয়ে কেন রোজওয়ালের পরে দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে।