মারিনের কাছে জিতে সেমিফাইনালে হার

‘সিন্ধুর জন্য কেউ বোধহয় এর পর পুরনো রেফারেন্সটা টানবে না’

দুবাইয়ে তখন সকাল সাড়ে ন’টা। জিজ্ঞেস করা হল না ফোনটা রিসিভ করার সময় তিনি কোথায়? আশেপাশে লোকের আনাগোনা। আর কথাবার্তা থেকে সাহসী আন্দাজের চেষ্টা করছি এবিপি-র সঙ্গে মিনিট ছয়েক কথা বলার সময় ব্রেকফাস্ট রুমে ছিলেন পুল্লেলা গোপীচন্দ। উচ্ছ্বসিত নন কেন পরে বোঝা গেল। আর দশ ঘণ্টা পরেই তো ওয়ার্ল্ড সুপার সিরিজ ব্যাডমিন্টনে সিন্ধুর সেমিফাইনাল ম্যাচ রয়েছে।দুবাইয়ে তখন সকাল সাড়ে ন’টা। জিজ্ঞেস করা হল না ফোনটা রিসিভ করার সময় তিনি কোথায়? আশেপাশে লোকের আনাগোনা। আর কথাবার্তা থেকে সাহসী আন্দাজের চেষ্টা করছি এবিপি-র সঙ্গে মিনিট ছয়েক কথা বলার সময় ব্রেকফাস্ট রুমে ছিলেন পুল্লেলা গোপীচন্দ। উচ্ছ্বসিত নন কেন পরে বোঝা গেল। আর দশ ঘণ্টা পরেই তো ওয়ার্ল্ড সুপার সিরিজ ব্যাডমিন্টনে সিন্ধুর সেমিফাইনাল ম্যাচ রয়েছে।

Advertisement

গৌতম ভট্টাচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:০৯
Share:

প্রশ্ন: একশো উনিশ দিন লাগল জাতীয় প্রতিশোধটা নিতে। কেমন লাগছে?

Advertisement

গোপীচন্দ: গুড উইন। সিন্ধুর জন্য খুব ইম্পর্ট্যান্ট।

Advertisement

প্র: শুধু ইম্পর্ট্যান্ট কী বলছেন। রিওর অলিম্পিক্স ফাইনালে হারের পর গোটা দেশ তো এই একটা ম্যাচের দিকে চাতক পাখির মতো তাকিয়ে ছিল। কবে আবার পিভি সিন্ধু বনাম ক্যারোলিনা মারিন হবে।

গোপীচন্দ: আমার মনে হয় এ রকম বড় টুর্নামেন্টে সিন্ধু যে ম্যাচ জিতবে সেটাই ওর পক্ষে ইম্পর্ট্যান্ট। হ্যাঁ মারিন নিয়ে নিশ্চয়ই একটা আলাদা ঔৎসুক্য ছিল। তবে দুবাইয়ে জেতার পর মনে হয় ওই অলিম্পিক্স ম্যাচ নিয়ে রেফারেন্সটা আর ভবিষ্যতে থাকবে না।

প্র: কী করে বলছেন থাকবে না। সোনা আর রুপোর লড়াই কি লোকে চট করে ভুলে যায়?

গোপীচন্দ: আমার মনে হয় আগামী দিনে সিন্ধু আর মারিনের মধ্যে আরও স্মরণীয় ম্যাচ হবে। ওদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ভবিষ্যতের বিশ্ব ব্যাডমিন্টনে একটা মনে রাখার মতো রাইভ্যালরি হতে চলেছে।

সুপার সিরিজ ফাইনালসের শেষ চারে কোরিয়ার সুং জি হিউনের বিরুদ্ধে ১৫-২১, ২১-১৮, ১৫-২১ হারলেন পিভি সিন্ধু। গ্রুপে টানা তিনটে ম্যাচ জেতা ছাড়াও বিশ্বের এক নম্বর তাই জু-কে হারিয়েছেন যিনি, সেই দুরন্ত ফর্মে থাকা সুংয়ের বিরুদ্ধে লড়েও পারলেন না সিন্ধু।

প্র: সিন্ধুর রিওর স্ট্র্যাটেজি আর কালকের দুবাইয়ের মধ্যে কী তফাত ছিল?

গোপীচন্দ: আমরা অন্য ভাবে খেলেছি। স্ট্র্যাটেজিটা বদলে ছিলাম।

প্র: ম্যাচ যাঁরা দেখেছেন তাঁদের কথা অনুযায়ী লম্বা লম্বা মেরে মারিনকে পেছনে রাখা হয়েছিল। বেশি নেটে আসতে দেওয়া হয়নি।

গোপীচন্দ: স্ট্র্যাটেজি নিয়ে কথা বলতে চাই না। ওটা গোপন থাক। তবে মারিন আমাদের কাজটা সহজ করে দেয় সেকেন্ড গেমে খারাপ খেলে। এই গেমে কিছু বাজে পয়েন্ট ও সিন্ধুকে দিয়েছে।

প্র: কোচ হিসেবে সিন্ধুকে প্রতিহিংসার ম্যাচের জন্য তৈরি করাটা নিশ্চয়ই কঠিন ছিল। রিওর একটা উথালপাতাল করা হ্যাংওভার কাটিয়ে শুধুই এটার জন্য কনসেনট্রেট করানো তো সহজ নয়।

গোপীচন্দ: বিশ্বমানের অ্যাথলিট হিসেবে এ সব হ্যাংওভারের বাইরে নিজেকে রাখতেই হবে। প্রত্যেকটা ম্যাচ এমনিতেই কঠিন। তার ওপর হ্যাংওভার জড়ো করলে আপনার চাপ সীমাহীন হয়ে যাবে।

প্র: তবু মারিন সামনে। আবার গোটা ব্যাডমিন্টন সমাজ তাকিয়ে। একটা হ্যাংওভার তো হয়ই।

গোপীচন্দ: ইয়েস অ্যান্ড নো। সিন্ধু এমনিতেও খুব মোটিভেটেড ছিল ম্যাচটার জন্য। আর এটা এত বড় টুর্নামেন্ট যে আপসেই মোটিভেশন এসে যায়। প্রতিদ্বন্দ্বী কে ভাবার দরকার হয় না।

প্র: আপনাকে এত নির্লিপ্ত শোনাচ্ছে বলে খুব অবাক লাগছে। কোচ হিসেবে মারিন ম্যাচ তো আপনারও পরীক্ষা ছিল।

গোপীচন্দ: মনে করি না। বললাম তো ওটা পেছনে চলে গেছে। সামনে নতুন দিন। নতুন সব পরীক্ষা।

প্র: যেমন?

গোপীচন্দ: যেমন এ বারের পরীক্ষা সবচেয়ে কঠিন। এ বার সিন্ধু খেলবে সুং জি হিউনের সঙ্গে। সুং জি-কে এর আগে সিন্ধু বেশ কয়েক বার হারিয়েছে। কিন্তু এই টুর্নামেন্টে সুং জি হ্যাজ বিন দ্য ব্রাইটেস্ট। ইজিলি বেস্ট প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট।

প্র: সেমিফাইনালে যাই হোক, চিন ওপেন থেকে নতুন করে শুরু করা এই সিন্ধুকে দেখে বোঝা যাচ্ছে অলিম্পিক্সের পর এত সব সংবর্ধনা আর পুরস্কার ওঁকে স্পর্শ করেনি।

গোপীচন্দ: না করেনি।

প্র: সত্যি কথা বলুন। কোচ হিসেবে আপনার কি ভয় হয়নি। দেশব্যাপী আবেগের তোড়ে আপনার প্রিয় ছাত্রী ভেসে যেতে পারেন।

গোপীচন্দ: একটুও হয়নি। প্রথমত সিন্ধুর মাথা খুব ঠান্ডা। প্রচণ্ড খাটতে পারে। আর ওর পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড এমন যে এক মিনিটের জন্য ওকে নিয়ে আমার কোনও আশঙ্কা হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement