নোভাককে চাপে ফেলার মতো কাউকে দেখছি না

অস্ট্রেলীয় ওপেনের প্রথম সপ্তাহ কেটে গেল। নাদালের ছিটকে যাওয়াটুকু বাদ দিলে এখনও পর্যন্ত মোটামুটি প্রত্যাশা মতোই এগোচ্ছে টুর্নামেন্ট। সেরারা প্রত্যেকে দুরন্ত ছন্দে আছে আর সেরার মতোই খেলছে। কয়েকটা পয়েন্টের জন্য তো অসাধারণ লড়াইও দেখলাম!

Advertisement

বরিস বেকার

শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৬ ০৩:১২
Share:

অস্ট্রেলীয় ওপেনের প্রথম সপ্তাহ কেটে গেল। নাদালের ছিটকে যাওয়াটুকু বাদ দিলে এখনও পর্যন্ত মোটামুটি প্রত্যাশা মতোই এগোচ্ছে টুর্নামেন্ট। সেরারা প্রত্যেকে দুরন্ত ছন্দে আছে আর সেরার মতোই খেলছে। কয়েকটা পয়েন্টের জন্য তো অসাধারণ লড়াইও দেখলাম! সব মিলিয়ে টুর্নামেন্ট যাকে বলে জমে গিয়েছে!

Advertisement

নোভাক এর মধ্যে তিন রাউন্ড পেরিয়ে গেল। একমাত্র শেষ ম্যাচটাতেই আন্দ্রিয়াস সেপ্পি ওকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সামান্য পরীক্ষায় ফেলেছিল। তবে নোভাক একদম ঠিক সময় নিজের সেরা টেনিস বের করে এনে জেতার জন্য যা যা দরকার, সে সবই করে ম্যাচটা বের করে নিল। ইদানীং এই সময়ে জ্বলে ওঠাটা নোভাক একেবারে নিজস্ব ট্রেডমার্ক করে নিয়েছে! পরের ম্যাচে ওর সামনে আবার বিশ্বের ছ’নম্বর, ফরাসি জিল সিমঁ। যাকে হারাতে নোভাককে খাটতে হবে বলেই মনে হচ্ছে। তবে সেটা আখেরে ওর জন্য ভালই হবে।

অস্ট্রেলীয় ওপেনের প্রথম সপ্তাহে আমার কাছে ধাক্কা বলতে অবশ্যই নাদালের ছিটকে যাওয়া। ওকে প্রথম রাউন্ডে হারতে দেখে সত্যিই অসম্ভব অবাক হয়েছি কারণ গত ছ’মাসে নাদাল শুধু ভাল খেলছিল না, ক্রমশ উন্নতি করছিল। দোহায় ফাইনালে গিয়েছে, এটিপি ট্যুর ফাইনালসের শেষ চারে গিয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা ইদানীং অনেক বেশি ধারাবাহিকতা দেখাচ্ছে। তবে এটাও ঠিক, প্রথম রাউন্ডে ও এমন প্রতিপক্ষের সামনে পড়ল যে শুধু ভাল প্লেয়ারই নয়, ছোটবেলা থেকে ওর খেলাটাও চেনে। স্বদেশি এবং বন্ধু ফের্নান্দো ভের্দাস্কো।

Advertisement

দু’জনেই স্প্যানিশ বলে দুই বন্ধুর মধ্যে কিছু পুরনো ইতিহাস রয়েছে, যা কখনও গরগরে আবার একটু জটিলও। আমার তাই মনে হয়, প্রথম রাউন্ডে রাফা অন্য কারও সামনে পড়লে ওর সমস্যা হত না। কিন্তু রাফার সেরা সময়েও ফের্নান্দো ওকে বেশ কয়েক বার ভাল রকম চাপে ফেলেছিল। ২০০৯-এ দুই স্পেনীয়ের মধ্যে সেই পাঁচ সেটের রক্তক্ষয়ী সেমিফাইনালটা নিশ্চয়ই মনে আছে। পাঁচ ঘণ্টা চোদ্দো মিনিটের ম্যাচে নাদাল শেষ পর্যন্ত জিতেছিল ৬-৭, ৬-৪, ৭-৬, ৬-৭, ৬-৪। আমার দেখা অস্ট্রেলীয় ওপেনের অন্যতম সেরা ম্যাচ। আর এ বার কোর্টে নামার সময় ওই ম্যাচটা মনে হয় ওদের দু’জনের মাথাতেই ঘুরপাক খাচ্ছিল!

মেয়েদের ড্র-এ বিশ্বের দু’নম্বর সিমোনা হালেপকে হারতে দেখে অবশ্য একেবারেই অবাক হইনি। কিছুদিন যাবৎ ও একেবারেই ফিট নেই। অন্য দিকে, সেরিনা, মারিয়া, আজারেঙ্কারা সবাই দারুণ ফর্মে। তবু আমার কেমন যেন মনে হচ্ছে, এ বার তাক লাগানোর সেরা সুযোগটা রয়েছে নতুন মেয়েদের কারও সামনে। এটা বলছি কারণ মেয়েদের দিকে এ বার খেলোয়াড়দের মধ্যে বৈচিত্র অনেক বেশি। এক জনের সঙ্গে অন্য জনের খেলার ধরনগুলো আলাদা। তাই এই টুর্নামেন্টে নতুনদের মধ্যে কেউ যদি নিজের সেরাটা দিতে পারে, তার সামনে কিন্তু গ্র্যান্ড স্ল্যামের মঞ্চে নজর কাড়ার দারুণ সুযোগ!

ছেলেদের দিকে লড়াইটা বরং অনেক বেশি গতানুগতিক হচ্ছে। সেরাদের মধ্যে নোভাক, অ্যান্ডি, রজার, স্ট্যানরা প্রত্যেকেই সহজে জিতছে। প্রত্যেকেই খুব ভাল ফর্মে এবং ভক্তদের হৃদয়ে কোনও রকম অনাবশ্যক হৃদকম্প না ঘটিয়ে প্রত্যাশা মতোই দ্বিতীয় সপ্তাহে পৌঁছে গিয়েছে। ওদের চাপে ফেলার মতো নতুন কাউকে কিন্তু দেখছি না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement