নীরজ চোপড়া। —ফাইল চিত্র।
নীরজ চোপড়ার অন্যতম প্রধান প্রতিপক্ষ পাকিস্তানের আরশাদ নাদিম। যে জ্যাভলিন নিয়ে এত দিন বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় দাপিয়ে বেড়িয়েছেন, সেটি খারাপ হয়ে গিয়েছে। সামনেই অলিম্পিক্সের মতো প্রতিযোগিতা রয়েছে। অথচ অর্থাভাবে নতুন জ্যাভলিন কিনতে পারছেন না নাদিম।
বিশ্বের অন্যতম সেরা জ্যাভলিন থ্রোয়ার হিসাবে ধরা হয় পাকিস্তানের নাদিমকে। যে কোনও বড় মাপের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অ্যাথলেটিক্সে একমাত্র নাদিমকে ঘিরে পদকের স্বপ্ন দেখেন পাকিস্তানের ক্রীড়াপ্রেমীরা। ২৭ বছরের অ্যাথলিটের সেরা ফল ৯০.১৮ মিটার। এত দূরে জ্যাভলিন নীরজ এখনও ছুড়তে পারেননি। টোকিয়ো অলিম্পিক্সে সোনা জয়ীর সেরা ফল ৮৯.৯৪ মিটার। ২০২২ কমনওয়েলথ গেমসে সোনাজয়ী নাদিম পড়েছেন বিপদে। অলিম্পিক্সের আগে নতুন জ্যাভলিন কেনার জন্য পাকিস্তানের অ্যাথলেটিক্স সংস্থা এবং কোচের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাগুলিতে এখন যে মানের জ্যাভলিন ব্যবহার করা হয়, তা নেই নাদিমের। ব্যবহারযোগ্য একটি জ্যাভলিন নিয়ে গত সাত-আট বছর বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় নেমেছেন তিনি। দিনের পর দিন ব্যবহারের ফলে তার অবস্থাও খারাপ। যা নিয়ে অলিম্পিক্সে ভাল ফল করা কার্যত অসম্ভব। নাদিম বলেছেন, ‘‘আমার জ্যাভলিনটার অবস্থা বেশ খারাপ। ওটা দিয়ে আর কিছু হওয়ার নয়। ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়জীবন শুরু করার আগে কিনেছিলাম। আমার সব বড় সাফল্যে সঙ্গী সেটাই। কিন্তু প্যারিস অলিম্পিক্সের আগে নতুন জ্যাভলিন প্রয়োজন। তাই অ্যাথলেটিক্স সংস্থা এবং কোচের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছি। অলিম্পিক্স স্তরে সাফল্য পাওয়ার জন্য ঠিকঠাক সরঞ্জাম এবং অনুশীলন প্রয়োজন।’’ এত দিন কেন নতুন জ্যাভলিন কেনার কথা ভাবেননি? নাদিম জানিয়েছেন, আধুনিক সেরা মানের জ্যাভলিন কেনার মতো টাকা তাঁর নেই। তাই ইচ্ছা থাকলেও কিনতে পারেননি। পরিস্থিতি এমন জায়গায় এসেছে, অলিম্পিক্সের আগে নতুন জ্যাভলিন হাতে না পেলে প্রতিযোগিতায় নামা কঠিন।
নাদিম শুধু নীরজের অন্যতম প্রধান প্রতিপক্ষই নন, ঘনিষ্ঠ বন্ধুও। পাক অ্যাথলিটের সঙ্গে নীরজের ব্যক্তিগত সম্পর্ক বেশ ভাল। দু’জনে সব সময় পরস্পরের প্রশংসা করেন। অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন। দু’জনের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। আবার প্রতিযোগিতায় মুখোমুখি হলে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় তাঁদের মধ্যে। তা নিয়ে নাদিম বলেছেন, ‘‘নীরজের সঙ্গে আমার স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা রয়েছে। আমরা পরস্পরকে শ্রদ্ধা করি। আমাদের মধ্যে পাকিস্তান-ভারত তিক্ত সম্পর্কের কোনও প্রভাব নেই। আমাদের প্রচুর কথা হয়। কথা বলতে ভাল লাগে আমাদের। আমরা এমন একটা খেলা খেলি, যাতে দীর্ঘ দিন ধরে ইউরোপীরা দাপট দেখাচ্ছে। এখন আমরা ওদের কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিই।’’
নীরজ ঘনিষ্ঠ বন্ধু হলেও নিজের সমস্যার কথা তাঁকে জানাননি নাদিম। তাঁর আশা, পাকিস্তানের অ্যাথলেটিক্স ফেডারেশন সময় মতো পদক্ষেপ করবে। প্যারিস অলিম্পিক্সে আরও এক বার বন্ধু নীরজের সঙ্গে পদকের লড়াইয়ে নামতে পারবেন।