Cricket

বিরাট-বার্তায় ‘এইট প্যাক’ নবদীপ হাজির

বাড়িতে বসে যদিও সময় নষ্ট করেননি নবদীপ। অধিনায়ক বিরাট কোহালির নির্দেশ ছিল শক্তি বাড়ানোর।

Advertisement

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২০ ০৭:০৩
Share:

দৃঢ়প্রতিজ্ঞ: তিন ঘণ্টা করে জিমে সময় দিয়ে নতুন চেহারায় নবদীপ। টুইটার

আইপিএলে বাজিমাত করার লক্ষ্যে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির উড়ান ধরার জন্য তৈরি নবদীপ সাইনি! এই মুহূর্তে যাঁকে ভারতীয় ক্রিকেটে নতুন প্রজন্মের সব চেয়ে প্রতিশ্রুতিমান পেসার মনে করা হচ্ছে। দেশের দ্রুততম পেসারদেরও এক জন তিনি। ইতিমধ্যেই ব্যাগ গুছিয়ে ফেলেছেন। হাতে বিমানের টিকিট পাওয়ার অপেক্ষা। শেষ চার মাস বাড়িতে থাকার পরে আর যেন তর সইছে না রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের তরুণ পেসারের।

Advertisement

বাড়িতে বসে যদিও সময় নষ্ট করেননি নবদীপ। অধিনায়ক বিরাট কোহালির নির্দেশ ছিল শক্তি বাড়ানোর। অধিনায়কের নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন নবদীপ। ছিপছিপে চেহারার পেসার হাজির ‘এইট প্যাক’ নিয়ে। শেষ পাঁচ মাসে নিজের খাদ্যাভ্যাস বদলেছেন। তেল, মশলা কমিয়ে প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি খেয়েছেন। বাড়িয়েছেন ট্রেনিংয়ের সময়ও। প্রায় তিন ঘণ্টা জিম করছেন। দু’ঘণ্টা সময় দিচ্ছেন বোলিংয়ে।

কী করে এই পরিবর্তন সম্ভব হল ভারতীয় পেসারের? সোমবার আনন্দবাজারকে ফোনে নবদীপ বললেন, ‘‘গত বার আইপিএলে ১১টি উইকেট পেয়েছিলাম। তখনই বিরাট ভাই বলে দিয়েছিল, সামনের বছর আরও বেশি উইকেট পেতে হবে। বলের গতির সঙ্গেই নিজের শক্তি আরও বাড়াতে হবে। যাতে আমাকে দেখলেও ব্যাটসম্যানেরা ভয় পায়।’’ যোগ করেন, ‘‘বিরাট ভাইয়ের নির্দেশ পালন করার চেষ্টা করেছি। যে পাঁচ মাস সময় পেয়েছি, নিজেকে উজাড় করে দিয়েছি জিমে। পাশের বাড়ির বন্ধুর জিম আছে। শুধু আমার জন্য তা খোলা রাখত ওরা। দিনে তিন ঘণ্টা ট্রেনিং করার ফল পেয়েছি।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: বুমরাদের জন্য খেলা-ঘর, সঙ্গে যাবেন হেয়ারড্রেসার

শুধু ট্রেনিং নয়, খাদ্যতালিকারও পরিবর্তন করতে হয়েছে ভারতীয় পেসারকে। তাঁর কথায়, ‘‘হরিয়ানার ছেলে আমি। তেল, মশলা ছাড়া কিছু খাওয়ার কথা ভাবতেই পারি না। কিন্তু এখন আমার খাদ্যতালিকা সম্পূর্ণ অন্য রকম। প্রোটিন জাতীয় খাদ্যের মাত্রা বেড়েছে। এটা ফাঁস করব না, কী খাচ্ছি। তবে এইটুকু জেনে রাখুন, বাটার চিকেন, ছোলে-বাটোরে আপাতত সবই বন্ধ।’’

এই বাহুবলী চেহারা তৈরি করার অনুপ্রেরণা অবশ্যই তাঁর অধিনায়ক। বিরাট নিজেও সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের ট্রেনিংয়ের ভিডিয়ো পোস্ট করেন। যা দেখে নবদীপের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ক্যাপ্টেনই যখন এতটা ফিট, আমাদের তো সেই পথে হাঁটতেই হবে। ব্যাটসম্যান হয়েও ওয়েট ট্রেনিং করতে পিছু হটে না। আমরা তো পেস বোলার। আমাদের তো আরওই শক্তিশালী হয়ে উঠতে হবে।’’ যোগ করছেন, ‘‘অধিনায়ক সব সময় বলে, ফিটনেসের সঙ্গে কোনও আপস নয়। সেই উপদেশটা আমার মনে গেঁথে গিয়েছে।’’

আরও পড়ুন: সরকারের লিখিত অনুমতি পেল বোর্ড

এ বারের আইপিএল ভারতে না হওয়ার আক্ষেপ রয়েছে নবদীপের মনে। বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের পরিবেশ পাবেন না দুবাই অথবা আবু ধাবিতে। একদিকে তিনি খুশি ক্রিকেট শুরু হওয়ায়। আবার, উদ্বেগও রয়েছে আমিরশাহির পিচের চরিত্র নিয়ে। নবদীপের কথায়, ‘‘শুনেছি মরুদেশে এই সময়টা খুব গরম হবে। পিচে খুব একটা আর্দ্রতা থাকে না। ওখানকার পিচ ব্যাটসম্যানদের সাহায্যই বেশি করে। এ ধরনের পিচে বল করা যে কোনও বোলারের কাছেই বড় পরীক্ষা।’’ কী ভাবে সফল হওয়া যায়? নবদীপের জবাব, ‘‘এ ধরনের পরিবেশ বা পিচে অনেক বৈচিত্র আনতে হয় সফল হওয়ার জন্য। লেংথে বল করলেও ব্যাটসম্যান অনায়াসে রান করে বেরিয়ে যাবে। গতিতে বল করার পাশাপাশি স্লোয়ার বল (অপেক্ষাকৃত কম গতিতে যে বল করা হয় ব্যাটসম্যানকে ঠকানোর জন্য) করে সার্থক মিশ্রণে ব্যাটসম্যানকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করতে হবে।’’

প্রত্যেক বারের মতো এ বার আর ইচ্ছে মতো, খোলা মনে বাইরে ঘুরতে পারবেন না ক্রিকেটারেরা। করোনার সংক্রমণ এড়াতে জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে থাকতে হবে ক্রিকেটারদের। কেউ বাইরে যাবেন না। বাইরে থেকে কেউ ভিতরে আসবেন না। বলয়ের মধ্যেই ক্রিকেটারদের জন্য মজুত থাকবে সব কিছু। এই পরিস্থিতির মধ্যে থাকতে সমস্যা হবে না? নবদীপের জবাব, ‘‘আমরা ক্রিকেট খেলতে যাচ্ছি। সেটাই হবে আমাদের মূল উদ্দেশ্য। বাইরে ঘুরে বেড়িয়ে সংক্রমণ নিয়ে ঘরে ফিরলে সবাই সমস্যায় পড়বে। সেটা কখনওই হতে দেওয়া যায় না। আর জৈব সুরক্ষা বলয়ের নিয়ম ভাঙলে কি হতে পারে তা জোফ্রা আর্চারকে দেখে শিখেছি। কখনও সেই ভুল করতে চাই না।’’ এ বারের আইপিএলে নবদীপদের পরীক্ষা শুধু মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও। মাঠে চলবে ক্রিকেটীয় লড়াই, বাইরে করোনার সঙ্গে যুদ্ধ!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement