যুযুধান: লড়ছেন রাজা-মন্ত্রী। মঙ্গলবার জাতীয় স্তরের দাবা প্রতিযোগিতা শুরু হল কল্যাণীর এক বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। নিজস্ব চিত্র
কারও টি-শার্টের পিছনে লেখা ওড়িশা, কারও দিল্লি। কেউ এসেছে তেলঙ্গানা থেকে, কেউ আবার বাংলারই ভূমিপুত্র। সারবাঁধা টেবিলে চলছে রাজা-মন্ত্রী-গজের লড়াই।
মঙ্গলবার এই ছবিই দেখা গেল কল্যাণীর জেআইএস ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের বি সি রায় অডিটোরিয়ামে। এ দিন সেখানে শুরু হয়েছে ৪৪তম জাতীয় সাব-জুনিয়র দাবা চ্যাম্পিয়নশিপ। প্রতিযোগিতার আয়োজকদের তরফে জানানো হয়েছে, এই জেলায় এত বড় মাপের দাবা প্রতিযোগিতা এর আগে হয়নি।
বেঙ্গল চেস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অতনু লাহিড়ী বলেন, ‘‘বাংলার দাবার ইতিহাসে এই প্রতিযোগিতার একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। এই প্রথম জাতীয় স্তরের কোনও দাবা প্রতিযোগিতা কলকাতা বা হাওড়ার বাইরে হচ্ছে।’’
তিনি জানান, এই চ্যাম্পিয়নশিপকে কার্যত অনুর্ধ্ব ১৬ বিশ্ব দাবা প্রতিযোগিতার বাছাই পর্ব হিসাবে ধরা হচ্ছে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ওই বিশ্ব দাবার আসর প্রথমবারের জন্য ভারতে বসতে চলেছে। সাব-জুনিয়র দাবা চ্যাম্পিয়নশিপে সফল প্রতিযোগীরা এশিয়ান এবং ওয়ার্ল্ড ইয়ুথ চেস চ্যাম্পিয়নশিপে যোগদানের যোগ্যতা অর্জন করবে।
প্রতিটি রাজ্য থেকে অনূর্ধ্ব ১৫’র সেরা দাবাড়ুরা এখানে খেলার সুযোগ পেয়েছে। অতনু বলেন, “প্রতি রাজ্যের সেরা চার দাবাড়ু, বিগত প্রতিযোগিতার বাছাই খেলোয়াড় অথবা কমনওয়েলথ বা এশিয়ান গেমসে মেডেল পেয়েছে এমন খেলোয়াড় যোগ দিয়েছে। পাশাপাশি কোনও রাজ্য যদি কাউকে বিশেষ প্রতিভাসম্পন্ন বলে সুপারিশ করে, তারাও এখানে খেলার
সুযোগ পেয়েছে।”
এ দিন মূলত বাছাই খেলোয়াড়েরাই ওই প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছিল। বালক বিভাগে প্রত্যাশা মতোই জিতেছে শীর্ষ বাছাই কৌস্তভ চট্টোপাধ্যায় এবং তৃতীয় বাছাই আরণ্যক ঘোষ। তবে নজর কাড়তে পারেননি দ্বিতীয় বাছাই দর্শ বনশল। মধ্যপ্রদেশের দর্শ ড্র করেছে মহারাষ্ট্রের সংকল্প গুপ্তের সঙ্গে। বালিকা বিভাগে শীর্ষ বাছাই মহারাষ্ট্রের দিব্যা দেশমুখের পাশাপাশি জয় পেয়েছে দ্বিতীয় বাছাই ওড়িশার মোলালিসা সাইনা। প্রতিযোগিতায় বাংলার প্রতিনিধিত্ব করছে বৃষ্টি মুখোপাধ্যায়। সে-ও এ দিন জিতেছে বলে জানা গিয়েছে।
এই চ্যাম্পিয়নশিপের মূল উদ্যোক্তা বেঙ্গল চেস অ্যাসোসিয়েশন। সহযোগিতায় রয়েছে মৌলনা আবুল কালাম ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (মুকুট) এবং নদিয়া ডিস্ট্রিক্ট চেস অ্যাসোসিয়েশন। এ দিন দুপুরে প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ তাপস মণ্ডল এবং মুকুটের উপাচার্য সৈকত মৈত্র। প্রতিযোগিতা শেষ হবে আগামী ২৫ জুলাই।