আইপিএলেও ভুগবে নাইটরা

অ্যাকশন বদলালে কমে যেতে পারে নারিনের ধার

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যাকে বোলিংয়ের ডন ব্র্যাডম্যান বলা যায়, সে না থাকলে একটা দলের কী অবস্থা হতে পারে, তা সিএল টি-টোয়েন্টির ফাইনালে কেকেআর-কে দেখেই বোঝা গেল। সুনীল নারিনের মতো একজন বোলার, যার সারা টুর্নামেন্টে ইকনমি রেট ৫.৩০, তাকে না পাওয়া মানে যে কত বড় ক্ষতি, তা নাইটদের টের পেতে হতে পারে পরের আইপিএলেও। যদি ওরা পুরনো ছন্দের নারিনকে না পায়। নারিনের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টির আম্পায়াররা যেটা করলেন, তাতে এ বার সারা দুনিয়ায় বহু অফ স্পিনারই সাবধান হয়ে যাবে।

Advertisement

দীপ দাশগুপ্ত

শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৪৩
Share:

ধোনির দিনে ম্লান গম্ভীর।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যাকে বোলিংয়ের ডন ব্র্যাডম্যান বলা যায়, সে না থাকলে একটা দলের কী অবস্থা হতে পারে, তা সিএল টি-টোয়েন্টির ফাইনালে কেকেআর-কে দেখেই বোঝা গেল।

Advertisement

সুনীল নারিনের মতো একজন বোলার, যার সারা টুর্নামেন্টে ইকনমি রেট ৫.৩০, তাকে না পাওয়া মানে যে কত বড় ক্ষতি, তা নাইটদের টের পেতে হতে পারে পরের আইপিএলেও। যদি ওরা পুরনো ছন্দের নারিনকে না পায়।

নারিনের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টি-টোয়েন্টির আম্পায়াররা যেটা করলেন, তাতে এ বার সারা দুনিয়ায় বহু অফ স্পিনারই সাবধান হয়ে যাবে। পনেরো ডিগ্রির সুবিধাটা তারা যে ভাবে নিতে চাইত, এ বার থেকে বোধহয় ততটা আর নিতে পারবে না।

Advertisement

নারিনের ঘটনা প্রসঙ্গে এক ক্রিকেট আড্ডায় জানতে পারলাম, জুন-জুলাইয়ে আইসিসি-র এক সভায় নাকি কথা হয় যে, চাকিং ব্যাপারটা এ বার কড়া হাতে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।

আইসিসি সভায় বলা হয়েছিল, যেখানে শুধু পাকিস্তানেই এমন ২৭টা ঘটনা ঘটেছে, সেখানে এটা যে সারা ক্রিকেট বিশ্বে মহামারির আকার ধারণ করবে না, তা কে বলতে পারে? সে জন্যই এখন থেকে একে নিয়ন্ত্রণ করা খুবই দরকার বলে নাকি রব উঠেছিল সভায়। সে জন্যই আজমল থেকে শুরু করে সিএল টি-টোয়েন্টিতেও পরপর এমন কড়া রিপোর্ট দিলেন আম্পায়াররা। যারা রোল মডেল, যারা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সফল বোলার, তারা যদি ছাড় পেয়ে যায়, তা হলে জুনিয়র বোলাররারাও ওদের মতো অন্যায় করতে শিখবে। কনসেপ্টটা এটাই।

কিন্তু নারিনের মতো নির্ভরযোগ্য বোলার, যাকে কেন্দ্র করে একটা দল তাদের গেমপ্ল্যান তৈরি করে, সে যখন অচল হয়ে যায়, তখন সেই দলটা একটা বড় ধাক্কা খায়। ফাইনালে যেমন খেল কেকেআর। ভারতের বিরুদ্ধে আসন্ন সিরিজে যেমন ধাক্কা খেতে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নারিনকে তো ওরা ভারত সফরেও রাখছে না। সিএল টি-টোয়েন্টিতে প্রথম দুটো ম্যাচে চার ওভারে ন’রান করে দিয়েছিল ও। এমন বোলার থাকা মানে বিপক্ষের ব্যাটসম্যানরা চার ওভার কম পায় রান তোলার জন্য। ডেথ-এ নারিনের দুটো ওভার মানেই ব্যাটসম্যানদের উপর চাপ দ্বিগুন। কিন্তু নারিন না থাকলে এই স্ট্র্যাটেজির দফা-রফা। কেকেআরের ক্ষেত্রে ফাইনালে যেটা হল।

নারিনকে ছাড়া যে কেকেআরের কিছুই নেই, এ কথা একেবারেই বলছি না। স্কোরবোর্ডে বড় রান তুলে দেওয়ার মতো ব্যাটসম্যান আছে। নারিনকে না পাওয়ার দুর্বলতা অল্প হলেও ঢাকার জন্য কুলদীপ যাদবের মতো স্পিনার আছে। কিন্তু নারিন ফ্যাক্টরের কোনও নিখুঁত বিকল্প আছে বলে আমার মনে হয় না। নারিন দলে না থাকলে পুরো স্ট্র্যাটেজিটাই বদলাতে হবে নাইটদের। আর ও নিজেকে শুধরে ফিরিয়ে আনলেও কতটা কার্যকর হয়ে উঠতে পারবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। কনুই না ভাঙলে নারিনের বলে আর আগের মতো ধার থাকার সম্ভাবনা কম।

সে জন্যই হয়তো অনেকে বলতে শুরু করেছেন যে সুযোগ বুঝেই নারিনকে পরপর দু’বার ‘কল’ করে ঠিক ফাইনালের আগে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে দেওয়া হল। যাতে নারিনহীন কেকেআর আগের মতো লড়তে না পারে। এই বিতর্কে না ঢুকে শুধু একটা কথাই বলতে পারি। নারিন যদি ভুল করে থাকে, তা হলে সঠিক সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে। কবে সিদ্ধান্তটা নেওয়া হল, সেটা এখানে বড় কথা নয়। সিদ্ধান্ত নিতে যদি দেরি হয়েও থাকে, তা হলেই বা ক্ষতি কী? যদি কারও মনে হয়, নারিন অন্যায়ের শিকার তা হলে তার সামনে ‘অ্যাপিল’-এর রাস্তা খোলাই আছে। বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সামনে তো বসার সুযোগ থাকছে নারিনের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর: কেকেআর ১৮০-৬ (গম্ভীর ৮০, পাণ্ডে ৩২, নেগি ৫-২২)। চেন্নাই সুপার কিংস (১৮.৩ ওভারে ১৮৫-২ (রায়না ১০৯ ন.আ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement