চ্যাম্পিয়ন: ট্রফি নিয়ে স্কুলের সামনে খোলোয়াড়েরা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
সুব্রত কাপ ফুটবলে উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় অনূর্ধ্ব-১৭ বছর বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হল গোপালনগরের নহাটা হাইস্কুল। বৃহস্পতিবার বিধাননগরে আয়োজিত ফাইনালে তারা ২-০ গোলে হারিয়ে দেয় অশোকনগরের কল্যাণগড় বিদ্যামন্দির স্কুলকে। গোল দু’টি করেছে দশম শ্রেণির নিলয় দাস।
শুক্রবার নহাটা হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ নিজেদের খেলোয়াড়দের সংবর্ধনা দেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিখিলরঞ্জন তালুকদার বলেন, ‘‘আমরা স্কুলের পক্ষ থেকে যতটা সম্ভব ছাত্রদের খেলাধুলোয় উৎসাহ দিই। আমি নিজেও প্র্যাকটিসের সময় মাঠে থাকি। বাইরের প্রশিক্ষক এনে সারা বছর ফুটবল কোচিং ক্যাম্প চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।’’
অতীতে সুব্রত কাপে মহকুমা স্তরের খেলায় বহু স্কুল অংশ নিত। খেলা দেখতে মাঠে ভিড়ও হতো। সে সব বহু দিন বন্ধ। এ বার বনগাঁ মহকুমাতে সুব্রত কাপে খেলেছে মাত্র চারটি দল। এ জন্য স্কুলগুলির ক্রীড়া পরিকাঠামোকে দুষেছেন অনেকে। নহাটা হাইস্কুলে অবশ্য খেলাধুলোকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। স্কুলের নিজস্ব মাঠ রয়েছে। রোজ স্কুল ছুটির পর সেখানে ফুটবল ছাড়াও কবাডি এবং খোখো খেলার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। শিক্ষক সুশান্ত মোদক ছাত্রদের মধ্যে থেকে প্রতিভা খুঁজে বের করে তাদের তালিম দেন। সপ্তাহে তিন দিন স্কুল ছুটির পরে ছাত্রদের নিয়ে তিনি মাঠে নেমে পড়েন।
গত কয়েক বছরে ওই স্কুল থেকে কবাডি ও খো-খো মিলিয়ে প্রায় ৫০০ ছেলে স্কুলের হয়ে জেলা দলে ও ৫০ জন রাজ্য দলে সুযোগ পেয়েছে। এ বার সুব্রত কাপে ভাল ফল করতে বাইরে থেকে রামপ্রসাদ চক্রবর্তী নামে এক প্রশিক্ষককে নিয়ে আসা হয়েছিল। তিনি মে মাস থেকে সপ্তাহে চারদিন স্কুল ছুটির পর ছাত্রদের নিখরচায় প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। বনগাঁ দক্ষিণ অঞ্চল ক্রীড়া সমিতির পক্ষ থেকে অনূর্ধ্ব-১৭ বয়সীদের নিয়ে একটি লিগে ওই স্কুল রানার্সও হয়।
স্কুলের বেশিরভাগ ছাত্রই গরিব ঘরের। বাড়িতে পুষ্টিকর খাবার সে ভাবে পায় না। সুশান্তবাবু জানান, মিড-ডে মিল খেয়েই ছাত্রেরা মাঠে নামে। এ সব নিয়ে অবশ্য খেলোয়াড়রা ভাবছে না। ৯ জুলাই থেকে চন্দননগরে শুরু হচ্ছে তিনটি জেলা নিয়ে জোনাল প্রতিযোগিতা। সেই প্রতিযোগিতাতেও চ্যাম্পিয়ন হতে কোমর বাঁধছে নহাটা হাইস্কুলের ছাত্রেরা। স্কুল ফুটবল দলের অধিনায়ক, একাদশ শ্রেণির বিপ্লব বিশ্বাস বলে, ‘‘ শুধু জিততে চাই। আর কিছু ভাবছি না।’’