নিকোলাস আনেলকার মতো কোচের উপর আস্থা রাখতে পারছে না মুম্বই সিটি এফসি। তারা কোচ বদলাতে চাইছে।
এত সুযোগ পেয়েও ডেভিড প্ল্যাট তাঁর টিম পুণেকে শেষ চারে তুলতে না পারায় তাঁর উপরও চটেছেন টিম কর্তারা। তাই নতুন কোচ খুঁজতে শুরু করল পুণেও।
উল্টো দিকে কলকাতাকে ফাইনালে তুলতে না পারলেও আন্তোনিও হাবাসের বাজার দর তুঙ্গে। মুম্বই এবং পুণে দু’দলই মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো প্রস্তাব দিয়েছে এটিকের স্প্যানিশ কোচকে। তাদের হয়ে সামনের মরসুমে কোচিং করানোর জন্য। শোনা যাচ্ছে জিকো যে অর্থ গোয়া ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছ থেকে পান, তার কাছাকাছি টাকা দিতে চাইছে ওই দু’দলই। যা শুনে চমকে গিয়েছেন এটিকে কর্তারা। তাঁরা ধরে নিয়েছিলেন, ফেব্রুয়ারিতে হাবাসের সঙ্গে কথা বলে তৃতীয় বছরের জন্য তাঁর থাকা পাকা করে নেবেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে কী হবে, বোঝা যাচ্ছে না। গোয়া থেকে এ দিনই ফিরেছেন এটিকে সচিব সুব্রত তালুকদার। বললেন, ‘‘উনি যেখানেই যেতে চান তার আগে তো আমাদের সঙ্গে নিশ্চয়ই কথা বলবেন। আমরাও ওঁকে প্রস্তাব দিচ্ছি। উনি নিশ্চয়ই শর্তের কথা বলবেন। আমাদের সঙ্গে আর্থিক দাবি পোষালে নিশ্চয় ছেড়ে যাবেন না। তা ছাড়া অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভাল। ও ভাবে কেউ টাকা দেখিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না।’’
হাবাসের সঙ্গে এটিকের চুক্তি রয়েছে ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৫ পর্যন্ত। আর আটলেটিকো দে মাদ্রিদের সঙ্গে স্প্যানিশ কোচের চুক্তি জুনে শেষ হবে। হাবাসকে যদি ভারতের নতুন কোনও টিমের সঙ্গে চুক্তি করতে হয়, তা হলে জুনের পরেই করতে হবে। এমনিতে জিকো যে টাকা পান, হাবাস তার অর্ধেক পান কলকাতার কাছ থেকে। চুক্তি চার মাসের। কলকাতার কর্তারা বলছেন, ‘‘হাবাসকে দেখে নিতে হবে টাকা, না পরিবেশ ও ক্ষমতা কোনটা তিনি বাছবেন। আমরা তো তাঁকে সম্মান দিয়েই রাখতে চাইছি। মনে হয় উনি কলকাতা ছাড়বেন না।’’
এমনিতে ষাট বছর বয়সি হাবাস খুবই মিতব্যায়ী মানুষ। হোটেল ছেড়ে কখনও তাঁকে শপিং মলে যেতে দেখেননি কেউই। বাইপাসের ধারের যে হোটেলে আইএসএলের সময় তাঁর ডেরা ছিল, সেখানেই টিম নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন সারা দিন। অনুশীলন বা বিপণনের কোনও অনুষ্ঠান থাকলে বেরোতেন। মুম্বই এবং পুণের কাছে মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব পাওয়ার পরে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে ই-মেল করা হলেও তিনি কোনও উত্তর দেননি। সম্ভবত ক্রিসমাসের ছুটি কাটাচ্ছেন বলে। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ কর্তারা জানাচ্ছেন, হাবাস কলকাতার কোচিং করালেও স্বদেশি ফুটবলার বাছার জন্য হোসে ব্যারেটো বা ভাইচুং ভুটিয়ার মতো কাউকে আর পরামর্শদাতা হিসাবে চান না বলে জানিয়ে গিয়েছেন।
কলকাতা বা অন্য যে কোনও দলেই কোচিং করান হাবাস, আইএসএল থ্রির প্রথম চার ম্যাচে রিজার্ভ বেঞ্চে বসতে পারবেন না তিনি। করাতে পারবেন না মাঠে বসে কোচিংও। চেন্নাইয়ানের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় পর্বের সেমিফাইনালে যুবভারতীতে রেফারির সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছিলেন হাবাস। লালকার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল তাঁকে। মাঠ ছেড়ে বেরনোর সময় টানেলের বোর্ডে লাথিও মারেন। সে জন্য তাঁকে শাস্তি দিল ফেডারেশন। দিল্লিতে ফোন করে জানা গেল, ফেডারেশনের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি হাবাসকে চার ম্যাচের জন্য সাসপেন্ড করেছে। চিঠি পাঠানো হয়েছে আটলেটিকোর কাছেও।
হাবাসের মতো বড় শাস্তির মুখে জিকো এবং তাঁর দল গোয়াও। ফাইনালের পর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান এবং সাংবাদিক সম্মেলনে হাজির না থাকার জন্য।