তিন বছর পরে ইস্টবেঙ্গলে আবার মর্গ্যান

পাকা কথা হয়ে গিয়েছিল সকালেই। সন্ধ্যের সভায় তাতে কেবল সরকারি ভাবে সিলমোহর পড়ল কোনও বিতর্ক ছাড়াই। কলকাতা ঠিক তখনই ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে। সঙ্গে ইস্টবেঙ্গল তাঁবুও!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০১৬ ০৪:১৬
Share:

পাকা কথা হয়ে গিয়েছিল সকালেই। সন্ধ্যের সভায় তাতে কেবল সরকারি ভাবে সিলমোহর পড়ল কোনও বিতর্ক ছাড়াই। কলকাতা ঠিক তখনই ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে। সঙ্গে ইস্টবেঙ্গল তাঁবুও!

Advertisement

প্রতীকী। কিন্তু তিন বছর পর শেষ পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গলে কোচের পদে ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের প্রত্যাবর্তন তো লাল-হলুদ শিবির কেঁপে ওঠার মতোই। যেহেতু সাম্প্রতিক অতীতে এই চেষ্টাটাই একাধিক বার ইস্টবেঙ্গল সচিব কল্যাণ মজুমদারের তীব্র আপত্তিতে শেষমেশ ফলপ্রদ হয়নি। সেখানে এ দিন ব্রিটিশ কোচকে ফেরানোর সিদ্ধান্ত বিতর্কহীন।

পদত্যাগী কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যের স্থলাভিষিক্ত মর্গ্যান হচ্ছেন অবশ্য আই এস এলের ক্লাব কেরল ব্লাস্টার্সের সঙ্গে তাঁর চুক্তি ভেঙে নয়, বরং ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্লাব থেকে ছুটি নিয়ে। র‌্যান্টি-মেহতাবদের আপাতত ফেড কাপে কোচিং করানোর জন্য মর্গ্যানকে চুক্তিবদ্ধ করা হচ্ছে। পরে আরও আলোচনা করে তাঁর সঙ্গে আগামী মরসুমের চুক্তি করতে চান লাল-হলুদ কর্তারা।

Advertisement

মর্গ্যানকে আনার জন্য বারবার যিনি উদ্যোগী হয়েও ব্যর্থ হচ্ছিলেন সেই ফুটবল সচিব সন্তোষ ভট্টাচার্য এ বার সফল হওয়ায় দারুণ খুশি। বলে দিলেন, ‘‘আমরা আপাতত ফেড কাপের জন্য মর্গ্যানকে কোচ করছি। আশা করছি সামনের সপ্তাহেই তিনি এসে পড়বেন এখানে। আই লিগে আমাদের শেষ ম্যাচ শিলংয়ে গিয়ে দেখতেও পারেন। ফেড কাপে যদি সব ঠিকঠাক চলে তা হলে পরের মরসুমেও ওকে রাখার ব্যাপারে কথা বলব।’’

নতুন কোচ নির্বাচনের পর এ দিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ফুটবল সচিব ছাড়াও ক্লাবের সহ-সচিব শান্তিরঞ্জন মজুমদার। মর্গ্যানের তীব্র বিরোধী বলে ময়দানে পরিচিত ইস্টবেঙ্গল সচিব সভায় থাকলেও ছিলেন না কোচের নাম ঘোষণার সময়। ইস্টবেঙ্গলে ফেরার সুযোগ পাওয়ার পর মর্গ্যানের মনোভাব জানা যায়নি। অস্ট্রেলিয়ায় তাঁর মোবাইলে বারবার ফোন করেও যোগাযোগ করা যায়নি।

ক্লাব সূত্রের খবর, বুধবার সকালে ইস্টবেঙ্গলে ইউ বি-র প্রতিনিধি অমিত সেন পাকা কথা সেরে নেন মর্গ্যানের সঙ্গে। সেই আলোচনায় ঠিক হয় কেরল ব্লাস্টার্স থেকে ছুটি নিয়ে আসবেন তিনি। ৩১ অগস্ট পর্যন্ত কেরলের দলের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে মর্গ্যানের। অমিতবাবু বললেন, ‘‘মে মাস পর্যন্ত ছুটি নিয়ে আসছেন উনি। তার মধ্যেই তো ফেড কাপ শেষ হয়ে যাচ্ছে। এর পর সামনের মরসুমের জন্য কথা বলা যাবে। সে রকমই কথা হয়েছে। ওঁর ভিসা তৈরি আছে। সামনের সপ্তাহেই আসতে বলা হয়েছে কলকাতায়।’’ জানা গিয়েছে, সন্ধের সভায় মর্গ্যান বাদে অন্য কোনও কোচের নাম নিয়ে আলোচনা হয়নি। কেরল ব্লাস্টার্সে মাসিক যে পারিশ্রমিক পেতেন সেই অর্থেই নাকি মর্গ্যান শেষ পর্যন্ত রাজি হয়েছেন ইস্টবেঙ্গলে কোচিং করাতে।

২০১০-’১৩ লাল-হলুদে কোচিং করিয়েছেন মর্গ্যান। তার মধ্যে তিন বার কলকাতা লিগ ছাড়াও দু’বার ফেড কাপ জিতেছেন। ফেড কাপে তাঁর কপাল বরাবর ভাল। এ বারও আই লিগ হাতছাড়া হওয়ায় হতাশ ইস্টবেঙ্গল কর্তারা তাই আসন্ন ফেড কাপে মর্গ্যানের সাফল্য পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। ব্রিটিশ কোচের আরও সুবিধে মেহতাব, সৌমিক-সহ তাঁর জমানার অনেক ফুটবলারকে এ বারও পাবেন লাল-হলুদে। আইএসএলের ক্লাবে কোচিং করানোর পাশাপাশি গত মরসুমের শেষের দিকে ডেম্পোকে কোচিং করিয়েছিলেন মর্গ্যান। তাঁর হাতে অবশ্য আই লিগ টু-তে অবনমন হয় পাঁচ বারের লিগ চ্যাম্পিয়নদের।

ইস্টবেঙ্গলে নতুন কোচের সঙ্গে বর্তমান দুই সহকারী কোচই থাকবেন কি? ফুটবল সচিব সন্তোষবাবুর উত্তর, ‘‘উনি এসেই ঠিক করবেন কাকে রাখবেন।’’ জানা গিয়েছে, ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের মর্গ্যান জানিয়েছেন, তিনি এই ক্লাবের সব খবরাখবর রাখেন। সমস্যা হবে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement