অপরাধী নয়, তবু এ ভাবে মাঠ ছাড়লেন ফুটবলাররা। নিজস্ব চিত্র
সোমবার সকালেই কলকাতা উড়ে এসেছেন তিনি। সাত বছর আগে মোহনবাগানের শেষ বার কলকাতা লিগ জয়ের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য তিনি।
ম্যাচ শেষে রেফারি নাসিরুদ্দিন লস্করের উপর যখন চড়াও গোটা পিয়ারলেস শিবির তখন সে দিকে বিস্ফারিত নেত্রে তাকিয়ে সেই জোসে রামিরেজ ব্যারেটোর রসিকতা, ‘‘এগুলো না দেখলে মনেই হয় না কলকাতায় লিগ চলছে।’’
মাঠের ভিতর তখন পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উত্তপ্ত হচ্ছে। তাঁদের বিরুদ্ধে দেওয়া পেনাল্টি নিয়ে রেফারিদের সামনে এসে প্রতিবাদে হাততালি দিচ্ছিলেন রহিম নবিরা। আর সবুজ-মেরুন সদস্য গ্যালারি থেকে তাঁদের জন্য উড়ে আসছিল পাল্টা হুমকি। শেষমেশ নিরাপত্তার কারণেই পুলিশ ভ্যানে মাঠ ছাড়তে হল গোটা পিয়ারলেস টিমকে। নবি বলছিলেন, ‘‘রেফারি প্রথমে ফ্রিকিক দিয়ে তার পরে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিলেন।’’ আর যাঁর ট্যাকল নিয়ে এত কাণ্ড পিয়ারলেসের সেই মিডফিল্ডার সুখবিন্দর সিংহ বলে গেলেন, ‘‘বক্সের বাইরে ট্যাকল করলাম আর রেফারি দিলেন পেনাল্টি। পেনাল্টি হলে তিনি তখনই আমাকে কার্ড দেখালেন না কেন? পেনাল্টি থেকে কামো গোল করার পর এসে কার্ড দেখালেন!’’
ঘটনার সূত্রপাত দ্বিতীয়ার্ধের ৫৮ মিনিটে। মোহনবাগানের রাইট উইঙ্গার আজহারউদ্দিন মল্লিক এগোচ্ছিলেন বিপক্ষ গোলের দিকে। বক্সের কাছাকাছি আসতেই তাঁকে ট্যাকল করেন সুখবিন্দর। প্রেস বক্স থেকে বোঝা সম্ভব হয়নি ট্যাকল বক্সের বাইরে না ভিতরে হয়েছে। রেফারি এর পরে পেনাল্টি দিলে তাঁকে ঘিরে ধরে ধাক্কাধাক্কি করেন সুখবিন্দর-রা। খেলা বন্ধ থাকে ৮ মিনিট। পেনাল্টি নিয়ে মোহনবাগানে কামো থেকে কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী সকলেরই বক্তব্য, ‘‘দূরে ছিলাম বুঝতে পারিনি।’’ তবে ডার্বির ঘণ্টা বেজে গেল সবুজ-মেরুন শিবিরে। কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘তিনটে জয় দরকার ছিল। দু’টো পেলাম। আর একটা দরকার।’’
এ দিনও কামো-ক্রোমার স্বার্থপর ফুটবল খেলার প্রবণতা দেখা গেল। উইংয়ে চেস্টারপলও বল পেলেই বক্সের দিকে কোনাকুনি ঢুকে আসছেন সেন্টার রাখার বদলে। ডার্বির আগে যা ভাবাচ্ছে মোহনবাগান শিবিরকে।
মোহনবাগান: শিল্টন পাল, দেবব্রত রায় (অভিষেক দাস), বিক্রমজিৎ সিংহ, কিংগসলে বুমনেমে, গুরজিন্দর কুমার, নিখিল কদম (আজহারউদ্দিন মল্লিক), সুরচন্দ্র সিংহ, রেনিয়ার ফার্নান্দেজ, চেস্টারপল লিংডো, আনসুমানা ক্রোমা (সৌরভ দাস), কামো স্টিফেন বায়ি।