নজরে: মোহনবাগান মাঝমাঠের ভরসা ফ্রান গঞ্জালেস (ডান দিকে)। ফাইল
গত বছর যাঁর পা থেকে গোল দেখার জন্য মাঠে আসতেন মোহনবাগান সমর্থকরা, আজ মঙ্গলবার লুধিয়ানায় সেই দিপান্ডা ডিকাই পথের কাঁটা কিবু ভিকুনার দলের।
ডিকা এমনিতে পঞ্জাবে গিয়ে এখনও পর্যন্ত সে ভাবে দাগ কাটতে পারেননি। এখনও পর্যন্ত ছয় ম্যাচে দু’গোল করেছেন। তাতে কি সবুজ-মেরুন জার্সি পরে অনেক গোল করার পরেও ছেটে ফেলায় তিনি যে ক্ষুব্ধ, তা কথা বললেই বোঝা যায়। বলে দিয়েছেন, ‘‘গোল করা তো সব স্ট্রাইকারের লক্ষ্য থাকে। সেটা করলে ভাল লাগবে। কিন্তু দলের জেতাটা আরও বেশি জরুরি।’’ ডিকার সঙ্গে পঞ্জাবের আর এক বিদেশি সের্খিয়ো বারবোজাও গোলের মধ্যে আছেন। তিনিও তিনটি গোল করে ফেলেছেন।
ডিকা-বারবোজা যুগলবন্দি আটকাতে মোহনবাগানও তৈরি হচ্ছে। প্রবল বৃষ্টির মধ্যে সোমবার দুপুরে অনুশীলনে কিবু বুঝিয়ে দিয়েছেন, জোড়া বিদেশি আটকাতে জোড়া বিদেশি স্টপারকেই রাখছেন তিনি। ফ্রান মোরান্তে এবং ড্যানিয়েল সাইরাসকে দেওয়া হচ্ছে সেই দায়িত্ব। সবুজ-মেরুনের স্পেনীয় কোচ বলেছেন, ‘‘আমরা অন্যতম কঠিন ম্যাচ খেলতে নামছি। ওদের দলে অভিজ্ঞ বিদেশি ও স্বদেশী ফুটবলার আছে। যারা অনেক দিন আই লিগে খেলছে।’’ আসলে ডিকার সঙ্গে কেভিন লোবো, সঞ্জু প্রধান, গগনদীপ সিংহ, আনোয়ার আলিদের কথাও বলতে চেয়েছেন কিবু।
কিন্তু প্রশ্ন হল, লুধিয়ানার মাঠে আদৌ মোহনবাগান বনাম পঞ্জাব এফ সি-র খেলা হবে তো? কারণ ম্যাচের কুড়ি ঘণ্টা আগেও প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। স্টেডিয়ামের কর্নার ফ্ল্যাগ থেকে সাইড লাইন, গোলকিপারের জায়গা থেকে সেন্টার লাইন—বিভিন্ন জায়গায় এখনও জল জমে রয়েছে। সঙ্গে কাদা। মূল স্টেডিয়ামে তাই অনুশীলন করতে পারেনি দু’দলই। জোসেবা বেইতিয়া, ফ্রান গঞ্জালেসরা প্রস্তুতি সারতে গিয়েছিলেন অনেক দূরের একটি মাঠে। আর ইয়ান ল-এর দল তো অনুশীলনই করেনি। এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে এসে কিবু বলে দিয়েছেন, ‘‘এখন মাঠের যা অবস্থা তাতে খেলা হওয়া সম্ভব নয়। যে মাঠে অনুশীলন করেছি সেটা খারাপ নয়। তবে যা দেখলাম তাতে তো স্টেডিয়ামে বল- ই গড়াচ্ছে না। এখনও এক দিন বাকি আছে। আশা করছি অবস্থার উন্নতি হবে। তবে এরকম মাঠ থাকলে খেলা কঠিন।’’ ম্যাচ কমিশনারের ডাকা সভায় গিয়েও মাঠ নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে এসেছেন দলের ম্যানেজার ইমরান খান। তবে কনকনে ঠান্ডা না থাকলেও প্রচন্ড হাওয়া বইছে।
মিনার্ভা পঞ্জাব এ বার খেলছে পঞ্জাব এফসি-র নামে। তাদের কোচ ইয়ান ল কলকাতার ছেলে। তাঁর বাবার দক্ষিণ কলকাতায় একটি চিনা রেস্তোরাঁও আছে। আই লিগের সব চেয়ে কম বয়সী কোচ অবশ্য রীতিমতো হুঙ্কার দিয়ে রেখেছেন সুহের ভিপিদের, ‘‘মোহনবাগান শক্তিশালী দল। কিন্তু আমরাও শেষ ছয় ম্যাচ অপরাজিত। জিতে লিগ শীর্ষে যাওয়াই আমাদের লক্ষ।’’ সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘‘আমাদের নিজেদের মাঠ। এখানে তো আমরা কিছুটা হলেও বাড়তি সুবিধা পাব।’’
ইয়ান ল জীবনে প্রথম আই লিগে কোচিং করাচ্ছেন। তিনি জানেন, কিবুর দলের বিরুদ্ধে ডিকাদের তাতাতে একটু হুঙ্কার দিয়ে রাখতে হবে। মোহনবাগান টানা চার ম্যাচ জিতে খেলছে নামছে। রবিবার ডার্বির আগে শীর্ষ স্থানে থাকাটা জরুরি। তাতে বাড়তি আত্মবিশ্বাস নিয়ে যুবভারতীতে নামতে পারবেন ধনচন্দ্র সিংহের মতো ফুটবলারও। কিবুর মুখ থেকে বেরিয়েছে, ‘‘পরিস্থিতি বা আবহাওয়া যতই বিপক্ষে যাক তিন পয়েন্ট পাওয়াই আমাদের লক্ষ্য। অন্য কিছু নিয়ে ভাবছি না। শুরুটা ভাল করতে না পারলেও পরের দিকে ছেলেরা অনেক ভাল খেলছে।’’ কিবু এ দিন যা অনুশীলন করিয়েছেন তাতে ইন্ডিয়ান অ্যারোজ ম্যাচের দলে কোনও পরিবর্তন হচ্ছে না। নতুন আসা বিদেশি কামরোন তুর্সুনভ থাকবেন রিজার্ভ বেঞ্চেই। সামনে পাপা দিয়োহারার সঙ্গে সুহেরই শুরু করবেন। মাঝমাঠে গঞ্জালেস, বেইতিয়ার সঙ্গে শেখ সাহিল ও ননগোম্বা নওরেম। কিবু অবশ্য দল নিয়ে কিছু বলতে চাননি।
মঙ্গলবার আই লিগে: পঞ্জাব এফ সি বনাম মোহনবাগান (লুধিয়ানা দুপুর ২-০০)