জোড়া গোল করে নায়ক দিপান্দা ডিকা।—ফাইল চিত্র।
অবশেষে স্বস্তি। আই লিগের তৃতীয় ম্যাচে জয়ের সরণিতে প্রত্যাবর্তন মোহনবাগানের। জোড়া গোল করে নায়ক দিপান্দা ডিকা।
শনিবার কটকের বরাবাটি স্টেডিয়ামে ইন্ডিয়ান অ্যারোজের বিরুদ্ধে ম্যাচের ৩০ মিনিটেই হেনরি কিসেক্কার পাস থেকে গোল করে মোহনবাগানকে এগিয়ে দেন ডিকা। দ্বিতীয় গোল তিনি করেন প্রথমার্ধের একেবারে শেষ মুহূর্তে পেনাল্টি থেকে। গত দুই মরসুমে আই লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন ডিকা। কিন্তু আই লিগের প্রথম দু’ম্যাচে গোল না পাওয়ায় সমালোচনা শুরু হয়ে গিয়েছিল। এ দিন ম্যাচের শুরু থেকেই হেনরির সঙ্গে জুটি বেঁধে ইন্ডিয়ান অ্যারোজের রক্ষণে ঝড় তোলেন। হেনরি অবশ্য এ দিন গোল পাননি। ম্যাচের পরে সাংবাদিক বৈঠকে ডিকা বলেছেন, ‘‘গোল পেয়ে দারুণ আনন্দ হচ্ছে। হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছি। তবে জয়ের কৃতিত্ব একা আমার নয়। পুরো দলেরই।’’
জাতীয় দলের যুব ফুটবলারদের নিয়ে গড়া ইন্ডিয়ান অ্যারোজের কোচ ফ্লয়েড পিন্টোর রণকৌশল ছিল, রক্ষণাত্মক খেলে মোহনবাগানকে আটকে দেওয়া। কিন্ত তাঁর পরিকল্পনা সফল হয়নি। প্রথমার্ধেই ০-২ পড়ে ইন্ডিয়ান অ্যারোজ। ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্য দ্বিতীয়ার্ধে রণনীতি বদল করেন পিন্টো। অনিকেত যাদবেরা আক্রমণাত্মক খেললেও হার বাঁচাতে পারেননি। ম্যাচের পরে মোহনবাগান কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরা জয়ের লক্ষ্য নিয়েই কটকে এসেছিলাম। সব চেয়ে খুশি কোনও গোল না খেয়ে ম্যাচ জেতায়।’’
এই মুহূর্তে তিন ম্যাচে পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলের তৃতীয় স্থানে উঠে এল মোহনবাগান। সমসংখ্যক ম্যাচ খেলে সাত পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষ স্থানে চেন্নাই সিটি এফসি। দু’ম্যাচে ছয় পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ইস্টবেঙ্গল। মোহনবাগানের পরের ম্যাচ ২০ নভেম্বর রিয়াল কাশ্মীরে বিরুদ্ধে শ্রীনগরে। মোহনবাগান কোচের দাবি, এই জয় পরের ম্যাচের জন্য ফুটবলার উদ্বুদ্ধ করবে। তিনি বলেছেন, ‘‘ভাল খেলার পরে জিততে না পারলে ফুটবলারেরা হতাশ হয়ে পড়ে। যা আমাদের প্রথম দু’টো ম্যাচের ক্ষেত্রে হয়েছে। তাই এই তিন পয়েন্ট ওদের ভাল খেলার জন্য উদ্বুদ্ধ করবে। জয়ের ধারাটা বজায় রাখতে হবে।’’ তবে এই মরসুমে আই লিগে প্রথম জয়ের পরে উচ্ছ্বাসে ভাসতে নারাজ তিনি। শ্রীনগর রওনা হওয়ার আগে ভুলত্রুটি শুধরে নেওয়াই লক্ষ্য তাঁর। গোল পাননি আর এক তারকা সনিও। ৬৫ মিনিটে ওমর এলহুসেইনির পরিবর্তে তিনি নামেন তিনি।
মোহনবাগান কোচ যে এ দিন থেকেই রিয়াল কাশ্মীরকে হারানোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন, বুঝিয়ে দিয়েছেন। ভূস্বর্গের আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য এক দিন আগেই পৌঁছে যেতে চান। তিনি বলেছেন, ‘‘ফুটবলারেরা সবাই ৯০ মিনিট খেলার জন্য তৈরি। শ্রীনগরের কৃত্রিম ঘাসের মাঠে খেলা নিয়েও খুব একটা ভাবছি না। তবে আবহাওয়া সম্পূর্ণ আলাদা। এই কারণেই নির্ধারিত সময়ের এক দিন আগেই শ্রীনগরে পৌঁছে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।’’
ইন্ডিয়ান অ্যারোজ ফুটবলারদের উচ্ছ্বসিত প্রশংসাও করেন তিনি। বলেছেন, ‘‘ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যৎ এরাই। দারুণ দল।’’ ডিকাও একমত কোচের সঙ্গে। সবুজ-মেরুনের জয়ের নায়ক বলেছেন, ‘‘একঝাঁক তরুণ ফুটবলারদের নিয়ে গড়া দল ইন্ডিয়ান অ্যারোজ। দারুণ খেলেছে ওরা। গোল করার সুযোগও পেয়েছিল বেশ কয়েকটা। আশা করব, পরের ম্যাচগুলোও আরও ভাল খেলবে ওরা।’’